ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

মহামারিকালে যেভাবে হবে বই উৎসব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
মহামারিকালে যেভাবে হবে বই উৎসব ফাইল ফটো

ঢাকা: ইংরেজি বছরের প্রথম দিন দেশজুড়ে ‘বই উৎসব’ উদযাপন করে সরকার। তবে এবার করোনা ভাইরাস জনিত কারণে জাঁকজমকভাবে হচ্ছে না এ উৎসব।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক স্তরে তিনদিন এবং মাধ্যমিক স্তরে ১২ দিন বই বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছে দুই মন্ত্রণালয়।

প্রতিবছর দুই মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয়ভাবে আলাদা আলাদা উৎসব করে ঢাকায় বই বিতরণ করে থাকে। তবে এবার তা হচ্ছে না।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ ডিসেম্বর বই বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করবেন। এরপর দিন থেকে বই দেওয়া হবে।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০১১ শিক্ষাবর্ষে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে এ বছর পাঠ্যপুস্তক ভিন্ন আঙ্গিকে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিটি শ্রেণির বই বিতরণের জন্য তিনদিন করে সময় দেওয়া হবে। অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চারটি শ্রেণিতে সপ্তাহে তিনদিন করে মােট ১২ দিনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম ভিন্ন আঙ্গিকে হওয়ার কারণে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত এবং মাঠ পর্যায়ে তা যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

মাউশির নির্দেশনা সব জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সব পরিচালক ও উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়, বিগত বছরগুলাের ন্যায় এ বছরও ১ জানুয়ারি প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে প্রাথমিক স্তরের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শতভাগ শিক্ষার্থীর মধ্যে নতুন বই তুলে দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সব সহকারী শিক্ষক ও কমচারীকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য অনুরােধ জানানাে হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা সবশেষ প্রজ্ঞাপনের নিদের্শনা অনুযায়ী, অসুস্থ ও সন্তানসম্ভবা শিক্ষক/কর্মচারীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হতে বলা হয়েছে।

সব বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বছরের প্রথম দিন সারা দেশে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বই উৎসবে অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও নিরাপত্তার কথা ভেবে এবার একই দিনে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেবো না। ’

‘প্রতিটি শ্রেণির বই বিতরণের জন্য আমরা তিনদিন করে সময় দিতে চাইছি। অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১২ দিনে আমরা বই বিতরণ করবো। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা তিনদিনে আসবে। শিক্ষার্থীরা তিনদিনে ভাগে ভাগে এসে বইগুলো নিয়ে যাবে। ’

ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এবার প্রাথমিক স্তরে প্রায় তিন কোটি বই বিতরণ করা হবে।  প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের তিনদিন বই বিতরণ করা হবে। ’

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিচ্ছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানায়, গত ১১ বছরে ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৬টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।  এনসিটিভি বই ছাপানোর কাজ করে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
এমআইএইচ/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।