শাবিপ্রবি (সিলেট): ‘করোনাময় ২০২০’ সালের পাওয়া-না পাওয়ার স্মৃতি পেছনে ফেলে নতুন বছরে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন বিশ্ববাসী। পিছিয়ে নেই তরুণরাও।
নতুন বছর মানে নতুন চ্যালেঞ্জ
পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবু মুগিরা বলেন, ‘আমার কাছে নতুন বছর মানেই নতুন চ্যালেঞ্জ। ২০২১ সালের চ্যালেঞ্জ তুলনামূলক বেশি। ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে যেসব কাজ করতে পারিনি, সেগুলো স্থান পেয়েছে ২০২১ এর ‘টু-ডু’ লিস্টে। ৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিজের মতো করে সময়টা ব্যবহার করেছে সবাই। আমি ভারতের একটি আন্তর্জাতিক টেকনিক্যাল পেপার এক্সিবিশন কম্পিটিশনে অংশ নেই। সেখানে আমাদের দল প্রথম হয়। সব মিলিয়ে ক্যাম্পাসের বাকি সময়টুকুতে মনে রাখার মতো কিছু স্মৃতি রেখে যেতে চাই। ’
ভার্চ্যুয়াল জগতের আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আফসারা হোসেন হিমা বলেন, ‘খারাপটা ফেলে ভালোটা গ্রহণের মাধ্যমে নতুন বছর পার করতে চাই। বর্তমানে তরুণরা বেশিরভাগই রাত জাগে এবং দেরিতে ঘুম থেকে ওঠে। সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়া এবং নেতিবাচকতার মধ্য দিয়ে আমাদের সময় কাটে। লকডাউনে এগুলো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাই ভার্চ্যুয়াল জগৎ থেকে বের হয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে যাওয়া উচিত। পড়ালেখার পাশাপাশি আমাদের উচিত দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করা। নতুন প্রজন্ম হিসেবে দেশকে পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরাটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এটি কেবল দেশপ্রেম, ইতিবাচক মনোভাবের মধ্য দিয়ে সম্ভব। ’
নতুন বছর হোক উদ্ভাবন আর সমৃদ্ধির
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম সাগরের বলেন, ‘অতীতের ব্যর্থতা গ্লানি মুছে নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি। নতুর বছর একজন ব্যক্তির কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একটা জাতির জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্বে আমরা যে সমৃদ্ধি অর্জন করেছি, নতুন বছরে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি আমাদের তরুণ সমাজে নতুন বছর শুরু হোক সমৃদ্ধি আর উদ্ভাবনীমূলক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে। তাতে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে। ’
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে শিক্ষা দিয়ে আলোকিত করতে চাই
নতুন কিছু গ্রহণ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েই নতুন বছর শুরুর কথা জানান সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মী মোসাদ্দেক হাসান রাকিব। এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নোত্থান’ নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি সিলেটের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের শিক্ষাদানের মতো চ্যালেঞ্জ হাতে নিয়েছে, যেন তারা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হতে পারে। মোসাদ্দেক বলেন, ‘আমরা চাই, সমাজের অধিকার বঞ্চিত মানুষরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক। ’
স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সচেষ্ট হবো
লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জেরিন জাহান জেসি বলেন, ‘চোখের পলকে একটি বছর কেটে গেলো। নতুন বছর আসছে, সঙ্গে বাড়ছে দায়িত্ব। ক্যাম্পাসে কয়েকদিন পর জুনিয়ররা আসবে, সিনিয়র হিসেবে তাদের বরণ করা, তাদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া— সব মিলিয়ে দায়িত্ব-কর্তব্যের শেষ নেই। করোনার অজুহাতে প্রথম বর্ষে অনেক ফাঁকি দিয়েছি। অনেক কাজই তুলে রেখেছি এ বছরের জন্য। নতুন বছরে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পড়াশোনায় মনোযোগ দেবো। স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ’
নতুন বছরে মনুষ্যত্ববোধ আসুক
নতুন বছরে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হবে বলে প্রত্যাশা করেন জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিউল আলম নাহিয়ান। দেশ ও জাতি যেন একে অপরের দুঃখ-কষ্টে পাশে থাকতে পারে, কারো যেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু না হয়, শিশুদের যাতে টাকার অভাবে স্কুলব্যাগ ফেলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে না হয়, কোনো মানুষ যেন অনাহারে দিন পার না করে, এটিই তার কামনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২১
এফএম