ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ১২ বিভাগ, ৬০ শিক্ষক ও ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই যাত্রা শুরু করে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়। সে হিসেবে চলতি বছর জুলাইতে শতবর্ষ পূরণ করেছে তিনটি ভিন্ন সময় (ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশ) পার করা দেশের সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাইলফলক এই ইভেন্টকে স্মরণীয় করে রাখতে দীর্ঘ প্রস্তুতি গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে পুরো প্রস্তুতি শেষ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, একাডেমিক ভবন, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতে আলোকসজ্জ্বার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের সড়কে অবস্থিত বৃক্ষেও শতবর্ষের প্ল্যাকার্ড সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন বাতি লাগানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেখানে নিজেদের ফ্রেমবন্দি করছেন। শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থৗরা নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরাও শতবর্ষপূর্তি উদযাপন করতে আসছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক ছাত্র সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন একটি অনন্য অর্জন। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেলেও এখনো মায়া কাটতে পারিনি। চিরদিন আপন করে নিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুদের ছবি দেখে নিজেও চলে আসলাম।
করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীরা মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। সেকারণে যারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনি তাদের জন্য টিএসসি, কলাভবন ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে বড় পর্দায় সরাসরি দেখানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানের মূলমঞ্চ। মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, প্রো উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চ পরিদর্শন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। ভূটানের প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই লোটে শেরিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সম্মানীত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শতবর্ষের তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থগুলো ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি এ কে আজাদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) ও শতবর্ষ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. মাকসুদ কামাল স্বাগত বক্তব্য রাখবেন। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরকে বিশেষ স্যুভেনির প্রদান করবেন। জাকজমকভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টানা চারদিন সঙ্গীত, গান ও আলোচনা পর্ব থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
এসকেবি/এমআরএ