ইবি: আগামী ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন-২০২২। এরই মধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
১৫টি পদের বিপরীতে প্রতিবারের মতো এবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী) মতাদর্শের শিক্ষকগণ। দুই দলের শিক্ষকগণ নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়েই লড়ছে নির্বাচনে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা।
পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ২টি হলেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কিছু পদ নিয়ে আংশিকভাবে প্যানেলের মাধ্যামে দুই দলের শিক্ষকগণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। গত ৭ ডিসেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের দিন শেষে দুই মতাদর্শের দলের দুটি পূর্ণাঙ্গ ও দুটি আংশিক প্যানেলে মোট ৪৩জন শিক্ষক লড়বেন ১২ তারিখের নির্বাচনে।
শিক্ষকদের দাবি, বিভক্তির জন্য শিক্ষক নেতাদের ব্যক্তিগত মতের অমিল, প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও ছাড় দেওয়ার মানসিকতার অভাবই দায়ী। নির্বাচন নিয়ে পক্ষগুলোর মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হলেও সমঝোতা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় দেখা যায়, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে তিনজন করে, সহসভাপতি পদে ২ জন ও সদস্য পদে ২৯ জন শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের বর্তমান কমিটির পক্ষে ১৫ জনের একটি পূর্ণ প্যানেল অংশ নেবে। এতে সভাপতি পদে আইন বিভাগের অধ্যাপক শাজাহান মণ্ডল ও সম্পাদক পদে বর্তমান প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন নির্বাচন করবেন।
অপরদিকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করার পরপরপই ১৫ সদস্যের প্রার্থী ঘোষণা করে শাপলা ফোরামের আগের কমিটি। তবে ৭ ডিসেম্বর শেষ সময়ে এসে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ পদসহ ৯টি পদের প্রার্থীতা বাতিল করেন। বাকি ৬টি পদে প্রার্থিতা করবেন তারা।
বিএনপির মধ্যে রয়েছে একটি পূর্ণ প্যানেল ও একটি আংশিক প্যানেল। পূর্ণ প্যানেলের মধ্যে রয়েছে জামায়াত মতাদর্শের শিক্ষকরাও। বিএনপিপন্থী জিয়া পরিষদ ও জামায়াতপন্থী গ্রীণ ফোরাম একত্র হয়ে ১৫ জনের একটি পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেবে।
এতে সভাপতি পদে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও সম্পাদক পদে আরবি ভাষা বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আবার বিএনপিপন্থী শিক্ষক সংগঠন সাদা দল ৮ জনের একটি আংশিক প্যানেল দিয়েছে। এতে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম সরফরাজ নওয়াজ সভাপতি ও সম্পাদক পদে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম অংশ নেবেন।
শাপলা ফোরাম মনোনীত সভাপতি প্রার্থী আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য তাদের (শাপলা ফোরামের অপর প্যানেল) সঙ্গে বসেছিলেন। পরবর্তীতে শেষ সময়ে এসে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ নয়জন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। তবে ওই মুহূর্তে বাকি ছয়জন না থাকায় তারা প্রত্যাহার করতে পারেননি। নিজেদের মধ্যে যতোই দ্বিধা বিভক্তি থাকুক না কেনো আশা করছি আদর্শগত দিক থেকে নির্বাচনে তারা (শাপলা ফোরামের অপর প্যানেলের শিক্ষকগণ) আমাদের সহোযোগিতা করবেন।
জিয়া পরিষদ-গ্রীন ফোরাম মনোনীত সাধারণ-সম্পাদক প্রার্থী আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা তাদের (সাদা দল ও জিয়া পরিষদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব) আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বগুলো মিটিয়ে আলোচনায় আসতে বলেছি। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। আমি নিজেও তাদের (সাদা দলের নেতারা) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি অস্তিত্ব রক্ষায় এক হয়ে কাজ করার জন্য। আমরা আশা করছি তারা (সাদা দলের নেতৃবৃন্দ) আমাদের সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১
আরএ