সিলেট: অবরোধ প্রত্যাহার করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে এখন আন্দোলনের ধরণ পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছিলন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে আয়োজন করা হয় ফুটবল খেলার। খেলার শুরুর আগে বলে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের নাম লেখেন আন্দোলনকারীরা। এরপর উপাচার্যের নাম লেখা ফুটবল নিয়ে শুরু হয় লাথালাথি! বিষয়টি আন্দোলনকারীদের মনে খোরাক জোগালেও সাধারণ লোকজন ভালোভাবে নেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, একজন শিক্ষকের (উপাচার্য) নাম ফুটবলে লিখে খেলার আয়োজন করা নিতান্তই বেমানান।
এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদের অংশ হিসেবে উপাচার্যের বাংলোর ফটকের সামনের সড়কে পেইন্টিং শুরু করেন, যা নিষিদ্ধ করেছিলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ক্যাম্পাসে ‘চাষাভুষার টং’ চালু করেন। এই টংয়ে দুধ চা ৮ টাকা ও রং চার প্রতীকী মূল্য ৫ টাকা রাখা হচ্ছে।
এক শিক্ষার্থী বলেন, উপাচার্যর পদত্যাগের দাবিতে আমাদের আন্দোলন স্থিমিত হয়নি, বরং নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তা বেগবান করা হচ্ছে। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আমাদের দাবি-দাওয়ার বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেস ব্রিফিংয়ে। তেমনি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল অনুরোধ করেছেন, ওই কারণে উপাচার্যের বাসভবনসহ সব অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি। অ্যাকাডেমিক, কন্ট্রোলার ও প্রশাসনিকভবন থেকে তালা খুলে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করব, নানা কর্মসূচি চালাব। উপাচার্যর বাসভবনের সামনে রোড পেইন্টিং ছাড়াও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স্থানে ব্যঙ্গচিত্র আঁকা, স্লোগান ও গ্রাফিকি করা হচ্ছে। তারপর কেমন ক্যাম্পাস চাই—এ কর্মসূচি হবে। আমরা সবাই একতাবদ্ধ এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, এই উপাচার্য পতনের আগপর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এর আগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ১১টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রোমিও নিকোলাস রোজারিও সংবাদ সম্মেলনে বলেন, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে অনশনে থাকার পর মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার এবং ইয়াসমিন হক ম্যামের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে আসা হয়। তবে উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অনশন ভেঙেছি কারণ আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ড. জাফর ইকবাল স্যারের পক্ষ থেকে। আমাদের যে দাবি মানা হবে। আমরা অনশন থেকে উঠে এসেছি। এও বলেছি, আন্দোলন চালিয়ে যাব। তবে আন্দোলনের ধরণ পরিবর্তন হবে। অবরোধ পুরোপুরি তুলে নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন চলমান থাকবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। উপাচার্য যেগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলেন, সেগুলো চালু করে প্রতিবাদ জানাব। অবস্থান কর্মসূচি, মিছিল, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অহিংস আন্দোলন চলমান থাকবে। সামনে যদি দেখা যায় আমাদের দাবি পূরণ হচ্ছে না, তাহলে কঠোর কর্মসূচিতে যাব।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২২
এনইউ/জেএইচটি