ঝালকাঠি: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় শিক্ষকের অবহেলার কারণে মো. হৃদয় হোসেন ও মো. জান্নাতুল নাঈম নামে দুই পরীক্ষার্থী চলতি বছর ডিগ্রি পাস দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের জেডএ ভুট্টো ডিগ্রি কলেজে এ ঘটনা ঘটেছে।
হৃদয় উপজেলার দক্ষিণ কামদেবপুর গ্রামের মো. বশির উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে এবং জান্নাতুল নাঈম একই গ্রামের মো. নান্না মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনা মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুম্পা সিকদারের কাছে অভিযোগ করেছেন ওই দুই শিক্ষার্থী।
এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান, ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. কামাল হোসেন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমানের কাছেও বিষয়টি নিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।
তবে, কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, ওই শিক্ষার্থীদের ভুলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে কলেজ কর্তৃপক্ষ দায়ী না।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হৃদয় ও নাঈম সাংবাদিকদের জানান, অধ্যক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পংকজ কুমার সিকদার নামে এক শিক্ষকের কাছে ফরম পূরণের জন্য সাড়ে তিন হাজার করে মোট ৭ হাজার টাকা জমা দেন তারা। পরীক্ষার একদিন আগে তারা প্রবেশপত্র আনতে কলেজে গেলে শিক্ষক পংকজ কুমার সিকদার তাদেরকে জানান, ফরম পূরণ হয়নি। তাই প্রবেশপত্র আসেনি। এরপর তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
পরে প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী তালুকদারকে জানালে তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে বারণ করেন এবং আগামী বছর পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ ঘটনায় আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি। এছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
তারা আরও জানান, আমরা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। কিন্তু কলেজ অধ্যক্ষ ও পংকজ স্যারের অবহেলার কারণে পরীক্ষা দিতে পারলাম না। আমাদের জীবন থেকে যে একটি বছর নষ্ট হয়ে গেল। তা ফিরিয়ে দেবে কে?
এদিকে ফরম পূরণের টাকা জমা দিয়েও প্রবেশপত্র না পাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই দুই শিক্ষার্থী। এতে তাদের পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে কলেজ শিক্ষক পংকজ কুমার সিকদারের মোবাইলের নম্বরে কল দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোনকল কেটে দেন। এরপর নম্বরটি বন্ধ করে রাখেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জেড এ ভূট্টো ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী তালুকদার বলেন, অনলাইনে আবেদন করার দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের। ওদের ব্যর্থতার কারণে প্রবেশপত্র আসেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুম্পা সিকদার বলেন, প্রবেশপত্র না পাওয়া ওই শিক্ষার্থীরা আমার অফিসে এসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২২
এএটি