লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে অন্যের জমি দখলের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিদ্যালয়টির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।
জমির মালিকদের অভিযোগ, তাদের মালিকানাধীন জমি দখলের উদ্দেশে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় জমির মালিক মো. রাসেল মিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের এল কে এইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ইট হাতে নিয়ে একটি রাস্তার ওপর বিছিয়ে দেয়। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনির মোল্লা এবং প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিদ্যালয়ের পাশের একটি জমি দখল করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয় সংলগ্ন বেড়িবাঁধ সড়কের পাশে ২৭১০ খতিয়ানে ২১৬৩ দাগে ৩৯ শতাংশ জমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী লুৎফা বেগম। স্কুলের চলাচলের সরকারি কোনো রাস্তা না থাকায় শিক্ষক ও অভিভাবকদের অনুরোধে জমির মালিকরা নিজ দখলের জায়গায় রাস্তা করার অনুমতি দেন। বর্তমানে স্কুলের পাশ দিয়ে সরকারি পাকা রাস্তা হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে পুরনো রাস্তাটি বন্ধ করা হয়। কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান পুনরায় ওই রাস্তাটি দখলের জন্য উঠেপড়ে লাগেন। এরই মধ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে ওই জমির সয়াবিন ক্ষেত উপড়ে ফেলেন ও ফলদ গাছ কেটে ফেলেন।
জমি দখলের সময় মালিক পক্ষ বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগকারী রাসেল মিয়া বলেন, আমাদের কোটি টাকার জমিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ও সভাপতি মনির মোল্লার কুনজর পড়েছে। জমি রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগিতা পেতে আমি ইউএনও সাহেবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, সরকারিভাবে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। রাস্তার কাজ করতে গেলে রাসেলের পরিবার বাধা দেয়।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা ছিল না। রাসেলের পরিবার জায়গা দিলে আমরা ইট বিছিয়ে রাস্তা তৈরি করি। তারা আবার সেই ইট খুলে নিয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে রাস্তায় ইট বসিয়ে দিয়েছে।
রায়পুরের হাজিমারা ফাঁড়ির ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) মো. ইউসুফ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম সাইফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, জমি দখলের অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কোনো দখলের কাজে ছাত্রদের ব্যবহার করার নিয়ম নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২২
এসআরএস