ঢাকা, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

বন্যায় শাবিতে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার বিজিবির

  সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
বন্যায় শাবিতে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার বিজিবির

সিলেট: ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হচ্ছে সিলেট। সুরমার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরের নিম্নাঞ্চলগুলোও প্লাবিত হচ্ছে।


 
বন্যার পানি ঢুকেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(শাবিপ্রবি)এলাকাও। এরই প্রেক্ষিতে আপাতত ২৫ জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে ক্লাস পরীক্ষা। বন্যা পরিস্থিতির স্বাভাবিক না হলে এই ছুটি বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
 
শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে থেকে কয়েক দফায় রিক্সা ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাভার্ড ভ্যানে করে এবং ক্যাম্পাসের বাসে শিক্ষার্থীদের সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে বাড়ি ফেরার জন্য পৌঁছিয়ে দেয় প্রশাসন।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা ছাত্রী হল, শিক্ষক কোয়ার্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ, প্রায় সবগুলো শিক্ষাভবন, আইআইসিটিটি ভবনের সামনে পানি উঠেছে।
 
এছাড়া উপাচার্য ভবন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ভবনের সামনেও হাটুপানি। লেক ও কয়েকটি পুকুরের পাড় ভেসে পানি গড়াতে দেখা যায়।
 
ছাত্রী হলের রাস্তায় পানি উঠায় ভোগান্তিতে পড়েছে আবাসিক হলের ছাত্রীরা। এতে হাটু পরিমাণ পানি ডিঙ্গিয়ে ছাত্রীদের হাঁটাচলা করতে দেখা যায়।
 
এদিকে, সিলেট বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র প্লাবিত হওয়ায় সকাল থেকে ক্যাম্পাসে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে বৈদ্যুতিক ফিল্টারে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ ও সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সায়মন আক্তার পুস্প বলেন, গতকাল (১৬ জুন) সকাল থেকে হলের সামনের রাস্তা ডুবতে শুরু করেছে। পানি এত দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে যে, মেয়েদের দুই হলের মাঝের রাস্তাও ডুবে গেছে। ক্যাম্পাসে চলাচলকারী অটো-টমটম, রিক্সাও আসতে চাচ্ছে না হলের সামনে, আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছি।

বাংলা বিভাগ ও প্রথম ছাত্রী হলের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম নিশাত বলেন, সিলেটে একাধারে বৃষ্টির কারণে বন্যার কবলে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। প্রথম ছাত্রী হলের (জাহনারা ইমাম ছাত্রী হল) ভেতরে ও আশেপাশে পানি উঠে যাওয়া কারণে পানি তোলার মটর পাম্পে সমস্যা দেখা দিয়েছে। খাবার পানি ও প্রয়োজনীয় পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে দুর্ভোগে পড়েছে ছাত্রীরা। হাটা চলা করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য বের হতে পারছে না কেউ। এ অবস্থায় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ব্যাঘাত ঘটছে। চারদিকে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এবং সাপ, পোকামাকড় ও মশার উপদ্রব বেড়ে গিয়েছে। ফলে ক্যাম্পাস ত্যাগ করা ছাড়া উপায় ছিল না।  

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুক্রবারের ‘চ’ ইউনিটের ২০২১-২০২২ সেশনের সিলেট অঞ্চলের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 
শাবিপ্রবি কেন্দ্রের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং হচ্ছে। "চ" ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী সংখ্যা কম থাকায় ও আমাদের সবধরনের প্রস্তুতি থাকায় পরীক্ষা নিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে বৃষ্টির পানি জমলেও তা বিভিন্ন নালা দিয়ে বের হয়ে যায়। বর্তমানে যে পানি তা চারদিক থেকে আসা বন্যার পানি। আমাদের সকলেরই দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর আবাসিক হলগুলোতে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমাদের চিন্তা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো সমস্যায় আমাদেরকে প্রাথমিকভাবে জানালে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব। তবে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খাবার পানি, বিদ্যুৎ ও হলে সার্বিক সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার অনুরোধ করছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছে শাবি প্রশাসন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
এনইউ/এসএ
 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।