ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবি ক্লাবে রিজভীর অবস্থান নিয়ে তদন্ত কমিটি, সাদা দলের প্রতিবাদ

ইউনিভর্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২২
ঢাবি ক্লাবে রিজভীর অবস্থান নিয়ে তদন্ত কমিটি, সাদা দলের প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্লাব ভবনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অবস্থান নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রোববার (১৯ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্লাবের সভাপতি ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলামের সঙ্গে ক্লাবের একটি কক্ষে দেখা করেন বিএনপি নেতা রিজভী। এসময় রিজভীর স্ত্রী ও দলীয় নেতাকর্মীরা ছিলেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা বিষয়টি ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে প্রতিবাদে সরব হন।  

বিষয়টি নিয়ে ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিষয়টি নিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে একটি কমিটি করা হয়। ফার্মেসী অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও নীল দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ক্লাবের কার্যকর পরিষদ জরুরি সভায় প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটনের জন্য অধ্যাপক সিতেশ চন্দ্র বাছারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান এটিকে ঘরোয়া সামাজিক অনুষ্ঠান উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মানহানির অপচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এতে বলা হয়, গত ১৮ জুন ২০২২ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে অনুষ্ঠিত একটি ঘরোয়া সামাজিক অনুষ্ঠানকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন বানচালের উদ্দেশ্যে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সভাপতি এবং সিনেট সদস্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে অসম্মানজনক বক্তব্য দিয়ে তাঁদের হেয় প্রতিপন্ন এবং শাস্তি দাবির ঘটনায় আমরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের একটি মিলনস্থল। দল-মত নির্বিশেষে ক্লাবের সদস্য শিক্ষক ও কর্মকতারা এই ক্লাবকে তাঁদের অবসর বিনোদনের একটি কেন্দ্রস্থল হিসেবে ব্যবহার করেন। এখানে ক্লাব সদস্যরা তাঁদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদেরও নিয়ে আসেন। এমনকি এই ক্লাবে দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের আগমনের ঘটনাও নজিরবিহীন নয়। এখনো প্রতিনিয়তই এই ক্লাবে যাঁরা আসেন তাদের মধ্যে রাজনীতিবিদদের দেখা যায়। এ নিয়ে শিক্ষক বা ক্লাব কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি বা বিরোধিতা অতীতে আমরা কখনো দেখিনি। কিন্তু গত ১৮ জুন ঘরোয়া একটি ছোট অনুষ্ঠানে বিনএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সস্ত্রীক অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে এই অনুষ্ঠানটিকে ‘গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক’ আখ্যা দিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা অনাকাঙ্খিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক।  

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব একটি উন্মুক্ত স্থানে অবস্থিত। এটি সম্পূর্ণরূপে সিসিটিভির আওতাযুক্ত। এমন একটি ক্লাবে অংশগ্রহণকারীরা সস্ত্রীক এসে গোপন ষড়যন্ত্র বৈঠক করবেন, তা সুস্থ্ মস্তিষ্কের কারও কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইতোমধ্যেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। এখানে ভিন্নমতের উপস্থিতি সহ্য করার মতো নুন্যতম সৌজন্যতাবোধও আমরা লক্ষ্য করি না। ১৮ জুনের ঘটনাটি এরূপ কর্তৃত্ববাদী মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। আমরা এ ধরনের হীন মানসিকতা সম্পন্ন কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।  

একই সঙ্গে অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের সম্পর্কে যে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দিয়ে তাঁদের শাস্তি দাবি করা হচ্ছে- এ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য যাতে ক্ষুন্ন না হয়, সে বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
এসকেবি/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।