ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

‘আধুনিক’ রূপে ফিরছে শাবিপ্রবির সৈয়দ মুজতবা আলী হল

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
‘আধুনিক’ রূপে ফিরছে শাবিপ্রবির সৈয়দ মুজতবা আলী হল

শাবিপ্রবি (সিলেট): দীর্ঘদিন আবাসন সংকটে আছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

ইতোমধ্যে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের বর্ধিতকরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আধুনিকমানের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে তৈরি করা হয়েছে সৈয়দ মুজতবা আলী হল। হলের নির্মাণ শৈলী, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মনোরম পরিবেশ অন্যান্য হল থেকে একটু ব্যতিক্রমধর্মী হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নজর কাড়ছে প্রতিনিয়ত। ফলে অধীর আগ্রহ নিয়ে হল উদ্বোধনের অপেক্ষায় দিন পার করছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ২০১১ সালের আগস্টে মুজতবা আলী হলের উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। জনপ্রিয় রম্য লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর নামে এ হলের নামকরণ করা হয়। শুরুতে তিন তলা বিশিষ্ট একটিমাত্র ব্লকে শিক্ষার্থী ধারণ ক্ষমতা ছিল ৬৮ জন। পরে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৯ বছর পর ২০২০ সালের শুরুতে এ হলের বর্ধিত করণের কাজ শুরু হয়। যার কাজ নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সৈয়দ আলী বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। হল বর্ধিতকরণে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা। এতে শিক্ষার্থী ধারণ ক্ষমতা ৪শতাধিক। বর্তমানে এ হলের ৪টি ব্লকের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলছে উদ্বোধনের প্রস্তুতি। আগামী ২ সেপ্টেম্বর হল উদ্বোধন এবং ৩ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা হলে ওঠার কথা রয়েছে।

হল প্রশাসন সুত্রে জানা যায়, আধুনিক এই হলের রুমগুলোতে টাইলস, ডিজাইন করা আলমারি, উন্নতমানের চেয়ার-টেবিল, বেড, টেবিল ল্যাম্প, পর্দা টানানোর স্ট্যান্ড ও উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা রুম, গেস্ট রুম, নামাজের রুম, মেডিক্যাল রুম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ৩টি রিডিং রুম, টিভি রুম, ডাইনিং, স্টেশনারি শপ, সেলুন, লন্ড্রি, মটর সাইকেল স্ট্যান্ড, বাইসাইকেল স্ট্যান্ড, শীতকালীন, গ্রীষ্মকালীন খেলাধুলার ব্যবস্থাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া হলের সৌন্দর্য বর্ধনে চারপাশে বিভিন্ন ধরনের ফল-ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে।

এদিকে হলে অবস্থানরত মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা নিজের অনুভূতি জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, আমি ২০১৭ থেকেই হলে আছি। এ হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। হল প্রশাসনও আমাদের প্রতি আন্তরিক। সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, পিকনিক, খেলাধুলা, আড্ডা, টিভি দেখাসহ বিভিন্ন সুখকর সময় কাটিয়েছি। এগুলো আজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে। এ হলের পড়ার পরিবেশটা সব-সময় ভালো, সামনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে সে প্রত্যাশা রইল।

সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু সাঈদ আরফিন খান বাংলানিউজকে বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হল উদ্বোধন করা হবে। সে প্রস্তুতি নিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। হলের খাবারের মান, পড়াশোনার পরিবেশ, ইন্টারনেট, নিরাপদ পানিসহ বিভিন্ন সুয়োগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে।  

তিনি বলেন, হলের উন্নয়নে উপাচার্য স্যার সব-সময় আন্তরিক ছিলেন, যে কোনো ধরনের সমস্যা সঙ্গে সঙ্গেই সমাধানের নির্দেশ দিতেন।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বদ্ধপরিকর। এ সংকট দূর করতে নতুন নতুন হল হচ্ছে। নতুনগুলোতে শিক্ষার্থীদের আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পুরোনো হলগুলোতেও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

উপাচার্য বলেন, বর্তমানে আমাদের অনেক অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে বাসা ভাড়া করে থাকে, এতে বাসা ভাড়া বেশি হওয়ায় তাদের খরচ বেশি হয়। অন্যদিকে যারা হলে থাকে তাদের খরচ অনেক কম, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্য করতে পারি না। তাই আবাসনের সংকট দূর করতে শীঘ্রই আরো হল তৈরি হবে। হলগুলো হয়ে গেলে শতভাগ মেয়ে শিক্ষার্থী এবং ৮০শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারবে। আশা করছি শীঘ্রই এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান অনেক ভালো। অবকাঠামোগতদিক দিয়েও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ ধারা অব্যাহত থাকলে সবদিক দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্যদের কাছে হবে রোল মডেল।

বাংলাদেশ সময় : ১০৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।