ঢাকা: আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো নতুন প্রকল্প অনুমোদন, কাবিখা, ত্রাণ, ভিজিডি কর্মসূচির মতো উন্নয়ন কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাটি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, নির্দেশনাটি ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ইসি ঘোষিত তফসিল অনুসারে আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৪ অনুযায়ী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অর্থাৎ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোনো প্রকার চাঁদা বা অনুদান দেওয়া বা অঙ্গীকার করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং এ অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্টরা আচরণ বিধিমালার বিধি ৩১ অনুযায়ী ছয়মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর কোনো দল এ বিধি লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের কোনো সম্পত্তি তথা অফিস, যানবাহন, মোবাইল ফোন, টেলিফোন, ওয়াকিটকি বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না মর্মে নির্দেশনা দেওয়া হলো। এমনকি মাশুল দিয়েও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীকে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনের
কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া কোনো প্রার্থী সিটি করপোরেশনের দরপত্র আহ্বান, গ্রহণ কিংবা বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন না।
এদিকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ২৫ অনুসারে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উম্মোচন করা যাবে না। কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ দেওয়া বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। সিটি করপোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলর বা অন্য কোনো পদাধিকারী সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকায় উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা ইতঃপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা দিতে পারবেন না।
অন্যদিকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় অনুদান, ভিজিডি, কাবিখা, ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন না করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে ইতঃপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা দিতে নিতান্ত আবশ্যক হলে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কেও উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যু কার্যক্রমসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান অথবা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যেসব ত্রাণ কার্যক্রম পূর্ব থেকে পরিচালিত হচ্ছে অর্থাৎ চলমান ত্রাণ কার্যক্রম চালু থাকবে।
এ অবস্থায় সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান অথবা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে কোনো এলাকায় অনুদান অথবা ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত নতুন কার্যক্রম গ্রহণ নিতান্তই আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অথবা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২৩
ইইউডি/আরআইএস