ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

যুক্তি-তর্ক পর্যালোচনার পর নতুন দল নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২৩
যুক্তি-তর্ক পর্যালোচনার পর নতুন দল নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত

ঢাকা: শুনানিতে উত্থাপিত বাদী-বিবাদীর যুক্তি-তর্ক পর্যালোচনার পর নতুন দল নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (০৭ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে নিবন্ধন সংক্রান্ত শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

তিনি বলেন, দু’টি দলকে যাচাই-বাছাইয়ের পর নিবন্ধন দেওয়ার জন্য তালিকায় রাখা হয়েছিল। একই সঙ্গে দল দু’টির বিরুদ্ধে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তাও জানাতে বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী, শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। এটি একটি বিচারাধীন বিষয়। তাই কিছু বলা ঠিক হবে না। শুনানির যুক্তি-তর্ক পর্যালোচনার পর নিবন্ধন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।

নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দেওয়ার জন্য যাচাই-বাছাই শেষে প্রাথমিক তালিকায় রেখেছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিকে (বিএসপি)। ইসির দেওয়ার সময়ের মধ্যে এই দু’টি দলের বিরুদ্ধে মোট তিনটি অভিযোগ পড়ে।

বিএনএমকে ভূঁইফোড় সংগঠন আখ্যা দিয়ে নিবন্ধন না দেওয়ার জন্য আবেদন জানান আইনজীবী আবু নাছের খান।

পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও খানকা দরবার শরিফকে রাজনৈতিক দল হিসেবে উপস্থাপন করায় এবং অন্য দলের নামের সঙ্গে মিল রাখায় বিএসপিকে নিবন্ধন না দেওয়ার আবেদন পড়ে দু’টি।

বিএসপির বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ করেন দলটির সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদের ছোট ভাই শাহাজাদ সৈয়দ শহিদউদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারি ও তার দুই বোন। আর নামের মিল থাকার অভিযোগ তোলেন বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লায়ন আব্দুল কাদের জিলানী।

শুনানি শেষে অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান বলেন, বিএনএম ইসির নিবন্ধনের জন্য কোনো শর্তই পূরণ করতে পারেনি। এ বিষয়ে আমরা যুক্তি উপস্থাপন করেছি। তিনি বলেন, ভূঁইফোড় সংগঠনগুলোকে যদি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হয় তাহলে শপথ ভঙ্গ হবে নির্বাচন কমিশনের।

তবে বিএনএম যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যরিষ্টার এম সারোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগীকারী এবি পার্টির একজন সদস্য। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে অভিযোগ করেছেন। আমাদের দলটি সাত জুলাই ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রথম থেকে যখন প্রয়োজন তখন আমাদের কার্যক্রম চালিয়েছি।

বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লায়ন আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, আমার কথা হলো বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টি-বিএসপি, ২০১৭ সালে ৬ জুলাই আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছি। আজকে হঠাৎ করে একটি রাজনৈতিক সংগঠন, আসলো, রাজনৈতিক সংগঠন না তারা আসলে ধর্মীয় সংগঠন; আমরা জানি মাইজভাণ্ডারি বা খানকা। সেই ভদ্রলোক এসে রাজনৈতিক দল গঠন করল, আর আমাদের বিএসপির সংক্ষিপ্ত নামটি তিনি ব্যবহার করলেন। এটা আমি কোনোভাবে মেনে নিতে পারিনি। দলের নাম ডবল হতে পারে না।

অন্যদিকে শাহাজাদা সৈয়দ শহিদউদ্দিন আহমদ বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটাকে এই দরবারকে পুঁজি করে তার ভাই রাজনৈতিক হাতিয়ার বানাতে চায়। যার কাছে নিজের পিতা, নিজের ছোট ভাই-বোন, অনুসারী আশেকানরা নিরাপদ নয়।

তবে এসব অভিযোগ উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির স্থায়ী পরিষদের মেম্বার মো. ইব্রাহীম মিয়া বলেন, আমরা সকল শর্ত পূরণ করেছি। যে অভিযোগ ছিল, তা মিথ্যা। কারো পৈত্রিক সম্পত্তিতে অফিস করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

যিনি অভিযোগ করেছেন, তার পিতা একটি পত্রিকায় ২০০৮ সালে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে, যেন জানাজাতেও তিনি অংশ না নেন। এছাড়া তার পিতা পাঁচলাইশ ও ফটিকছড়ি থানায় দুটি জিডি করে গেছেন তার বিরুদ্ধে। আমরা আর কোনো বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না।

বাদী-বিবাদীর সকলেই সাংবাদিকদের জানান, কমিশন তাদের বক্তব্য শুনেছেন। পর্যালোচনা করে রায় দেবেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৩
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।