ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিলেটের ৬ আসনে বাছাইয়ে বাদ ১৪ প্রার্থী, বৈধ ৩১

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
সিলেটের ৬ আসনে বাছাইয়ে বাদ ১৪ প্রার্থী, বৈধ ৩১

সিলেট: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে ৪৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। মনোনয়ন বাছাইয়ে তাদের মধ্যে ১৪ জন বাদ পড়েছেন বিভিন্ন কারণে।

 

রোববার (৩ ডিসেম্বর) সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ৩১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর দুই প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে।  

সিলেট-১ আসনে সাতজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিতের মনোনয়ন খেলাপি ঋণের কারণে বাতিল করা হয়। আর আয়কর রিটার্ন জমা না দেওয়ায় ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হকের মনোনয়ন প্রথমে স্থগিত করা হলেও পরে আয়কর রিটার্নের কপি জমা দিলে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।  আরেক প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দেওয়া হবে।

সিলেট-১ আসনে যাদের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, জাকের পার্টির মো. আব্দুল হান্নান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. সোহেল আহমেদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক তিনবারের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এবং ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হক।

সিলেট-২ আসনে ১৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছয়টি বৈধ হয়েছে এবং আটটি মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান ও বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানসহ আটজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।  

বাকিরা হলেন -স্বতন্ত্র ইকবাল হোসেন, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আব্দুর রব, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির, স্বতন্ত্র মুশাহিদ আলী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবুল কালাম আজাদ ও জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।

সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরীর আয়কর সনদ না থাকায় মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হলেও পরে আয়কর সনদ দাখিল করলে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। একই পরিস্থিতিতে মনোয়ার হোসেন কাগজপত্র জমা দিলে তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।

সিলেট-২ আসনে যাদের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে, তারা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুল মান্নান খান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির ও স্বতন্ত্র আলতাফুর রহমান সোহেল ও জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী।
 
সিলেট-৩ আসনে আটজন মনোনয়ন দাখিল করেন। এর মধ্যে চারজনেরটি বৈধ ও বাকদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমএর কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালের এক শতাংশ ভোটে অসামঞ্জস্যতা থাকায় মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।  

স্বতন্ত্র কফিল উদ্দিন ও ইসলামী ঐক্যজোটের মইনুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এ ছাড়া এ আসনের স্বতন্ত্র ফখরুল ইসলামের দাখিল করা এক শতাংশ ভোটারের তালিকা সঠিক না হওয়ায় এবং সমর্থন ও প্রস্তাবকারী একই ব্যক্তি হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

সিলেট ৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের জাহেদুর রহমান (মাসুম), জাতীয় পার্টির মো. আতিকুর রহমানের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।  

সিলেট-৪ আসনে চারজন মনোনয়ন দাখিল করেন। এর মধ্যে তিনজনেরটি বৈধ এবং একজনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি হলেন তৃণমূল বিএনপির আবুল হোসেন। ব্যাংক ঋণের জামিনদার থাকায় প্রথমে স্থগিত ও পরে বাতিল করা হয়। এ আসনে যাদের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে, তারা হলেন- আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী ইমরান আহমদ,  ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (কামরান) ও জাকের পার্টির মো. আলী আকবর।

সিলেট-৫ আসনে আটজনের মধ্যে সাতজনের মনোনয়নপত্র বৈধ এবং একজনেরটি স্থগিত রাখা হয়েছে। স্থগিত মনোনয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত সোমবার দুপুরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন রিটানিং কর্মকর্তা। বৈধরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, স্বতন্ত্র আহমদ আল কবীর, স্বতন্ত্র প্রার্থী আল ইসলাহর হুছামুদ্দিন চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টির সাব্বির আহমদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের বদরুল আলম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) খাইরুল ইসলাম। এ আসনে স্বতন্ত্র কয়ছর আহমদ কাওছারের আয়কর রিটার্নের কপি না পাওয়ায় তার মনোনয়নপত্র স্থগিত রাখা হয়।

সিলেট-৬ আসনে ছয় প্রার্থীর সবার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সেলিম উদ্দিন,তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন সমশের মবিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট মনোনীত আতাউর রহমান ও ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী সাদিকুর রহমান।

সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে ৪৭ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। বাছাইয়ে ১৪ জন বাদ পড়েছেন এবং ৩১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়েছে। আর দুই প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। তাদের বিষয়ে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সিলেট-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের মনোনয়ন বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, দলীয় প্রধানের সই না থাকায় মোকাব্বির খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকলেও সে সিদ্ধান্ত কেবল নির্বাচন কমিশন দেখবে। সেক্ষেত্রে তিনিসহ অন্য প্রার্থীরা আপিল করার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
এনইউ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।