ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন টিম ও সেল গঠন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মাঠ প্রশাসনের তৎপরতা দৃশ্যমান করার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিল নির্বাচন (ইসি)।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় তিনটি টিম ও সেল গঠনের জন্য বলা হয়েছে।
ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন
নির্বাচন অনুষ্ঠান যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং নিরপেক্ষতা যাতে জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয় তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে ও মেট্রোপলিটন এলাকায় রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে হবে।
একইভাবে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং মেট্রোপলিটন এলাকায় সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে হবে। এ টিমে বেসরকারি পর্যায়ের দল নিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমের সরেজমিনে পরিদর্শন ও প্রতিবেদন দাখিল: ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না অথবা ভঙ্গ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে কি না বা কোনো প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচনী ব্যয় বাবদ নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ব্যয় করছেন কি না অথবা অন্যান্য বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করছেন কি না তা সরেজমিনে পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেবেন।
আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের কোনো বিষয় নজরে আসা মাত্রই নির্বাচনী তদন্ত কমিটিকে জানাতে হবে। অন্যান্য নির্বাচনী বিধি-নিষেধ ভঙ্গের ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে ফৌজদারি আদালতেও অভিযোগ দায়ের করা যাবে। প্রয়োজনে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের পরামর্শ দিতে হবে।
আরও পড়ুন: তালিকা ধরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ
এ ছাড়া স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর তিন দিন অন্তর অন্তর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিতে হবে। প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট বা তাদের পক্ষে অন্য কেউ আচরণ বিধিমালার কোনো বিধি ভঙ্গ করলে বা ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে বা বিধিমালার কোনো বিধি বিশেষ করে নির্বাচনী ব্যয় সংক্রান্ত বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠন
অবিলম্বে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে। টিম গঠনের সঙ্গে সঙ্গে টিমের সদস্যদের নামের তালিকা (মোবাইল নম্বরসহ) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে হবে। এ টিম নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, বিধি, নির্বাচনী আচরণবিধি এবং নির্বাচনের সার্বিক বিষয়াদি যথাযথ ও সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি না তা তদারকি করবে ও প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এ টিম বিশেষ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে আর বিশেষ প্রয়োজন না হলে প্রতি পাঁচ দিন পর পর উল্লিখিত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের কর্মকাণ্ডের সমন্বয় সাধন ও সুসংহতকরণের লক্ষ্যে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন করতে হবে। এ সেলে অন্যান্য সদস্যরা হবেন পুলিশ সুপার বা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও সহযোগী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনোনীত কর্মকর্তারা।
এ সেল নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এ সেলও আইনশৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে নেওয়া বিভিন্ন ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে জানাবে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে দুই হাজার ৭১২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
ইইউডি/আরএইচ