মাত্র ১৫ বছরে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর সম্পদ বেড়েছে ৪৯৭ গুণ। শুধু হেনরী নয়, লাফিয়ে লাফিয়ে সম্পদ ও নগদ অর্থ বেড়েছে আরও অনেক সংসদ সদস্য প্রার্থীর।
যেমন নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদারের আয় বেড়েছে ১৮০ গুণ এবং সম্পদ বেড়েছে ১৪ গুণ, ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের নগদ টাকা বেড়েছে ২২২ গুণ, রেলমন্ত্রী এবং পঞ্চগড়-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম সুজনের সম্পদ বেড়েছে ৩২ গুণ, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আফিল উদ্দীনের সম্পদ বেড়েছে ১৬ গুণ, ফেনী-২ আসনে নৌকার মাঝি ও বর্তমান সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে শত কোটি টাকার এবং লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের সম্পদ (স্ত্রীর সম্পদের হিসাব ছাড়াই) বেড়েছে দেড় কোটি টাকার ওপরে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এসব নেতার প্রার্থিতার জন্য দাখিল করা হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুসারে, মাত্র ১৫ বছরের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৪৯৭ গুণ। ২০০৮ সালে নির্বাচনি হলফনামায় তার আয় ও সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা। গত ১৫ বছরের ব্যবধানে হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবুর মোট ৬৬ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৭ টাকার আয়সহ সম্পদ দেখানো হয়েছে। নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় কৃষি খাতে আয় দেখানো হয়েছে বছরে ৩ লাখ, তিনটি দোকান ভাড়া থেকে ৮ লাখ ৯১ হাজার, ব্যবসা থেকে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ২৫ হাজার ২৯৬, চাকরি/সম্মানি ভাতা ২৮ লাখ ১৩ হাজার ৭৯৯ এবং ডেইরি-ফিশারি ও ব্যাংক মুনাফা ৩ কোটি ২৬ লাখ ২৪ হাজার ৬৬১ টাকা। জান্নাত আরা হেনরীর বর্তমান স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে কৃষিজমি ১ হাজার ৩৪৬.৪ শতাংশ, যার মূল্য ৩ কোটি ৯৬ লাখ ও স্বামীর নামে ৫২১.৫৪ শতাংশ, যার মূল্য ৭৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। নিজ নামে অকৃষি জমি ১৯০.৭৫ শতাংশ, যার মূল্য ৩ কোটি ৮৭ লাখ ৫ হাজার টাকা। স্বামীর নামে পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত ১০০ শতাংশ অকৃষি জমি রয়েছে। হেনরীর নিজ নামে ৫ কোটি ২২ লাখ ১৪ হাজার টাকা মূল্যের চারটি ভবন এবং স্বামীর নামে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি দালান (বৃদ্ধাশ্রম) রয়েছে।
এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদ রয়েছে নগদ টাকা নিজ নামে ২২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৫ ও স্বামীর নামে ২২ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩৫ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে নিজ নামে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪০ ও স্বামীর নামে ১ কোটি ২০ লাখ ৮৫ হাজার ৭৩৫ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ, তালিকভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার আছে নিজ নামে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। পোস্টাল বা সেভিংস সার্টিফিকেটসহ সঞ্চয়পত্রে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ নিজ নামে আছে ৩৩ কোটি ৪৯ লাখ ২৯ হাজার ৭৬৭ ও স্বামীর নামে ১ কোটি ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৬১ টাকা। নিজ নামীয় যানবাহনের মূল্য ৩ কোটি ৮৪ লাখ ও স্বামীর নামে ২ কোটি ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৫৬ টাকা। ইলেকট্রিক সামগ্রী আছে নিজ নামে ৫ লাখ ও স্বামীর নামে সাড়ে ৪ লাখ টাকার। স্বামী ও স্ত্রী দুজনের নামে ১৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র দেখানো হয়েছে।
অন্যান্য ব্যবসার মূলধন নিজ নামে ১ কোটি ৬০ লাখ ও স্বামীর নামে ৩ কোটি ৭ লাখ ৬২ হাজার ৭১৮ টাকা। এ ছাড়া জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবুর কাছে বিভিন্ন সময়ে উপহার হিসেবে পাওয়া যথাক্রমে ১০০ ও ৫০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। সে সময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ এবং আয় দেখানো হয় কৃষি খাতে বার্ষিক ২ হাজার ও শিক্ষকতা পেশা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ছিল স্থাবর সম্পদ কৃষিজমি নিজ নামে ১৭.৫০ শতক, যার মূল্য ৩৪ হাজার ৫০০ ও স্বামীর নামে ৩ বিঘা কৃষিজমি যার মূল্য ২ লাখ টাকা। অকৃষি জমি নিজ নামে দশমিক ৩৬ শতাংশ যার মূল্য ২ লাখ ও স্বামীর নামে ৬.৫০ শতাংশ যার মূল্য ২ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি ছিল নিজ নামে নগদ টাকা ২ লাখ ৫০ হাজার ও স্বামীর নামে ২ লাখ টাকা। নিজ নামে দেড় লাখ টাকা মূল্যের ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও স্বামীর নামে ১ লাখ টাকা মূল্যের ফ্রিজ, টিভি, খাট, আলমিরা ও সোফা ছিল।
ছলিম উদ্দিন তরফদার: নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদারের আয় ও সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছলিম উদ্দিন তরফদার নওগাঁ-৩ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী। টানা দুই মেয়াদে ১০ বছর ক্ষমতায় থাকায় ছলিম উদ্দিনের বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ১৪০ গুণ। স্থাবর-অস্থারব সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১৪ গুণ। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৩ সালের হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এবার নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদারের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস উল্লেখ করা হয়েছে। পেশা হিসেবে মাছ চাষি, চালকল ব্যবসার উল্লেখ করেছেন। আয়ের উৎস হিসেবে সংসদ সদস্যের সম্মানী ভাতা, ব্যবসা ও অন্যান্য খাত উল্লেখ করেছেন। এসব উৎস থেকে তিনি বার্ষিক আয় ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৯২ টাকা উল্লেখ করেছিলেন। সংসদ সদস্য হওয়ার পর গত ১০ বছরের ব্যবধানে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ১৪০ গুণ। ২০১৪ সালে তার স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না। এবারও কোনো আয় নেই। ২০১৪ সালের নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখ করা হয়, তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে তার সম্পদ বেড়ে ১ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার টাকা হয়েছিল। ২০২৩ সালের হলফনামায় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯০ টাকা। এমপি হওয়ার পর ১০ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১৪ গুণের বেশি। সম্পদ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে এবারের হলফনামায় আয়ের উৎস উল্লেখ করেন সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা, কৃষি খাত, ব্যবসা ও অন্যান্য খাত থেকে ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয়। সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য খাত থেকে ৬ কোটি ৬০ হাজার টাকা। মৎস্য খামার ও চালকল ব্যবসা থেকে পেয়েছেন ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কৃষি খাত থেকে ৬ লাখ টাকা। এই মিলে তার বার্ষিক আয় ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় কৃষি খাত থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার, চালকল থেকে ৩ লাখ ১০ হাজার ও ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে ৪২ হাজার টাকা বার্ষিক আয় হতো ছলিম উদ্দিনের। ২০২৩ সালে ছলিম উদ্দিন তরফদার তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হলফনামা দাখিলের সময় নগদ ৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা দেখিয়েছেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ২ লাখ। মোটরগাড়ি থেকে ১ কোটি ৬ লাখ টাকা। ইলেকট্রিক সামগ্রী ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকার উল্লেখ করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে হলফনামা দাখিলের সময় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ছিল ৩ লাখ ১০ হাজার, মোটরগাড়ি থেকে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে তার স্ত্রীর ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ ছিল; যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। বর্তমানে তিনি স্থাবর সম্পদের মধ্যে পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত ২০ একর ৯৮ শতক জমির কোনো মূল্য উল্লেখ করেননি। ১ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ৪৫০ টাকা মূল্যের কৃষিজমি রয়েছে তার। ১ কোটি ৭৩ লাখ ২৫ হাজার ৬৪০ টাকা মূল্যের ২ একর ৮৬ শতক অকৃষি জমি রয়েছে। এ ছাড়া মহাদেবপুর শহরে একটি বাড়ির মূল্য ৩০ লাখ, নয়টি পুকুরের মূল্য ৫৩ লাখ, একটি মাছের খামারের মূল্য ৭০ লাখ টাকার উল্লেখ করেছেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে হলফনামা দাখিলের সময় পৈতৃকসূত্রে প্রাপ্ত ২০.৯৮ একর জমি। নওগাঁ পৌর এলাকায় সাড়ে ৬০ শতক জমির মূল্য ৫২ লাখ টাকা, সাতটি পুকুরের মূল্য ৭ লাখ টাকা উল্লেখ করেছিলেন। ২০২৩ সালের হলফনামায় তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মূল্য ২৬ লাখ টাকার উল্লেখ করেছেন। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৫ একর কৃষিজমি ২০ লাখ টাকা, ২ একর অকৃষি জমি ৬ লাখ টাকা। ২০১৪ সালের হলফনামায় তার স্ত্রীর কোনো স্থাবর সম্পদ ছিল না। এবার হলফনামায় তিনি নির্ভরশীল ব্যক্তিদের ৬ লাখ টাকার সম্পদের উল্লেখ করেছেন। ২০১৪ সালে ব্যাংকে ৪০ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ থাকলেও বর্তমানে কোনো দায় দেনা নেই। হলফনামায় তিনি তার সন্তানদের তথ্য উল্লেখ করেননি।
আনোয়ারুল আজীম আনার: ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। গত ১০ বছরে সংসদ সদস্য হিসেবে তার নগদ টাকা বেড়েছে ২২২ গুণ। ১০ বছর আগে নিজ নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা জমা রয়েছে তার। বেড়েছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ আদালতে দশম জাতীয় নির্বাচনে ২০টি, একাদশে ২১টি, ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২১টি হলফনামায় দুই মামলার তথ্য পাওয়া যায়, যার কোনোটায় ডিসচার্জ, কোনোটায় খালাস দেখানো হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে পাওয়া হলফনামা ও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত হলফনামায় জানা গেছে, বর্তমানে আনোয়ারুল আজীম আনারের বার্ষিক আয় ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৭১৮ টাকা এবং প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩ টাকা। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী এই সংসদ সদস্যের বার্ষিক আয় ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীল স্ত্রীর ব্যবসা থেকে আয় ছিল ২ লাখ ৭০ হাজার। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে হলফনামায় কৃষি থেকে বছরে আয় ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে; ১০ বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে এ খাত থেকে তার আয় ছিল ২৪ হাজার টাকা। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ব্যবসা থেকে আয় ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে এ খাত থেকে আয় ছিল ১ লাখ টাকা। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতাদি বাবদ আয় ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭০ টাকা। ১০ বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে পেয়েছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসিতে দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, বর্তমানে আনোয়ারুল আজীম আনারের নগদ ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩২ হাজার ৮১৮ টাকা রয়েছে এবং তার স্ত্রীর রয়েছে ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী সে সময় তার হাতে নগদ টাকা ছিল ৬২ হাজার ৫৮০ টাকা ও স্ত্রীর নামে ছিল ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা। গত ১০ বছরে এই সংসদ সদস্যের নগদ টাকা বেড়েছে ২২২ গুণ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার রয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ আর স্ত্রীর ১৯ লাখ ৯২ হাজার ১১৯ টাকা। ১০ বছর আগে তার ব্যাংকে কোনো টাকা না থাকলেও স্ত্রীর ছিল ১৬ লাখ টাকা। সে সময় স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ও ট্রাক না থাকলেও বর্তমানে চারটি ট্রাক ও ১ লাখ ১৪ হাজার ৩৫০ টাকা জীবনবিমার কিস্তি প্রদান করেছেন তিনি। বর্তমানে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের নামে কৃষিজমির পরিমাণ ৩৩ বিঘা আর স্ত্রীর নামে ২৪.৫০ শতক জমি রয়েছে। এক দশক আগে তার নামে কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ১০ বিঘা, স্ত্রীর নামে কোনো জমি ছিল না। অকৃষি জমি (পৈতৃকসূত্রসহ) রয়েছে ১২৯.৩৪ শতক আর স্ত্রীর নামে ১৭৯.০২ শতক। সে সময় নিজ নামে ছিল ৫৯.৫ শতক। এ ছাড়া ভূষণ স্কুল সড়কে একটি চার তলাবিশিষ্ট বাড়ি রয়েছে। দশম জাতীয় নির্বাচনে হলফনামায় জনতা ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখায় ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৭ টাকা ঋণের উল্লেখ করা হয়েছে; যা ১০ বছর পর একই ব্যাংকে দেখানো হয়েছে ১৭ লাখ ২৩ হাজার ১১১ টাকা।
শেখ আফিল উদ্দীন: গত পাঁচ বছরে যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আফিল উদ্দীনের সম্পদ বেড়েছে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ৯৬ হাজার ৪১ টাকার। এ সময় বেড়েছে ব্যবসায়িক আয়, সম্মানী ও মূলধন। তবে জমি ও স্বর্ণালংকার যা ছিল তা-ই আছে। তৃতীয়বারের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন দেশের অন্যতম শিল্পপতি প্রয়াত শেখ আকিজ উদ্দীনের ছেলে শেখ আফিল উদ্দীন। এবারের হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী, শেখ আফিল উদ্দীনের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৩ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার ১৮৫ টাকার। পাঁচ বছর আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে যা বেড়ে ৭ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৪৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সম্মানী ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা হয়েছে। হলফনামার তথ্যানুযায়ী, শেখ আফিল উদ্দীনের ব্যবসায়িক মূলধন ১৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭৩ লাখ টাকা হয়েছে। এর আগে তার ১ কোটি ৬০ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪০ টাকা মূল্যের গাড়ি ছিল। বর্তমানে তার ৩ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ১৮৯ টাকা মূল্যের গাড়ি আছে।
নিজাম হাজারী: ফেনী-২ আসনে নৌকার মাঝি ও বর্তমান সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তার স্ত্রীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ শত কোটি টাকার। ২০১৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী নিজাম হাজারীর হাতে ছিল নগদ ৫ লাখ টাকা। বর্তমানে ১০ বছর পর তা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি টাকায়। এর সঙ্গে বেড়েছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ। পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে নগদ টাকা ও ব্যাংকে জমা ছিল ২ কোটি ১৪ লাখ ২১ হাজার টাকা। বর্তমানে নগদ টাকা ও ব্যাংকে জমা আছে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ১১ হাজার টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফেনী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিলকৃত হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নিজাম উদ্দিন হাজারীর গত পাঁচ বছরে নিজ নামে ও স্ত্রীর স্বর্ণালংকার অপরিবর্তিত রয়েছে। বেড়েছে কৃষি খাত ও বাড়ি ভাড়ার আয়। কমেছে মৎস্য খাতে, আর ৬ গুণ বেড়েছে স্থাবর সম্পত্তি। এ ছাড়া কৃষিজমি বেড়েছে ২ কোটি টাকা মূল্যের। অন্যদিকে সংসদ সদস্য ২০১৮ সালের হলফনামায় সম্মানী ভাতা দেখিয়েছেন ২২ লাখ ২৬ হাজার ৬৫০ টাকা আর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাতে তার স্ত্রী বেশি সম্পদশালী। নিজাম উদ্দিন হাজারী বছরে মাছের খামার থেকে আয় করেন ১ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা, যা ২০১৮ সালে ছিল ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭০০ টাকা। কৃষি খাতে বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ও বাড়ি ভাড়ার আয় দেখিয়েছেন ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্যদিকে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে নিজাম হাজারীর ১৯ কোটি ৪৮ লাখ মূল্যের কৃষিজমি, অকৃষি জমি রয়েছে ৩০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা মূল্যের। সংসদ সদস্যের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে রয়েছে ১৯ কোটি টাকা ও ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার। তিনি বছরে বাড়ি ভাড়া, সঞ্চয়পত্র, এফডিআর ও মাছের ব্যবসা থেকে আয় করেন ২ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ১০ বছরে ১৯ গুণ সম্পদ বেড়েছে ফেনী-২ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারীর। আর একই সময় তার স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৪৪ গুণ। ২০১৩ সালে নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তার স্ত্রীর মোট সম্পদ ছিল ৪ কোটি ৩৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১০৪ কোটি ৭৬ লাখ ২২ হাজার ৩১৮ টাকা। ২০১৩ সালে তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা; আর স্থাবর সম্পদ ১ দশমিক ৮ একর জমি। ২০১৮ সালে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৫৬ লাখ ১০ হাজার ৪৫১ টাকা আর ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ৫১ লাখ ৯২ হাজার ৭২৫ টাকায়। ১০ বছরে সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণ। এদিকে ২০১৩ সালে নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৮১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ১০ বছরে তা ৪৪ গুণ বেড়ে হয়েছে ৩৬ কোটি ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৫৯৩ টাকা।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন: রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তিনি টানা ১৫ বছর ধরে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর দায়িত্ব পান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের। ২০০৮ সালের নবম এবং আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া দুটি হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ১৫ বছরে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৫৪ গুণ। একই সঙ্গে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৪ গুণ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণও। হলফনামা অনুযায়ী ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নুরুল ইসলাম সুজনের নগদ অর্থ ছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ৬৩৪ এবং ব্যাংকে জমা ছিল ৪ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯ টাকা। বর্তমানে তার নগদ অর্থ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৭১ টাকা এবং ব্যাংকে জমা অর্থের পরিমাণ এখন ১ কোটি ৩৯ লাখ ২১ হাজার ৩৬৭ টাকা। অর্থাৎ ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে মোট অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ৮ লাখ ২ হাজার ৩১৩ টাকা; যা গত ১৫ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার ৪৩৮ টাকায়।
হলফনামার তথ্যানুযায়ী, রেলপথ মন্ত্রীর আয়ের পরিমাণও বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৪ গুণ। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নুরুল ইসলাম সুজনের বার্ষিক আয় ছিল ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ১ লাখ ৪ হাজার এবং আইন পেশা থেকে ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা। ১ হাজার ৫০০ সিসির টয়োটা কার ছিল একটি। স্বর্ণ ছিল ২৫ ভরি, যা বিয়েতে দান পেয়েছিলেন।
২০২৩ সালে এসে বার্ষিক আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ৭৩৭ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭২২, মাছ চাষ থেকে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার ১৬, বাড়ি ভাড়া থেকে ২ লাখ ৩৪ হাজার, শেয়ার/ব্যাংক আমানত থেকে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৯০৪, আইন পেশা থেকে ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৪৭, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৮ টাকা। টানা তিনবারের এই সংসদ সদস্যের স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নুরুল ইসলাম সুজনের কৃষিজমি ছিল ৮ একর এবং ঢাকার বাড্ডায় অকৃষি জমি ছিল ৪ দশমিক ৯৫ কাঠার প্লট। বর্তমানে তার কৃষিজমির পরিমাণ ৩০ বিঘা এবং অকৃষি জমির মধ্যে ঢাকার বাড্ডায় ৪ দশমিক ৯৫ কাঠার প্লট, উত্তরায় ৫ কাঠার প্লট, বনশ্রীতে দুটি ১ হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং ধানমন্ডিতে ১ হাজার ৮০০ বর্গফুটের ২ দশমিক ৫ তলা সম্পন্ন পাকা বাড়ি রয়েছে। তবে ব্যক্তিগত কোনো গাড়ির উল্লেখ করা হয়নি। অর্জনকালীন এসব সম্পদের মূল্য হলফনামায় দেখানো হয়নি।
মোতাহার হোসেন: লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের সম্পদ ও আয় দুটোই বেড়েছে। ২০১৮ সালে একাদশ ও আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য লালমনিরহাট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মোতাহার হোসেন হলফনামায় তার নিজের সম্পত্তির হিসাব উল্লেখ করলেও স্ত্রী-সন্তানের সম্পদের হিসাব উল্লেখ করেননি। তাই সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, হলফনামায় স্ত্রী-সন্তানের সম্পদের হিসাব উল্লেখ না করায় বিষয়টি অস্পষ্ট রয়ে গেছে। সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জমা দেওয়া হলফনামায় ২ কোটি ২৭ লাখ ২৬ হাজার ৪৫৯ টাকার সম্পদের (অস্থাবর ও স্থাবর) হিসাব দিয়েছেন। আর আসন্ন নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী পাঁচ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৫৫ হাজার ৩২৭ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় মোতাহার হোসেন ৩৩ লাখ ৪১ হাজার ২৩০ টাকা বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬২০, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া বাবদ ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬০০, ব্যবসা থেকে ২০ লাখ এবং চাকরি থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার ও অন্যান্য সুদ ৭৯ হাজার ১৮ টাকা আয়ের উল্লেখ করেছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় মোতাহার হোসেন ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৬০৪ টাকা বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৬০৪, ব্যবসা থেকে ১০ লাখ এবং চাকরি থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয়ের উল্লেখ করেছেন। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে মোতাহার হোসেন নগদ ২৫ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৪, গাড়ির মূল্য হিসেবে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৯ হাজার ২২২, ৪০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার, ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকার আসবাব দেখিয়েছেন। হলফনামা অনুযায়ী মোতাহার হোসেনের বর্তমান অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য নগদসহ ১ কোটি ৭৯ লাখ ২৫ হাজার ২৮৬ টাকা। একই হলফনামায় তিনি স্থাবর সম্পদ হিসেবে ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ৭ দশমিক ২১ একর কৃষিজমি, ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা মূল্যের শূন্য দশমিক ৫৪ একর অকৃষি জমি, ১ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন অবকাঠামো/স্থাপনা (দালান, আবাসিক/বাণিজ্যিক) এবং ২০ লাখ টাকা মূল্যের রাজউক প্লটের উল্লেখ করেছেন। সব মিলিয়ে তার বর্তমান স্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ২ কোটি ১৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে মোতাহার হোসেন নগদ ৩২ লাখ ৬ হাজার ৬৫৯, গাড়ির মূল্য হিসেবে ৬৫ লাখ ৮০ হাজার, ৪০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার, ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ৪৫ হাজার টাকার আসবাব দেখিয়েছেন। হলফনামা অনুযায়ী মোতাহার হোসেনের বর্তমান অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য নগদ টাকাসহ ১ কোটি ৭০ হাজার ৯৫৯ টাকা। একই হলফনামায় তিনি স্থাবর সম্পদ হিসেবে ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ৬ দশমিক ২১ একর কৃষিজমি, ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা মূল্যের শূন্য দশমিক ৫৪ একর অকৃষি জমি, ১ কোটি ৪ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন অবকাঠামো/স্থাপনা (দালান, আবাসিক/বাণিজ্যিক) এবং ২০ লাখ টাকা মূল্যের রাজউক প্লটের উল্লেখ করেছেন। সব মিলিয়ে তার বর্তমান স্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা। সে হিসেবে মোতাহার হোসেনের সম্পদ ও আয় দুটোই বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
এসআই