ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সৈয়দপুরে বাংলার পাশাপাশি উর্দুতেও চলছে মাইকে প্রচারণা

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
সৈয়দপুরে বাংলার পাশাপাশি উর্দুতেও চলছে মাইকে প্রচারণা

নীলফামারী: নীলফামারী-৪ আসনে (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা চলছে।  

প্রার্থীরা পথসভা, উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন।

এ আসনের সৈয়দপুরে রয়েছে অবাঙালি (বিহারি) ভোটার। ফলে সৈয়দপুর শহরে বাংলার পাশাপাশি উর্দুতেও মাইকিং করে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। পথসভা উঠান বৈঠকও হচ্ছে বাংলা আর উর্দু ভাষায়।  

এ আসনে মোট প্রার্থী সাতজন। তবে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ত্রিমুখী। এমন মন্তব্য ভোটারদের। দলীয় সিদ্ধান্তে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বাবুল তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান। সেই সঙ্গে এ আসনে রয়েছেন দুজন শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা হচ্ছেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা পরিষদের পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন (তার প্রতীক ট্রাক) ও জাতীয় পার্টির নীলফামারী জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি সিদ্দিকুল আলম (তার প্রতীক কাঁচি)।

নীলফামারী-৪ নির্বাচনী এলাকার সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের চৌমহনীতে একটি চায়ের দোকানে কথা হচ্ছিল নতুন প্রজন্মের ভোটার আবুজার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমানকে আমরা দেখি নাই। শুনেছি, তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম এরশাদের ভাগনে। তিনি চাইলে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করতে পারতেন। তা করলে তাকে আর ভোট চাইতে হতো না। তিনি এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে পারবেন বলে মনে হয় না।

সৈয়দপুর শহরটি হচ্ছে অবাঙালি (বিহারি) অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার ৬০ হাজার ভোটারের মুখের ভাষা উর্দু। তাদের ভোট নির্বাচনে নিয়ামক হয়ে ওঠে। তাই তাদের তুষ্ট করতে শহরময় নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হচ্ছে বাংলার পাশাপাশি উর্দুতেও। মাইকে বলা হচ্ছিল, ‘সিদ্দিক ভাই আচ্ছা আদমি, উনকা মার্কা হ্যায় কাঁচি। কাঁচিমে ভোট দেকার কামিয়াব বানাইয়ে। ’ অর্থাৎ সিদ্দিক ভাই ভালো মানুষ, তার মার্কা হলো কাঁচি। কাঁচিতে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন।

অপরদিকে প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোখছেদুল মোমিন। তিনি ভাইজান নামে এলাকায় সর্বাধিক পরিচিত। উর্দুতে মাইকে বলা হচ্ছিল, ‘ভাইজান কা মার্কা, ট্রাক মার্কা, ট্রাক মার্কা হামারা মার্কা। ট্রাক মে সিল মারো। ’ অর্থাৎ ভাইজানের মার্কা ট্রাক মার্কা। ট্রাক মার্কা আমাদের মার্কা। ট্রাক মার্কায় সিল মারুন।  

সৈয়দপুর উর্দুভাষী ক্যাম্প উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মাজিদ ইকবাল বলেন, এ শহরে বিহারিদের ২২টি ক্যাম্প রয়েছে। নতুন প্রজন্মের ক্যাম্পবাসীরা এখন সবাই পড়াশোনা করছেন। অনেকে বড় বড় পদেও চাকরি করছেন। তারা সাবলীল বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পারেন। আমরা সবাই বাংলা বুঝি। তবে সংবিধানে সব ভাষার মর্যাদা সংরক্ষণ করা হয়েছে। উর্দুতে প্রচারণা দোষের কিছু নয়। ভালোই লাগছে মাতৃভাষায় প্রচারণা শুনতে।

উর্দুতে প্রচারণা প্রসঙ্গে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা, আমরা সেটি দেখছি। অন্য ভাষায় প্রচারণায় কোনো বাধা নেই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।