পাবনা: পাবনা-৩ আসনে (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর) নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় নয় শিক্ষককে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। তাদের অনেকেই নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা-৩ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রধান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক তাজউল ইসলাম শোকজ নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিন সকালে প্রত্যেককে পৃথকভাবে পাঠানো শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, আপনি (আপনারা) শিক্ষক হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত এমপি প্রার্থী মকবুল হোসেনের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান এজেন্ট মো. আব্দুল ওয়াহিদ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে লিখিত অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতে সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োজিত একজন শিক্ষক হিসেবে আপনার (আপনাদের) নৌকা প্রতীকের পক্ষে সরাসরি প্রচারণা চালানোর সত্যতা পাওয়া গেছে। যা একটি নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম। যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ১৪(২) এর লঙ্ঘন। এজন্য আপনার (আপনাদের) বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা আগামী ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১১টার মধ্যে নিজে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে কমিটির কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে।
শোকজ নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- ভাঙ্গুড়ার মাদারবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন, সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হাসানুজ্জামান স্বপন, খানমরিচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল সোবাহান, চকদিগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান, সুলতানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম, পুকুরপাড় আইডিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান, একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আলী এবং মন্ডতোষ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফারুক আহম্মেদ।
এ বিষয়ে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার সমর্থকরা একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই চলেছে। তারা বিভিন্ন সময় আমার লোকজনকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, মারধর করছে। আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন প্রশাসনের অনেকেই। এর মধ্যে শিক্ষকরাও রয়েছেন, যারা ভোটের দিন বিভিন্নভাবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। এমন চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বার বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মকবুল হোসেনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্তদের একজন ও নির্বাচনে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পাওয়া পুকুড়পাড় আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আলী বলেন, আমি এমন কোনো চিঠি এখনো পাইনি। কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে অভিযোগ দিতে পারেন। এসব অভিযোগ মিথ্যা, সঠিক না। নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছি, কিন্তু কেন্দ্র এখনো বন্টন করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩
এসআই