ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

প্রয়োজন অনুযায়ী নিজ এলাকায় বাস্তবসম্মত উন্নয়ন চান ভোটাররা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩
প্রয়োজন অনুযায়ী নিজ এলাকায় বাস্তবসম্মত উন্নয়ন চান ভোটাররা

বরিশাল: বিভাগের সবগুলো আসনে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোট বাগিয়ে আনতে যে যার মতো করে প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরছেন ভোটারদের সামনে।

প্রতিশ্রুতিগুলোয় ‍গুরুত্ব পাচ্ছে সংসদীয় এলাকার উন্নয়নের বিষয়টি।

ভোটাররা বলছেন, প্রতিশ্রুতি নয় প্রয়োজন অনুযায়ী এলাকায় বাস্তবসম্মত উন্নয়ন করতে হবে। আর নির্বাচিত হওয়ার পর ঢাকায় নয়, এলাকায় থেকে সুখে দুঃখে জনগণের পাশে থাকতে হবে এমন প্রার্থীকে ভোট দিতে চান তারা।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভোটার সাইফুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে যতো উন্নয়ন হয়েছে, তা গত ১৫ বছরেই হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরে। কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের দেওয়া বরাদ্দে আমাদের এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে বাকেরগঞ্জের আভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। সেতুর অভাব এবং সেতু নির্মাণের ধীরগতিতে ভোগান্তি বাড়ছে এ অঞ্চলের মানুষের। ১৫ বছর আগে এখানে যেভাবে শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল, এখনও বলতে গেলে সেভাবেই আছে। নতুন প্রতিষ্ঠান বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি।   আবার স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে বেকারত্ব কমানোর উদ্যোগ কেউ নেয়নি, আমরা চাই এলাকার যুগোপযোগী উন্নয়ন।

এতদিন বরিশাল-৬ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য না থাকায় এলাকার চাহিদা মতো উন্নয়ন হয়নি বলে দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল হাফিজ মল্লিক। তিনি বলেন, মানুষের প্রয়োজন বুঝে উন্নয়ন করা উচিত। আমি বিজয়ী হলে সেটাই করবো, সেইসাথে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে তরুণদের। যদিও এ আসনের বর্তমান সাংসদ ও লাঙল প্রতীকের প্রার্থী নাসরিন জাহান রতনার দাবি তার আমলেই বাকেরগঞ্জে সর্বোচ্চ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে।

একই কথা বলেন সদ্য অব্যাহতি নেওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও সংসদ নির্বাচনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শামসুল আলম। তিনি বলেন, এলাকার যে উন্নয়ন প্রয়োজন ছিল তা গত কয়েকবছর উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে করেছি। এখন পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দর কেন্দ্রিক সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাকেরগঞ্জে শিল্প কারখানা স্থাপন ও বাকেরগঞ্জ কেন্দ্রীক ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ীক পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। যাতে তারা এখানে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে আমাদের ও আশপাশের এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়।

আর শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার মাধ্যমে যুব সমাজের কর্মসংস্থানের দিকে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন বরিশালের হাব খ্যাত সদর আসনের ট্রাক প্রতীকের মো. সালাহউদ্দিন রিপন।

মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা কামরুল বলেন, গোটা বরিশালই নদী বেষ্টিত। সেই নদী বেষ্টিত বরিশালের তিনটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবে মাত্র একটি সেতু। কিন্তু মীরগঞ্জ খেয়াঘাট সংলগ্ন সেই নদীতে সবাই মুখে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও আজ পর্যন্ত কিছুই দৃশ্যমান নয়। আবার বাবুগঞ্জ-মুলাদী উপজেলার আভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট, আয়রন ব্রিজ-কালভার্টের অবস্থাও বেহাল। এই অবস্থার উন্নতি বিগত দিনের সংসদ সদস্যরা পারেননি, তাই আমার মতে নতুনদের মাঝে যে পারবে তাকে ভোট দেওয়া উচিত।

হিজলার বাসিন্দারা বলছেন, হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা সবথেকে বেশি নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। আর নদী ভাঙ্গনের কারণে বিগত বছরে সরকারের উন্নয়নের অনেক কিছুই বিলীন হয়ে গেছে। তাই ভাঙ্গন রোধে যে কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতে করবেন, তার পাশেই থাকবেন তারা। যদিও বরিশাল-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় সেখানে পঙ্কজ নাথের সাথে তেমন কোনো  শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই ভোটের মাঠে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদের এই সদস্য আসন্ন নির্বাচনে ভোট চাইতে গিয়ে সংসদীয় এলাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন।

বরিশাল-২ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতিকুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে যতো উন্নয়ন হয়েছে তা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পদ্মাসেতু, পায়রা বন্দরসহ নানান উন্নয়ন এ সরকারের আমলেই হয়েছে। তবে কি কারণে যেন গত ৫ বছরে নদীবেষ্টিত বাবুগঞ্জ-মুলাদী উপজেলার এই আসনের গ্রামীণ জনপদগুলোয় অবকাঠামোগত তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। নদী ভাঙ্গন আর গ্রামীণ জনপদের ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট নিয়ে এখনও বিপাকে সাধারণ মানুষ।

তিনি বলেন, এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আমি নির্বাচিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করবো। এ অঞ্চলে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আর ব্যবসা কিংবা শিল্প কারখানার উন্নয়ন মানেই স্থানীয় যুব সমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ, যার মধ্য দিয়ে আমার জেলে ও কৃষক ভাইদের সন্তানদের কর্মসংস্থান নিজ এলাকাতেই হবে। আর প্রয়োজন অনুযায়ী শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে কৃষি পণ্যসহ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের সঠিক মূল্যও পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ডি‌সেম্বর ৩০, ২০২৩
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।