পটুয়াখালী: পৌরসভা নির্বাচনে পলিথিন মোড়ানো পোস্টার ব্যবহারে স্থানীয় নির্বাচন অফিস ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জিরো টলারেন্স নীতিতে থাকলেও আইন বিধি উপেক্ষা করে, নিজের অর্থ ও ক্ষমতার দাম্ভিকতার প্রমাণ দিতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচে পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিন যুক্ত পোস্টার সাঁটিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন মেয়র প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ (জগ প্রতীক)।
অন্যান্য প্রার্থীরা পলিথিন ব্যবহার না করলেও মেয়র মহিউদ্দিন সেটি করছেন।
শুরু থেকে এই মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে একাধিক বার ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থে দাম্ভিকতা প্রদর্শন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বক্তব্য প্রদাবসহ নির্বাচনী আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রচার প্রচারণায় নানা ধরনের বিধি নিষেধ থাকলেও তা মানছেন না তিনি।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র-২ এর ২১ নম্বর ক্রমিকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক প্রচার প্রচালনা পরিচালনায় এবং নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার ব্যবহারে প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো বা পোস্টার প্লাস্টিক পলিথিন লেমিনেটিং করে ব্যবহার না করাসহ ইতিপূর্বে নির্দেশনা দিতে হবে’। এই ধারা উল্লেখ করে প্রতীক বরাদ্দের দিন জেলা নির্বাচন অফিসার পলিথিন মোড়ানো পোস্টার না লাগাতে নির্দেশনা দেন ’।
কিন্তু ইসির নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে মেয়র প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ পলিথিন মোড়ানো পোস্টার সাঁটিয়েছে গোটা শহরে। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি অন্যান্য সব প্রার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কারণ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত পর্যন্ত অন্যান্য প্রার্থীদের পলিথিন ছাড়া টানানো পোস্টার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর কুয়াশায় নষ্ট হয়েছে কয়েকবার।
অথচ জেলা শহরের পৌরসভা মোড়, সিঙ্গারা পয়েন্ট, কলেজ রোড, জুবিলী স্কুল সড়কসহ বেশকিছু সড়কে জগ মার্কার মেয়র প্রার্থী মহিউদ্দিনের টানানো পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
মেয়র প্রার্থী ডা. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে পোস্টার লাগানো হলেও বিকেলে হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেই পোস্টার নষ্ট হয়ে যায়। তাই পরদিন সকালে আবার পোস্টার লাগাই, তবুও ইসির আইন মেনে পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করিনি। কিন্তু কেন শুধুমাত্র একজন প্রার্থী তার পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করবে? এগুলো কি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেখেন না? আমার মতে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি দেখার।
পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মো. জাহিদ হোসেন জানান, প্রতীক বরাদ্দের দিন জেলা নির্বাচন অফিস থেকে আমাদের বলা হয়েছে পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করা যাবে না। পোস্টারে পলিথিন লাগানো আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ। যে কারণে আমরা পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করিনি।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. খলিলুর রহমান জানান, নির্বাচন অফিসের নিষেধাজ্ঞা থাকায় পোস্টারে পলিথিন লাগাইনি। দেয়ালে পোস্টার, আঠা পলিথিন লাগানো সম্পূর্ণ নিষেধ।
এ বিষয়ে জগ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ওগুলো ভুলে লাগানো হয়েছে। যারা লাগিয়েছেন, তারা ভুল করেছেন। আমি তাদের সরিয়ে ফেলতে বলেছি।
রিটার্নিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার খান আবি শাহানুর খান বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী তাদের পোস্টারে পলিথিন ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি কেউ পলিথিন ব্যবহার করে থাকেন, তবে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
এসআরএস