লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নানা অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এলাকায় বহিরাগতদের মোটরসাইকেল মহড়া, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীদের হুমকি, এজেন্টদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ আনেন তারা।
এছাড়া ওই প্রার্থী নিজেদের পছন্দের লোককে ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলেও জানান তিন প্রার্থী।
আগামী ২৮ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার, দক্ষিণ হামছাদী, তেওয়ারীগঞ্জ, বাঙ্গাখাঁ ও লাহারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের নিয়ে সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে সোমবার দুপুরে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ শোনেন তারা।
অনুষ্ঠানে দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান মাস্টার, মো. খসরু নোমান রতন বক্তব্য দেন। এসময় তারা ওই ইউনিয়নের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী ও তার ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেলের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন।
যদিও অটোরিকশা প্রতীকের প্রার্থী নুর নবী চৌধুরী সভায় কোনো বক্তব্য দেননি।
চশমা প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, নুর নবী ও তার ছেলে সোহেলের লোকজন তার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এজেন্ট হলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, তার ইউনিয়নের ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর কেন্দ্র খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় ২০ হাজার ভোটার এখানে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নুর নবী প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগে তার পছন্দের লোকজনের নাম দিয়ে আসছেন। তাই ওইসব লোকজন যাতে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব না পায় এ বিষয়ে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
আনারস প্রতীকের প্রার্থী নুরুজ্জামান মাস্টার বলেন, অটোরিকশা প্রতীকের পক্ষে বহিরাগত লোকজন এলাকায় গভীর রাতে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এজেন্ট ঠিক করলে তাদের গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। ফলে তারা এজেন্ট হতে অপারগতা জানাচ্ছে।
ঘোড়া প্রতীকের মো. খসরু নোমান রতন বলেন, আমাদের ইউনিয়ন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমার নেতাকর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই আমি প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি চাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে প্রার্থী নুর নবী চৌধুরীর ছেলে চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেলের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অনুষ্ঠানে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সফিকুর রহমান বলেন, কারো পছন্দের লোককে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করা হবে।
মতবিনিময় সভা শেষে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্বাচনে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা থাকবে। ভোটের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
আরএ