বরিশাল: বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমরা একটা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছি। সেখান থেকে ফেরার কোনো সুযোগ নেই।
আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে জেলার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোট পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেছেন তিনি।
রোববার (২৬ মে) সকালে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মো. শওকত আলী বলেন, যত বড় ক্ষমতাশালী হোক না কেন, কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবেন না। জাল ভোটের তো প্রশ্নই ওঠে না। যদি একটি জাল ভোটও পরে সঙ্গে সঙ্গে সেই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আবার পুনঃনির্বাচন হবে। হুমকি-ধামকি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো লাভ হবে না। নির্বাচনের দিনেও কিন্তু প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার নজির রয়েছে। কোনো প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা যদি এমন কিছু করেন, তাহলে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলে সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নিকট অতীতের দিকে তাকান, দূর অতীতের দিকে তাকাবেন না। আপনাদের কিন্তু শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে। এর কোনো রকম ব্যত্যয় ঘটাবেন না। অন্যকোনো চিন্তা ভাবনা যদি কেউ মাথায় ঢুকিয়ে থাকেন সেটি মাথা থেকে সরিয়ে ফেলুন। কোনো প্রলোভন কিংবা ক্ষমতার কাছে আপনারা নতি স্বীকার হবেন না। কেউ অনিয়ম করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধৃত হলে তার চাকরি জীবন কিন্তু হুমকির মধ্যে পরে যাবে।
গৌরনদী উপজেলার শহিদ সুকান্ত বাবু সেরনিয়াবাত হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. জামিল হাসান বলেন, যদি কেউ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঘটাতে চান, তাহলে তাকে অনেক বড় খেসারত দিতে হবে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনের ধারাবাহিকতা থেকে এক ইঞ্চিও নিচে নামার কোনো সুযোগ নেই।
প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ভোটারদের ভোটকেন্দ্র অভয় দিয়ে নিয়ে আসবেন। ভোটারদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমরা নিলাম। নির্বাচনে নিরাপত্তা দানকারী ফোর্সের সংখ্যা বিপুল পরিমাণ থাকবে। কেউ বিশৃঙ্খলা করলেই তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গির, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের দোয়াত-কলম মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ব্যবহার করে দুটি উপজেলাতে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে যত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা শুধু সংসদ সদস্যকে ব্যবহার করতে পারার সুযোগের কারণে। বলা হচ্ছে, এটি দলীয় নমিনেশন, এটি একটি দলীয় ব্যবস্থা। সংসদ সদস্য তার নিজ বাড়িতে আসার পর বলা হচ্ছে-তার প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতেই তিনি বাড়িতে এসেছেন। এগুলো প্রচার করে মানুষকে একটি ভীতির স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গৌরনদী উপজেলা পরিষদের কাপ-পিরিচ মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন মিয়া ও আনারস মার্কার সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল মার্কার প্রার্থী হারিছুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, মামলার আসামিদের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোসহ বিস্তার অভিযোগ প্রশাসনের সামনে তুলে ধরেন।
এসময় আগৈলঝাড়া উপজেলার আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, গৌরনদীর প্রার্থী হারিছুর রহমানসহ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ভোটদানকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৪
এমএস/এসএএইচ