বরিশাল: ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে স্থগিত হওয়া বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্য দিয়ে রোববার (৯ জুন) সকাল ৮টায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এ দুই উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকেই কেন্দ্রে নারী ভোটারদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে, পক্ষান্তরে পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের মতো পুরুষ ভোটারের উপস্থিতিও বাড়বে বলে মনে করছেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা।
গৌরনদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা তানিয়া বলেন, এর আগে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনগুলোতে বরিশালের কোথাও কোনো ঝামেলা হতে শুনিনি, তাই ভোট দিতে এলাম। সবাই মিলে ভোট দিয়ে যদি যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে পারি তাহলে আমাদের যেমন ভালো হবে, তেমনি তাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়নও করা যাবে।
মরিয়ম বেগম নামে আরেক ভোটার বলেন, যারা প্রার্থী হইছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের। হ্যার পরও প্রার্থী বেশি হওয়ায় বাইচ্ছা ভোট দিতে পারতাছি, এইডাই বড় কথা।
এদিকে সুষ্ঠুভাবে তাড়াতাড়ি ভোট দিতে পেরে খুশি আগৈলঝাড়ার ভোটাররা।
এ উপজেলা সদরের বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব আছিয়া বেগম বলেন, সকাল সকাল ভোট দিতে যাইয়া দেহি মহিলা মানষের (নারী) লাইনে অনেক দাঁড়াইয়া আছে, আর পুরুষগো লাইন একেবারে খালি। তয় সময় লাগে নায় ভোট দিতে, আর এবার কেউ বলেও নায় ভোট দেওয়া লাগবে না। সব প্রার্থীর লোকজন বাড়িতে আইয়া ভোট চাইছে, তাই ভোটটা দিয়া গেলাম।
ভিড় না থাকায় কয়েক মিনিটের মধ্যে ভোট দিয়ে আসা মজিবর রহমান বলেন, কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে পুলিশ-আনসারে ভরা, তার ওপর র্যাব-বিজিবি টহল দেয়। কেন্দ্রের সামনে জটলা দেখলেই বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে ফাঁকা করে দেয়। এরকম অবস্থায় ভোটার স্লিপ হাতে নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে আধ মিনিটের মধ্যেই মনে হয় ভোট দিছি। ভোট কক্ষের ভেতরেও এজেন্ট বেশি থাকায় কেউ কোন চাপও দিতে পারেনি। এরকম ভোটের খেলায় কে জিতবে সেটা বলা আবারও কঠিন হয়ে গেল। কারণ এখন তো ভোট দেখাইয়া দেওয়া লাগে নাই, আর কেউ দিয়াও দেয় না।
এদিকে নির্বাচনে গৌরনদীর সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইমরান মিয়া তার অনুসারীদের নিয়ে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালালে পুলিশ তা পণ্ড করে দেয়। পাশাপাশি গৌরনদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী ও তার ভাই নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে তাও প্রশমন করা হয়।
বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বরিশাল জেলার সব নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে। এখন যে দুটি উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ উৎসবমুখর পরিবেশেই শেষ হবে।
জানা গেছে, গৌরনদীতে চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং আগৈলঝাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৪
এমএস/এইচএ/