ঢাকা, বুধবার, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ শাবান ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায় বাম গণতান্ত্রিক জোট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায় বাম গণতান্ত্রিক জোট

ঢাকা: ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একইসঙ্গে তারা দল নিবন্ধনের শর্ত শিথিল করার দাবি জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জোটের নেতারা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আপনারা দেখছেন, আমরাও দেখছি, প্রথমে সংস্কার না নির্বাচন— এই কথা বহুদিন চলল। সংস্কার ও নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে। দুই নম্বর হলো, এখন আবার নিয়ে আসা হচ্ছে লোকাল গভর্নমেন্ট না ন্যাশনাল ইলেকশন। আমরা মনে করি, এই কাউন্টার প্রসেসের মধ্য দিয়ে সরকার নির্বাচন নিয়ে ডিলে (বিলম্ব) করছে। এই ডিলে জাতির জন্য আত্মঘাতী হবে।

তিনি বলেন, এই সরকার যত কালক্ষেপণ করবে, ততই দেশে নানা জটিলতা বাড়বে। সেজন্যই আমরা বাম জোট মনে করি যে জাতীয় নির্বাচনটা আগে হওয়া দরকার। এ কারণেই মনে করি, একটা সেটেলড গভর্নমেন্ট ছাড়া একটা যে ভয়ের রাজনীতি দেশে চলছে, যে দমবন্ধ অবস্থা দেশে চলছে, সেই দমবন্ধ অবস্থা থেকে দেশের কোনো মানুষ মুক্ত হবে না। সেজন্যই একটি রেগুলার গভর্নমেন্ট এসেনশিয়াল ফর নেশন। আমার দেশ, জাতিকে বাঁচানোর জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত হয়েছি, এই নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। সুতরাং আমাদের প্রধান বক্তব্য, সরকার আর কালক্ষেপণ না করে কোন নির্বাচন আগে পিছে— এই বিতর্ক না করে দ্রুততম সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলবে। সেই কথা আমরা এখানে পুনর্ব্যক্ত করেছি এবং করছি।  

তিনি বলেন, আমাদের দ্বিতীয় বক্তব্য হলো, বর্তমান সরকার কদিন আগে বলল, তাদের প্রথম ইনিংস তারা নাকি শেষ করেছে, ছয় মাসে এক ইনিংস। এই ইনিংসে আমরা দেখি যে মানুষের জীবনে তারা স্বস্তি দিতে পারেনি, মানুষকে মর্যাদা দিতে পারেনি। এমনকি ভয়ের যে অবস্থা তা থেকেও মুক্ত করতে পারেনি। সেজন্য আমরা আশা করব, দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করে তারা নির্বাচন সুসম্পন্ন করবে।  

তিনি আরও বলেন, তৃতীয় ইনিংসের শুরুতেই যেন একটা নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে এই নির্বাচন কমিশন এবং আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি, সেই কাজটাই তারা করবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি। আমরা কোনো অজুহাতে আর কালক্ষেপণ দেখতে চাই না। দ্রুততম সময়ে আমরা নির্বাচন তারিখ ঘোষণা চাই।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এই নেতা বলেন, আমরা প্রত্যাশা করব, এই নির্বাচন কমিশন, তাদের অধীনেই দেশে একটা সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। কমিশন বলেছে, এই সরকার আপনাদের, আমরা আপনাদের। তাই আপনারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা—ই করব। তবে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, আমরা এই বছরের মধ্যে নির্বাচন চাই এবং স্থানীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন চাই।

এর আগে বৈঠকে কমিশনের কাছে বাম গণতান্ত্রিক জোট লিখিত সাতটি দাবি জানায়। দাবির মধ্যে রয়েছে— নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ দেওয়া, কালো টাকা, পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত করা, নির্বাচনী জামানত পাঁচ হাজার টাকা করা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক শতাংশ ভোটারের সই নেওয়ার বিধান বাতিল করা।

নিবন্ধন প্রথা তুলে দেওয়া কিংবা নিবন্ধন শর্ত সহজ করা; ভোটদানে বাধা দেওয়া আইন করে বন্ধ করা, না ভোট ও প্রার্থী প্রত্যাহারের বিধান আনা; মনোনয়নপত্র জনগণের সামনে বাছাই ও প্রার্থীকে দলীয় ইশতেহার জনগণের সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা; অভিযোগ নয় বরং আচরণবিধি ভঙ্গ হলে স্বপ্রণোদিতভাবে কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার প্রচলন; নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্বচ্ছতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করা।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
ইইউডি/আরএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।