ঢাকা: আমলারা নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা দিতে না পারায় সীমিত পরিসরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে পারে বলে মনে করে গণ অধিকার পরিষদ। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলাকে এগিয়ে রাখছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক শেষে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তবে ছোট পরিসরে স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হতে পারে। কেননা, জন্ম নিবন্ধনের মতো সেবা মানুষ পাচ্ছে না। একজন আমলা আর কতটুকু করতে পারে। অন্তত সিটি করপোরেশ, পৌরসভা বা উপজেলাগুলোর নির্বাচন হতে পারে।
নুর বলেন, বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দুটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। সংকটকালীন তারা দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের পারফরমেন্সের ওপরে জাতির আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে। এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তুতি কেমন, কি কাজ করছে-বিশেষ করে অনেক দিন ধরেই প্রবাসীরা ভোট দেওয়ার অধিকার চাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টার তার ভাষণে বলেছেন। তাই তাদের ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করতে কমিশন কি কাজ করছে, এটা আদৌ সম্ভব কিনা এয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সেই আলোচনা হয়েছে। কমিশন বলেছে তারা চেষ্টা করছে।
নুরুল হক নুর আরও বলেন, নির্বাচনের জন্য একটা দক্ষ প্রশাসন দরকার। গত ১৬ বছরের যে প্রশাসন কারচুপির নির্বাচন করেছে, তাদের দ্বারা কী করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আগে বলতো আওয়ামী চেতনার উদ্বুদ্ধ। এখন কেউ বলছে গণ অধিকার পরিষদের লোক, কেউ বলে বিএনপির লোক, কেউ বলে জামায়াতের লোক। আবার কেউ বলে আমরা ছাত্রদের প্রতিনিধি। কাজেই এখনকার প্রশাসনের মধ্যেও যদি এই রাজনৈতিক মনোভাব থাকে, তাহলে তো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। তাই পরিষ্কারভাবে আমরা বলেছি যে, নির্বাচনে যে দায়িত্ব পালন করবেন-রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা, তারা যেন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকে; সেটা যেন কমিশন আগেভাগেই নিশ্চিত করেন।
বিতর্কিত নির্বাচনে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যে ব্যবস্থা নেবে, তা রাষ্ট্র নেবে। তাদের অনেকে বহাল তবিয়তে আছে। অনেককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। অনেক কিন্তু তলে তলে সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। কাজেই সে থাকে কে থাকে তারা তো বুঝবে না। কিন্তু আমার পরিষ্কারভাবে বলেছি তারা যেন নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকে।
তিনি আরও বলেন, দলগুলোর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে কিংবা রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই আলোচনা চলছে, স্থানীয় নির্বাচনগুলো আগে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেহেতু স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তারা কারও নির্দেশনায় নির্বাচন করবেন না। তবে তারা যেহেতু সংকটকালীন দায়িত্ব নিয়েছে, একটা অর্থবহ নির্বাচনের জন্য সেখানে রাজনৈতিক ঐক্যমত্য জরুরি। প্রধান উপদেষ্টা যে একটা সম্ভাব্য ডেট দিয়েছেন, সেটাকে সামনে রেখেই তারা একটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঐক্যমত্য যদি স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয় তাহলে তারা বিবেচনা করবেন। যদি ঐক্যমত্য না হয়, তারা তো তা করতে পারবেন না।
সম্প্রতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে স্থানীয় নির্বাচন আগে করার দাবী জানিয়েছে। অন্যদিক বিএনপি চাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন আগে হোক।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
ইইউডি/এমজে