ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৫ রমজান ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

এনআইডি স্থানান্তর: সরকার-ইসি কমিউনিকেশন গ্যাপ রয়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৫
এনআইডি স্থানান্তর: সরকার-ইসি কমিউনিকেশন গ্যাপ রয়েছে

ঢাকা: বারবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম সরকারের অধীন করার প্রক্রিয়া নেওয়ার বিষয়টির পেছনে ‘কমিউনিকেশন গ্যাপ’ রয়েছে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমাদের লিখিত মতামত পাওয়ার পর নিশ্চয় গ্যাপ থাকবে না আশা করি।

বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) ইসি কর্মকর্তাদের আন্দোলনে যাওয়ার আল্টিমেটামের পর সিইসি এসব কথা বলেন।

এনআইডি চলে গেলে ভোটার তালিকায় সমস্যা হবে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, হবে। এনআইডিটা ভোটার তালিকার বাই প্রোডাক্ট। এটা তো আগে ছিল না। আগে ভোটার কার্ড ছিল। আস্তে আস্তে যখন ডেভেলপ হলো তখন না এটা হলো৷ ১৭ বছর ধরে এখানে শ্রম, ঘাম দিয়েছে এখানকার লোকজন। এরাই তো ডেভেলপ করে এই পর্যন্ত এনেছেন। নিজেদের কাজের অতিরিক্ত কাজ হিসেবে এটা করেছেন। এটা তো একটা নেটওয়ার্ক সারাদেশে ডেভেলপ হয়েছে, এক্সপার্ট ডেভেলপ হয়েছে।

সিইসি বলেন, সার্বিক এই বিষয়গুলো নিশ্চয় সরকার বিবেচনায় নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কমিউনিকেশনের একটা গ্যাপ থাকতে পারে হয়তো। আমাদের লিখিত মতামত পাওয়ার পর নিশ্চয় গ্যাপ থাকবে না। সরকার তো অনেক ওপরের ব্যাপার। আমরা সাংবিধানিক বডি। আইন যদি সরকার পরিবর্তন করে ফেলে আমাদের আইন মানতে হয়। কিন্তু আইন বানানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা আমাদের মতামত জোরালোভাবে তুলে ধরবো। যেখানে যেখানে মতামত দেওয়ার দরকার, দেব। আমাদের পুরো কমিশন এটা চায়।

সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ না নিলে কর্মবিরতিতে যাবেন কর্মকর্তারা, তাদের কী বলবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, আমি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণকারী নই এটা বুঝতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিত্ব করি। আমি ইসির পক্ষে কথা বলতে পারি, ইসির পক্ষে সরকারের কাছে অবস্থান তৈরি করতে পারি। এই টুকু আমি জোরালোভাবেই করবো।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে নেওয়া সরকারি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে আমি শুনিনি। আলাপ আলোচনা হয়েছে৷ কীভাবে হতে পারে সে আলোচনা হয়েছে। আমরা লিখিত ভাবে সরকারকে জানাবো যে এটা ইসির অধীনে থাকা উচিত। জরুরি ভিত্তিতে জানাবো সরকারকে। আমরা জানলাম যখন আমাদের মিটিংয়ে ডাকা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তো জানি না, এখন কীভাবে বলবো।

উপদেষ্টা পরিষদে সিদ্ধান্ত হয়েছে এটা থাকবে না, কোনো দুরভিসন্ধি আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো দুরভিসন্ধি আছে কিনা, আমি জানি না৷ সরকার হয়তো মনে করছে একটা জায়গা থেকে সার্ভিসটা দেবে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সেটা হবে এমনটা শুনেছিলাম আমি।

জন্মনিবন্ধন ও এনআইডি সেবা একই ছাদের নিচে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার একটি পৃথক কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের মতামত নিচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ইতোমধ্যে ইসি সচিবও সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগের পর ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার এজন্য সিইসির কাছে তারা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায়।

এর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন করতে আইন করেছিল। যদিও সেই সেই আইনটি বাতিল বাতিল করে পৃথক কমিশন করতে চাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৫
ইইউডি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।