ঢাকা: অতীতের পথে না হেঁটে বরং ভালো গণতান্ত্রিক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য প্রক্সি ভোটিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসীদেরও ভোট দেওয়ার ব্যস্থা আনতে চায় সংস্থাটি।
সোমবার (১৭ মার্চ) নির্বাচন ভবনে ওআইসি মিশনভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
প্রক্সি ভোটের বিকল্প নেই
প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে আমরা কোনো ব্যবস্থাকেই প্রাইয়োরিটি দেননি বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল। তিনি বলেন, তিনটি মেথড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পোস্টাল ব্যালট অকার্যকর। কারণ আমাদের কাছে যে সময় থাকে এতে প্রবাসীরে কাছে ব্যালট পাঠিয়ে ভোট ফল আনা সম্ভব নয়। দ্বিতীয় পদ্ধতির ক্ষেত্রে আমরা অনলাইনের কথা বলেছি। আজকের বৈঠকেও আমরা সহায়তার জন্য বলেছি। ইজিপ্ট বলেছে তাদের অভজ্ঞিতা ভালো। পাকিস্তান বলেছে, তাদের প্রাথমিক অভিজ্ঞতা ভালো। তবে ফুল ফেইজে যাওয়ার মতো অবস্থা দাঁড়ায়নি। প্রক্সি ভোট ফরেন কিছু না। ভারতে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আছে। ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডে কিছু আছে। আমাদের তো পাওয়া অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে জমিজমা ম্যানেজ করা হয়। এছাড়া মন্দের ভালো একটা ব্যবস্থা বের করতে হবে।
সত্যিকার অর্থেই যদি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই, তাহলে কোনো না কোনো একটা অপশন আমাদের নিতে হবে। একটা কম্বিনেশন বের করতে হবে। আর বড় স্কেলে যদি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চাই তাহলে প্রক্সি ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা আছে বলে মনে হয় না। বাকি যে দু’টো আছে পাইলটিং হয়তো করা যাবে, কিন্তু বড় স্কেলে যাওয়া যাবে না। তারপরও আমি বলি এটা এখন বলা প্রিম্যাচুউর হবে। আগামী ৮ এপ্রিল তারিখ একটা কর্মশালা করবো। সেখানে এক্সপার্টরা থাকবেন। আমরা দেখবো কী ধরনের আর্কিটেকচার করতে পারি। তারপর আমরা বলতে পারবো কত সময় লাগবে, কোনটা ভালো হবে। যে অপশনই থাক, তার তো ফ্রোজেন দিক থাকবেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এমন একটা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে যেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে ভোট দিতে প্রবাসীরা কোনো আইনগত জটিলতায় না পড়েন। আমরা প্রক্সি ভোটের কথা বলার পেছনে এটাও একটা কারণ। এতে তো আর কোথাও লাইন ধরে জমায়েত করা ভোট দিতে হয়। তিনি ফোন দিয়েই তার ক্ষমতা একজন দিতে পারেন।
ওআইসি দেশের সহায়তা চায় ইসি
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ বৈঠকে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর সহায়তা চেয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ওআইসি ভুক্ত মিশন আমাদের দেশে যারা আছে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। জাতীয় নির্বাচনী কার্ক্রমকে সামনে রেখে অগ্রগতি অবহিত করেছি। প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থায় তাদের সহায়তা চেয়েছি। কোনো মিশন প্রধান তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সহায়তার জন্য। আমরা একটা আনুষ্ঠানিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে ওআইসিভুক্ত দেশগুলো যেখানে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন পর্বেক্ষণের জন্য ইন্দোনেশিয়াসহ অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আশা করি সবাই আগ্রহ দেখবে। বৈঠকে আমাদের প্রস্তুতি, জনবল, সক্ষমতা, উন্নয়ন কার্ক্রম যা আছে সেগুলো নিয়েই সার্বিকভাবে আলোচনা হয়েছে। ক্যাপাসিটি বিল্ডিং, দক্ষতা উন্নয়ন, এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার, উনারা যেসব বিষয়ে অংশ নিতে পারে, সেসব বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা অতীতে আর হাঁটতে চাই না। সামনে এগোতে চাই। এবং আমরা ভালো গণতান্ত্রিক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে চাই।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য নির্বাচন কমিশনার ইসি সচিবসহ ওআইসিভুক্ত ১০ দেশের মিশন প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
নয় দেশ বৈঠকে আসেনি
নির্বাচন কমিশন ১৯ দেশের মিশন প্রধানকে বৈঠকে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালেও সৌদি আবরসহ নয় দেশে অংশ নেয়নি। বৈঠকে আলজেরিয়া, ব্রুনাই দারুসসালাম, ইজিপ্ট, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মরক্কো, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত মিশন অংশ নেয়। আর ফিলিস্তিন, কাতার, সৌদি আরব, তুরস্ক, আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, মালদ্বীপ এবং ওমানের কেউ উপস্থিত হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২৫
ইইউডি/জেএইচ