খুলনা: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয় অনেকটাই চূড়ান্ত। ফলে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্টি জটিলতা কেটেছে।
তবে তার আগেই ঈদুল আজহা পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনী প্রচারণায় জোরেসোরে নেমেছেন। তারা উঠান বৈঠক, আলোচনা সভা, সেমিনার এবং গণসংযোগ বাড়িয়েছেন।
খুলনায় নির্বাচনের রণ প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রধান ২টি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াত। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের ক্ষমতার পরিধি বাড়াতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে খুলনা-২ আসনে নির্বাচনের মাঠে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী ছাড়া আর কারও দেখা মিলছে না।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের রাজনীতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র খুলনার এ আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হাইকমান্ডের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছেন। আসনটিতে বিএনপির হেভিয়েট প্রার্থী রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এসব সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
খুলনা-২ আসন:
খুলনা-২ আসন সোনাডাঙ্গা ও খুলনা সদর নিয়ে গঠিত। জাতীয় সংসদের ১০০ নম্বর আসন খুলনা-২।
খুলনা জেলা নির্বাচন অফিসের চলতি বছরের মার্চ মাসের তথ্য মতে, এ আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯২১, নারী ভোটার ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৬ ও হিজড়া ভোটার ৭ জন।
খুলনা-২ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী যারা:
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মাত্র ৪ বার এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। বিগত দিনে এ আসনে বিএনপিরই প্রাধান্য ছিল বেশি। যে কারণে এ আসনেকে বিএনপির দুর্গ বলা হয়।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানান, খুলনা-২ আসনকে ভিভিআইপি আসন বলা হয়ে থাকে। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ আসন থেকে প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেছিলেন। এছাড়া সাবেক স্পিকার রাজ্জাক আলী এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অথবা ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান এবার এ আসনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের এ আসন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক এমপি আলী আসগর লবির নামও বলছেন কেউ কেউ। তবে তিনি প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন খুলনা-৫ আসনে। বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর বিএনপির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। এ আসনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল। খেলাফত মজলিসের ২ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন চঞ্চল। বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি ফয়সাল শেখ। তবে এ আসনটিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি-এনসিপি) ও জাতীয় পার্টির কোন নির্বাচনী তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা যা বলছেন:
ঘরে-বাইরে তুমুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় পর ২০২১ সালে খুলনা বিএনপি থেকে বাদ পড়লেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন শেষে তার এমন পরিণতি মানতে পারেননি বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তাদের মন্তব্য, নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও খুলনা বিএনপি একে অপরের পরিপূরক। যে কারণে তারা মঞ্জুকে খুলনা-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বিগত দিনে খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। নির্বাচনী এলাকায় সব সময় বিভিন্ন সামাজিক ও দলীয় অনুষ্ঠানে সক্রিয় রয়েছেন তিনি।
মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বাংলানিউজকে বলেন, আমি নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। আমার দল চাচ্ছে ক্লিন ইমেজের মানুষ। জনপ্রিয় মানুষ। আন্দোলন সংগ্রামে জেল- জুলুম, নির্যাতনের শিকার এমন মানুষকে মূল্যায়ন করতে। এক্ষেত্রে আমি একজন পরীক্ষিত প্রার্থী। ২০০৯ সালে নির্বাচনে সারা দেশে যে ৩০ জন বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়েছিল তার মধ্যে আমি একজন। এছাড়া মেয়র ও এমপি নির্বাচনে আমি লড়াই করেছি। ভোট ডাকাতি করে আমাকে জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোন অপশক্তির সঙ্গে আপস করিনি। শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে রাজপথে ছিলাম।
মঞ্জু বলেন, দুঃসময়ের দিনগুলোতে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, ত্যাগ ও শ্রমের কারণে আমি আশাবাদী, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।
২০০১ সালের দিকে খুলনার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আলী আসগর লবি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ওই বছর ১ অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। নির্বাচনের পর তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে সেখানে উপ-নির্বাচন করেন আলী আসগর লবি। নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন। এর কিছুদিন পরই খুলনা মহানগর বিএনপির কমিটি বাতিল করে তাকে আহ্বায়ক করা হয়।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আলী আসগর লবি খুলনার সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে তার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে। পরে এক পর্যায়ে তিনি রাজনীতি থেকে অনেকটা সরে যান। ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগর লবি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দল থেকে পদত্যাগ করেন। তবে সম্প্রতি তার অনুসারীরা বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে লবির প্রচারণা করছে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবি বাংলানিউজকে বলেন, আমি দলের একজন কর্মী। কর্মীর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। আমার দল যদি মনে করে আমি যোগ্য তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নেব, সেটা খুলনা-২ বা ৫ যেটাই হোক। তবে দলের চেয়ারম্যান আমাকে না দিয়ে যদি অন্য কাউকে দেন় আমি তার পাশে থাকবো, তার হয়ে কাজ করব।
খুলনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা। দীর্ঘ দিন তিনি রাজপথে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের সারথী হিসেবে কাজ করছেন। হয়েছেন মহানগর বিএনপির সভাপতি। আওয়ামী সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নে সাংগঠনিকভাবে দলের হাল ধরেন খুলনার এ শীর্ষ নেতা।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খুলনা মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিকভাবেই আমি শহরে বাস করি এবং শহরের প্রেসিডেন্ট, তাই নির্বাচন করলে শহরের বাইরে যেতে চাই না। সর্বোপরি দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই আমি মেনে নেব। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তিনি যদি মনে করেন যে আমাকে দিয়ে সংসদ নির্বাচন করাবেন, তাহলে আমি নির্বাচন করব। তিনি যদি মনে করেন আমার নির্বাচন করার প্রয়োজন নেই তাও আমি মেনে নেব।
খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। ছাত্রদল ও যুবদলের মহানগর সভাপতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলেনে ১০৮টি মামলার আসামি তিনি। ৫ আগস্টের পর এসব মামলার প্রায় অর্ধেক থেকে খালাস পেয়েছেন। তুহিনের অনুসারীরা খুলনা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তার প্রচারণা চালাচ্ছেন। বলতে গেলে প্রচার প্রচারণায় বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে শফিকুল আলম তুহিনের প্যানা ও বিলবোর্ড শহরে বেশি দেখা যাচ্ছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বাংলানিউজকে বলেন, আমি ৪৩ বছর ধরে রাজনীতি করি। এ শহরের অলি গলি রাস্তাঘাটসহ মানুষকে আমি চিনি। এই শহরের সব কিছুর সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক আছে। অনন্ত ৮-১০টি প্রতিষ্ঠানের আমি আজীবন সদস্য । শহরের প্রতিটি ভালো কাজের সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল। আমার জন্ম এই শহরে। লেখাপড়া করেছি এই শহরে। মারা গেলে হয়তো এই শহরে বাবা-মার পাশে কবর দেওয়া হবে। ছাত্র রাজনীতি করেছি এই শহরে। আন্দোলন সংগ্রাম বহু ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এখানে আসা।
তুহিন বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলেনে ১০৮টি মামলার আসামি আমি। অসংখ্যবার কারাগারে গেছি। হাতের কর গুণে বলতে পারবো না কতবার কারাগারে গেছি। খুলনা-২ আসনে আমি প্রার্থী। এ আসনের ১৬টি ওয়ার্ডের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর শহরের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য দিন রাত কাজ করেছি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সকল ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। খুলনার মানুষ আমাদের প্রতি আস্থাশীল।
খুলনা-২ আসনে কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইনকে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রার্থী ঘোষণা করে জামায়াত। কেসিসি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর শিবিরের সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে তার বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা করা হয়েছে। ৩ বার জেলে গেছেন। ৩২টি মামলার মধ্যে বেশ কিছু মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে দুই ধরনের কাজ করতে হয়। নমিনেশন দেওয়ার পরে এক ধরনের কাজ। তফসিল ঘোষণা করার পরে এক ধরনের কাজ। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য হলো গণসংযোগ করা। ঘোষণার পর প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে আমরা নির্বাচনী গণসংযোগ করছি। মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলা, সাংগঠনিক কার্যক্রম মজবুত করা এবং সংগঠনকে গতিশীল করছি। এজন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় সাংগঠনিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বাংলানিউজে বলেন, আমরা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই। নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি রয়েছে। তবে কেন্দ্র থেকে এখনো মাঠে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। নির্দেশ পেলেই মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বো।
নির্বাচনের মাঠে বিএনপি ও জামায়াত সরব থাকলেও এনসিবির কোনো নির্বাচনী তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
জাতীয় নাগরিক কমিটি খুলনার সংগঠক হামীম আহম্মেদ রাহাত বলেন, আসনভিত্তিক দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। এ বিষয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে আমরা জানাতে সক্ষম হব আমাদের নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে।
খুলনা-২ আসনের বিগত নির্বাচনের ফলাফল:
স্বাধীনতার পর খুলনা-২ আসনে আওয়ামী লীগ ১৯৭৩, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে জয় পেয়েছে। এরমধ্যে ১৯৭৩ সাল বাদ দিলে বাকি তিনবারই বিতর্কিত নির্বাচন।
১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের শেখ আব্দুর রহমান, ১৯৭৯ সালে বিএনপির শেখ সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মো. মহসিনন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ রাজ্জাক আলী (মৃত) বিএনপির টিকিটে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে জয়ী হওয়ার পর তাকে জাতীয় সংসদের স্পিকার করেছিলো বিএনপি সরকার। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করে বিজয়ী হন। এরপর তার ছেড়ে দেওয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মহানগর বিএনপির তৎকালীন মহানগর আহবায়ক আলী আসগর লবী।
আর ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ৯০ হাজার ৯৫০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান মিজান পেয়েছিলেন ৮৯ হাজার ২৮০ ভোট। ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ১ হাজার ৬৭০। ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান মিজান। ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বঙ্গবন্ধুর ভাতিজা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বিজয়ী হন।
এমআরএম