ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

প্রচারে এমপিদের সুযোগের বিরোধিতা করেছিলেন ইসি মাহবুব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪২ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
প্রচারে এমপিদের সুযোগের বিরোধিতা করেছিলেন ইসি মাহবুব

ঢাকা: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের (এমপি) প্রচারে যাওয়ার সুযোগ তৈরির ঘোর আপত্তি তুলেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। কিন্তু পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধোপে টেকেনি তার আপত্তি। ফলে এমপিদের প্রচারকার্যে সুযোগ দিয়ে আচরণ বিধিমালায় সংশোধনের পক্ষে অনুমোদন দেয় ইসি।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ মে) বিধিমালা সংশোধনের বৈঠকে জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেন। তারপর তিনি তার নোটটি পাঠ করেও শোনান।

 

তিনি বলেন, আমি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এমপিদের অংশগ্রহণে ভিন্নমত পোষণ করি। আমি মনে করি, এমপিদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হবে। এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির উদ্যোগ নস্যাৎ হবে। এটা করা হলে নির্বাচন কমিশন সব মহলে নিন্দিত হবে। এছাড়া এই সুযোগ তৈরি হলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।

‘সংসদ সদস্যদের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞা থেকে বাদ দেওয়া ঠিক হবে না। দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এমপিরা স্থানীয় পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ দেশে বাস্তবতা হচ্ছে এমপিরা নিজেদের এলাকায় সর্বেসর্বা। এমতাবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না’।

‘একটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তড়িঘড়ি করে আইন ও বিধিমালা পরিবর্তন করে যেভাবে মাননীয় এমপিদের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা অভিনব। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সর্বমহলে নিন্দিত হয়ে পড়ব। আজ পর্যন্ত এই সংশোধনের পক্ষে কেউ অভিমত প্রকাশ করেছেন বলে আমার জানা নেই। ’

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রচারে যাওয়ার জন্য এমপিদের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানায়। এক্ষেত্রে দলটির পক্ষ থেকে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞা সংশোধন করে ‘এমপি’ বাদ দেওয়ার জন্য বলে। গত বৃহস্পতিবার (২৪ মে) নির্বাচন কমিশন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞা সংশোধন করতে ‘এমপি’ শব্দটি বাদ দিয়েছে।

সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারে যেতে পারে না। ইসির সংশোধনীটির কার্যকর হলে এমপিরা সিটি নির্বাচনের প্রচারে যেতে পারবে।

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বিগত কমিশনও এই সংজ্ঞাটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েও আর করেনি। কিন্তু এই কমিশন একটি দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য বিএনপি  ইতিমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার পদত্যাগও দাবি করেছে।

আরও পড়ুন:
সিটি নির্বাচনে প্রচারণা চালাতে পারবেন এমপিরা

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
ইইউডি/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।