বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীরা যেমন গণসংযোগ শুরু করেছেন, তেমনি মাইকবাহী গাড়িতেও শুরু হয়ে গেছে প্রচারণা।
আজ-কালের মধ্যেই প্রার্থীরা তাদের পোস্টার- ব্যানার সাঁটিয়ে ফেলবেন।
নির্বাচনী মাঠ ঘুরে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১০ জুলাই) বিকেল থেকেই ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রার্থীরা বাড়িতে-বাড়িতে যাচ্ছেন। সঙ্গে কর্মী-সমর্থকরা নানা স্লোগান দিয়ে প্রার্থীর অবস্থান নিশ্চিত করছেন। অন্যদিকে দুপুরেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সদর রোডে নৌকা মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। এর পাশাপাশি ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার নেতাকর্মীদের নিয়ে সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ে দোয়া-মেনাজাত শেষে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।
ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বরিশালে ধানের শীষ প্রতীক জিতবে। প্রতীক বরাদ্দের পরে দোয়া-মোনাজাত শেষে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণায় নেমেছি। বাধা আসলে অবশ্যই তা সবার সামনে তুলে ধরা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পরই আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে। পোস্টার, লিফলেট বিলি করা হয়েছে। মাইকিং ও উঠান বৈঠক শুরু হয়ে যাবে। আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে আমরা সমস্ত ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক শেষ করবো।
তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি এখনও বলি, সিটি নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা থাকবে না। বরিশাল সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ হবে এবং পুরো নির্বাচনী কার্যক্রম উৎসবমুখর পরিবেশে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক হবে। যেভাবে গাজীপুর, খুলনায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে সেভাবেই হবে।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, শঙ্কা তো রয়েছেই। শুধু আমার না, বরিশালবাসীই শঙ্কায় রয়েছে। বরিশালের বাতাস থমথমে হলেও আমি আশা করবো বরিশালের নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনে মেয়র যেই হোক তাতে আমাদের আপত্তি নেই।
এদিকে অনেক অভিযোগ থাকলেও তা পরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে বলে জানান তাপস।
প্রচারণায় নেমে বাসদের প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনের পরে জনগণের মতো আমাদের মনেও শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি আমরা লক্ষ করছি যে, আমাদের যারা কর্মী রয়েছেন তাদের বিভিন্ন ধরনের থ্রেট করা হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে থাকার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা বলতে চাই অবিলম্বে এই বিষয়গুলোতে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হোক। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই।
এদিকে এ বিষয়ে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, শঙ্কার কথা প্রার্থীরা বলেছেন, আমরা তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেও সুনির্দিষ্ট কারণ দেখাতে বা তথ্য দিতে পারেননি তারা।
এদিকে দুপুরে ১৬ দফা নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর বিকেল ৩টায় ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ওবাইদুর রহমান মাহবুব আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন। বাকি মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচরণায় নেমে যাবেন বলে জানা গেছে।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে শঙ্কা দেখা দেবে। আমাদের লক্ষ্য সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ জুলাই নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৩ কেন্দ্রে ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন ভোটার বেছে নেবেন তাদের প্রার্থীদের।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, ১০ জুলাই, ২০১৮
এমএস/আরআর