ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

জনসমর্থন আদায়ে মরিয়া লিটন ও বুলবুল

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৮
জনসমর্থন আদায়ে মরিয়া লিটন ও বুলবুল জনসমর্থন আদায়ে মরিয়া লিটন ও বুলবুল। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী:  রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শুরু হয়েছে ১০ জুলাই। এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে তিনটি দিন। আর প্রচারণা শুরুতেই নির্বাচন কমিশনে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলছে নৌকার প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও ধানের শীষের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের।

নির্বাচনের দিন যতই গড়াচ্ছে অভিযোগের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই উষ্ণ হচ্ছে রাজশাহীতে।

এর মধ্যেই জনসমর্থন আদায়ের প্রাণপণ চেষ্টা করছেন হেভিওয়েট ওই দুই প্রার্থী।

সেই কাক ডাকা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। গণসংযোগে নেমে মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলছেন, এবারের আগের টার্মে মেয়র থাকাকালীন রাজশাহীতে তার করা বিভিন্ন উন্নয়নের কথা। আগামীতে আরও এক ঝুড়ি উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়ে লিটন ভোট চাইছেন দ্বারে দ্বারে।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলছেন, আরেকটি বার সুযোগ দেওয়ার। কারাবন্দি চেয়ারপারসন জিয়ার মুক্তির কথাও। জনসমর্থন আদায়ে মরিয়া লিটন।  ছবি: বাংলানিউজতিনদিনেই জমে উঠেছে রাজশাহী সিটি নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা। রাজশাহীর উন্নয়নের স্বার্থে নৌকায় ভোট চেয়ে শুক্রবার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীতে গণসংযোগ করেছেন মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মহানগরীর আসাম ও শিরোইল কলোনী এলাকায় গণসংযোগ করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় শিরোইল কলোনী স্কুলে মতবিনিময় করেন। রাত সোয়া ৮টায় হড়গ্রাম এলাকায় এক উঠান বৈঠকে মিলিত হন খায়রুজ্জামান লিটন।

শুক্রবার মহানগরীর শালবাগানের পাওয়ার হাউজের মোড় এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন লিটন। এরপর বউ বাজার, রবের মোড়, আসাম ও শিরোইল কলোনী, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া,  ছোটবোনগ্রাম এলাকায় লিফলেট বিতরণ এবং গণসংযোগ করেন। এসব এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ও দোকানে গিয়ে রাজশাহীর উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন খায়রুজ্জামান লিটন।

গণসংযোগের সময় এসব এলাকায় প্রচার মিছিল বের করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষরা। ‘লিটন ভাইয়ের সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন। উন্নয়নের মার্কা কি?, নৌকা ছাড়া আবার কী। ৩০ জুলাই সারাদিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন। নৌকা মার্কায় দিলে ভোট, শান্তি পাবে দেশের লোক। নৌকা মার্কায় ভোট দিন, যোগ্য ব্যক্তি বেছে নিন। উন্নয়নের মার্কা, নৌকা মার্কা’ ইত্যাদি স্লোগান আর কোরাসে মুখর হয়ে ওঠে আশপাশের পুরো এলাকা। জনসমর্থন আদায়ে মরিয়া  বুলবুল।  ছবি: বাংলানিউজগণসংযোগের শুরুতেই এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপি মিথ্যাচার ও অপপ্রচার শুরু করে দিয়েছে। এরই মধ্যে তারা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় থাকা সংখ্যালঘু ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে। এসব বিষয়ে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ইসি কর্তৃপক্ষ এখন অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

লিটন বলেন, ‘ভোটকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা অনেক উজ্জ্বীবিত। ভোটাদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। আমরা শেষ দিন পর্যন্ত এমন পরিবেশ দেখতে চাই। মানুষের উৎসাহ দেখে আমরা এবার জয়ের ব্যাপারে অনেক আশাবাদী’। পরে মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন শিরোইল কলোনী এলাকার বায়তুল মামুর মসজিদের বিশাল জামাতে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ও বিজয়ী হলে সব ধরনের উন্নয়নের আশ্বাস দেন।

এদিকে ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী মহানগর বিএনপির সভাপতি সদ্য বিদায়ী মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ২৬নং এবং বিকেলে ২৭ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এ সময় দলের প্রাচার মিছিলেও অংশ নেন।

গণসংযোগকালে বুলবুল বলেন, বর্তমান সরকারের নির্যাতন, বিচার বহির্ভুত হত্যা, গুম, শেয়ারবাজার ধ্বংস, ব্যাংক লুট ও সীমাহীন দুর্নীতি এবং খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজা দেওয়ার ঘটনায় মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তারা এবারও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

এই অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশ রক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধানের শীষের কোনো বিকল্প নাই উল্লেখ করে মেয়র প্রার্থী বুলবুল আরও বলেন, যত রকমের বাধাই আসুক না কেন সব বাধা অতিক্রম করে তারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন। মানুষ যেনো কেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ী করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হবে।

গণসংযোগকালে এক প্রশ্নের জবাবে বুলবুল বলেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার, ও ফেস্টুন সরকার দলীয় প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা ছিঁড়ে ফেলছে। এছাড়াও পুলিশ কোনো মামলা ছাড়াই নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে জটিল মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে তল্লাশি করছে।

এসব অভিযোগ নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনও সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এবার প্রতিটি কেন্দ্র কঠোরভাবে পাহারা দেওয়া হবে। ভোট গণনা না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীরা কেন্দ্রে থাকবেন। ধানের শীষের বিজয়ের মধ্যে দিয়ে আগামীতে রাজশাহী থেকে জিয়ার মুক্তি ও হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী বুলবুল।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৮
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।