ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সংরক্ষিত আসন: তফসিল ফেব্রুয়ারিতে, মার্চের মধ্যে ভোট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৯
সংরক্ষিত আসন: তফসিল ফেব্রুয়ারিতে, মার্চের মধ্যে ভোট নির্বাচন ভবন

ঢাকা: একাদশ সংসদ সদস্যরা শপথ গ্রহণ করে কার্যভার গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করে মন্ত্রিসভা গঠনের সম্মতি দিয়েছেন। এবার সংসদের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচন আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষটির যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন নির্ধারিত উপায়ে এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে তফসিল  দিয়ে মার্চের মধ্যেই ভোটগ্রহণ করা হবে।

দলগুলো যোগ্যতাসম্পন্ন যে কোনো নারীকে মনোনয়ন দিতে পারবে। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপ্রাপ্তদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।

২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনেরও পর সে বছর মার্চে ৫০ জন সংরক্ষিত নারী সদস্যই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।  

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) নবনির্বাচিতদের গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ২৯৮ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির নাম ঠিকানাসহ প্রকাশ করা হয়। এরপর ৩ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদের স্পিকার নবনির্বাচিতদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৩ আসনের এক প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় সেখানে আগামী ২৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হবে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে অনিয়মনের কারণে স্থগিত তিন কেন্দ্রের ভোট ৯ জানুয়ারি গ্রহণ করার পর ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

অবশিষ্ট ২৯৮ আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৫৭টি আসন, জাতীয় পার্টি ২২টি আসন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ দুইটি আসন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ দুইটি আসন, জাতীয় পার্টি-জেপি একটি আসন ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন একটি আসন পেয়েছে। মহাজোট মোট আসন পেয়েছে ২৮৮টি।

অন্যদিকে বিএনপি পাঁচটি ও গণফোরাম দুইটি আসন পেয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মোট সাতটি আসন পেয়েছে। আর স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিন প্রার্থী।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে ৫০টি। এসব আসনের নির্বাচনে আইন বলছে-নবনির্বাচিতদের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে দল বা জোটগুলো বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের জোটের অবস্থান নির্বাচন কমিশনকে জানাবে। সে মোতাবেক আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের এ সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।

নির্বাচন কমিশন সেই তথ্যের ভিত্তিতে দল, বা জোটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কোনো দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে সংরক্ষিত আসন বণ্টন করবে ফলাফলের গেজেট প্রকাশের পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে। অর্থাৎ আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন এ তালিকা প্রস্তুত করবে। তালিকা প্রস্তুতের পরের কার্যদিবসে অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই তালিকা নির্বাচন কমিশনে প্রকাশ্য কোনো স্থানে টানিয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে সংসদ সচিবালয়কে সেই তালিকা প্রত্যায়িত কপি টানানোর জন্য বলবে। নির্বাচনের আগে সেই তালিকার আর কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো করণিক ভুল হলে নির্বাচন কমিশন তা সংশোধন করতে পারবে।

এদিকে এর আগেই সংসদ সচিবালয়কে শপথগ্রহণকারী সদস্যদের একটি তালিকা শপথ গ্রহণের তিন কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হবে। যাদের ভোটার হিসেবে গণ্য করবে নির্বাচন কমিশন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বাতিল করে পুনর্ভোটের দাবি করায় জোটটির সাত প্রার্থী ৩ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেননি। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকায় (রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন) শপথ গ্রহণে উপস্থিত থাকতে পারেননি। সে হিসেবে ৮ জানুয়ারির মধ্যে ২৯০ জনের তালিকা সংসদ সচিবালয় নির্বাচন কমিশনকে পাঠাবে।

আইন অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ১ এপ্রিলের মধ্যে এ নির্বাচন করতে হবে।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন আইন-২০০৪ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন জোটের তালিকা প্রকাশ্যে টানানোর পর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। একইসঙ্গে মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই ও ভোটের দিন ঘোষণা করবে। এছাড়া ভোটগ্রহণের স্থান নির্ধারণ করবে।

আইন অনুযায়ী কোনো জোট বা দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কে, কত আসন পাবে তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে-জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন হবে আনুপাতিক। এক্ষেত্রে মোট সংরক্ষিত আসনকে জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে, সেই ভাগফলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার গুণফলই হবে ওই দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসন পেয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি (২২ আসন) বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা দেওয়ায় সংসদে এ জোটের প্রার্থী দাঁড়িয়েছে ২৬৬টি। এক্ষেত্রে মহাজোট (আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৫৭ আসনে জয়লাভ করায় দলটি পাবে ৪২টি আসন) পাবে ৪৪টি সংরক্ষিত আসন। জাতীয় পার্টি পাবে তিনটি আসন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত বিজয়ী প্রার্থী অধিবেশন শুরুর নব্বই দিন পর্যন্ত শপথ নেওয়া সুযোগ পাবেন। তারপরও শপথ না নিলে সে আসনগুলোতে পুনরায় নির্বাচন হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের জন্য দুইটি আসন থাকবে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনো জোটে যোগ না দিলে তাদের জন্য থাকবে একটি আসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৯
ইইউডি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।