ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

২০১৮ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে দলগুলোকে ইসির নির্দেশ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
২০১৮ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে দলগুলোকে ইসির নির্দেশ নির্বাচন কমিশন ভবন

ঢাকা: গত পঞ্জিকা বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের আয় ও ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী হিসাব জমা দিতে সময় দেওয়া হয়েছে ৩১ জুলাই (বুধবার) পর্যন্ত।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব রওশন আরা জানিয়েছেন, ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে বুধবার (২৬ জুন) হিসাব জমা দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হিসাব জমা দিতে হবে।

যদিও পরবর্তীতে সময় চেয়ে আবেদন করার সুযোগ আছে।

ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪১টি হলেও দু’টি দল একেবারে নতুন। তাই আগামী বছর থেকে তাদের হিসাব দিতে হবে।

২০১৮ সালে সাতটি দল ১৫ দিন সময় চেয়ে আবেদন করলে ইসি তা মঞ্জুর করে। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, গণতন্ত্রী পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)।

আরপিও অনুযায়ী, পরপর তিন বছর কোনো দল হিসাব জমা না দিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালে দেখিয়েছিল ২০১৭ সালে তাদের ৬ কোটি ৬১ লাখ ৪৮ হাজার ১১৭ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। ২০১৭ সালে দলটি আয় করেছে ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা। আর ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা।

বিএনপি ২০১৮ সালে আগের বছরের অর্থাৎ ২০১৭ সালের হিসাবে দেখিয়েছে মোট আয় ৯ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার ৯০২ টাকা। আর মোট ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৪ টাকা। দলটির ৫ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৯৪৮ টাকা হাতে বা ব্যাংকে রয়েছে।

২০১৭ সালে আওয়ামী লীগ ২০১৬ সালের হিসাব দিয়ে বলেছিল, ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিটের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ১১ হাজার ৪৪১ টাকা।

সে বছর দলটির আয় ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা। আর ব্যয় ৩ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা। মোট জমা টাকার মধ্যে আগের জমা করা টাকার সুদ হচ্ছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯৬ টাকা।

আওয়ামী লীগ ২০১৬ সালে নির্বাচন কমিশনে ২০১৫ সালের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব দাখিল করেছে সেখানে দলটি আয় দেখিয়েছে ৭ কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা। আর ব্যয় করেছে ৩ কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। অর্থাৎ সে সময় দলটি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছে।

২০১৫ সালের হিসাবে ২০১৪ সালে দলটি আয় দেখিয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা। এতে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল আওয়ামী লীগের।

আর ২০১৪ সালের হিসাবে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ আয় দেখিয়েছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ব্যয় দেখিয়েছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এতে প্রায় ৬ কোটি টাকা দলটির উদ্বৃত্ত ছিল।

এদিকে ২০১৬ সালে বিএনপির ২০১৫ সালের দাখিল করা আয়-ব্যয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত তিন পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় বাড়েনি। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিএনপি ১৪ লাখ ২৬ হাজার ২৮৪ টাকা ঘাটতিতে ছিল। কেননা, দলটি সে বছর আয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৩ হাজার ৩৬৫ টাকা। আর ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৪৯ টাকা।

২০১৫ সালে ২০১৪ সালের (পঞ্জিকা বছর) হিসাবে দলটি বিভিন্ন খাতে দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ টাকা আয় দেখিয়েছে। আর ব্যয় দেখিয়েছে তিন কোটি ৫৩ লাখ তিন হাজার টাকা। এতে আয়ের চেয়ে ৬৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪২৬ টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে দলটির।

আর ২০১৪ সালে ২০১৩ সালের (পঞ্জিকা বছর) হিসাবে দলটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার ৭৬২ টাকা আয়ের বিপরীতে ২ কোটি ২৭ লাখ ২৫ হাজার ৩২৬ টাকা ব্যয় দেখিয়েছিলো। সে সময় ঘাটতি ছিলো প্রায় দেড় কোটি টাকা।

দলগুলো প্রাথমিক সদস্য ফি, নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি, প্রকাশনা বিক্রি ও ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদ থেকে আয় করে।

আর-ব্যয় হয় কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, আপ্যায়ন, সভা-সেমিনার, অফিস ব্যয়, উত্তরণ-পত্রিকা প্রকাশ, ত্রাণ কার্যক্রম, বিভাগীয় ও জেলা জনসভা, সহযোগী সংগঠন অনুষ্ঠান, সাংগঠনিক ব্যয় এবং অন্যান্য খাতে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৪ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।