বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের জাসদ কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে ঢাকাবাসীর জন্য দল-মত-নির্বিশেষে কাজ করবো।
ঢাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমিও আপনাদের মত একজন ঢাকার বাসিন্দা। এই ঢাকাকে আমরা সবাই ভালবাসি। ঢাকাতেই আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করি। দীর্ঘসময় অতিবাহিত হয়েছে তারপরও ঢাকার তেমন উন্নয়ন হয়নি। বিভিন্ন অবহেলা এবং গাফিলতির কারণে আমরা ঢাকাকে হারাতে বসেছি। ঢাকা প্রায় মৃত এবং অচল শহরে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা ঢাকাকে এভাবে মৃত শহরে পরিণত হতে দিতে পারি না। দায়িত্ব নিয়ে কাউকে না কাউকে তো এগোতে হবে। তাই আমি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার বিভিন্ন সমস্যা আপনাদের যেমন পীড়া দেয় তেমনি আমাকেও দেয়। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে আরও বেশি পীড়া দেয় যখন জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হয় না। তাই ঢাকার অভিভাবকত্ব নেওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। তাই আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চ্যালেঞ্জসহ অভিভাবকত্ব গ্রহণ করে অচল ঢাকাকে সচল করতে চাই।
ঢাকার উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ঢাকাকে উন্নয়নের জন্য পাঁচ ধাপের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রথমত আমরা ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ করবো। ঐতিহ্যের স্বকীয়তাকে পুনরুজ্জ্বীবিত করে ঢাকার পূর্ণাঙ্গ অপরূপ বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরব। দ্বিতীয়ত আমাদের পরিকল্পনা ঢাকাতে সবুজায়ন করা। প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থাকে পুনর্বিন্যাস করে কোন রাস্তায় কোনো ধরনের পরিবহন চলবে তা নির্ধারণ করতে হবে। চতুর্থ পরিকল্পনা হচ্ছে আমাদের সুশাসিত ঢাকা। ইনশাল্লাহ যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কোনো উইপোকার স্থান হবে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবো।
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস তার পরিকল্পনার কথা প্রসঙ্গে আরও বলেন, আমাদের পঞ্চম পরিকল্পনা হচ্ছে উন্নত ঢাকা। আমরা ৩০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করবো। অন্যান্য সরকারি সংস্থার কাছ থেকে পহেলা বৈশাখের আগে আমরা তাদের কাজের চাহিদাপত্র গ্রহণ করবো। তাদের কাজের পর আমরা সিটি কর্পোরেশনের কাজ করব। সিটি কর্পোরেশন কাজ করার পরে অন্তত তিন বছর অন্য কোনো সংস্থাকে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করতে দেওয়া হবে না। সিটি কর্পোরেশনের কাজের পরে অন্য সংস্থা কয়েক মাস পরেই আবার আমাদের রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে, তা আমরা বরদাশত করবো না।
গতবছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণকারীদের কথা উল্লেখ তাপস বলেন, গত বছর আমরা দেখেছি ডেঙ্গু নিধনে ব্যর্থ হওয়ার কারণে বেশকিছু মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়। মশক নিধন সিটি কর্পোরেশনের দৈনিন্দন কাজ। মশক নিধন করতে হবে প্রজননের আগে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস যখন ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করে তখন মেয়র মহোদয় ফগার মেশিন হাতে নিয়ে রাস্তায় নামলে সেটা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই হয় না। আবর্জনা পরিষ্কারও দৈনন্দিন কাজ। পাঁচ বছরে দিনের ২৪ ঘণ্টাই মৌলিক নাগরিক নাগরিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করবো।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করে ঢাকাকে স্মার্ট নগরীতে পরিণত করার জন্য তাপসের কোনো বিকল্প নেই।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, স্থায়ী কমিটির সদস্য শাহ জিকরুল আহমেদ, হাবিবুর রহমান শওকত, নুরুল আখতার, নাদের চৌধুরী, সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, নাইমুল আহসান জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সভাপতি হাজী ইদ্রিস ব্যাপারী, ঢাকা মহানগর পূর্ব জাসদের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম শাহ আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান মিহির প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
আরকেআর/এএটি