বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
আমির খসরু মাহমুদ বলেন, 'বিগত দিনে যে সমস্যা নিয়ে আলোচনাচনা করেছি আজ পর্যন্ত যে ভায়োলেশন হয়েছে, আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে যেগুলো ছোটখাটো লঙ্ঘন নয়, মেজর যে লঙ্ঘন হয়েছে বার বার বলেছি সমাধান হয়নি।
তিনি বলেন, 'ফুটপাতের ওপর আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ক্যাম্পের বিষয়ে আমরা বলেছিলাম। তারা বলেছিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাঙা হবে। এখন পর্যন্ত কোন অফিস ভেঙেছে বলে আমার জানা নেই। সবগুলো অফিসই এখনও আছে, রিটার্নিং অফিসার দুঃখ প্রকাশ করেছেন তারা এক্সিকিউট করতে পারছেন না। তাদের প্রার্থীর পোস্টারের মাপেরর ক্ষেত্রেও নিয়ম মানা হয়নি, সেগুলোও নামানোর কথা কিন্তু তা হয়নি। কোন পরিবর্তন হয়নি। '
তিনি আরো বলেন, 'নির্বাচন পর্যন্ত দৃশ্যমান অপরাধ না হলে গ্রেফতার হবে না বলে জানিয়েছিল, কিন্তু গ্রেফতার চলছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করা হবে না বলেছিল, কিন্তু সেটিও শুরু হয়ে গেছে। গ্রেফতারও হচ্ছে নতুনভাবে। আমাদের প্রার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা নাকি কিছু পায়নি। নির্বাচনের যে পরিবেশের কথা বলে আসছি, আওয়ামী লীগের দক্ষিণের প্রার্থীর একজন এমপি, সিনিয়র নেতা সেখানে বসে ছিলেন; এটা ক্লিয়ারলি ভায়োলেশন। ঢাবিতে বসে একজন প্রেসডিয়াম সদস্য বলেছেন কেন্দ্রের ভিতরে বাইরে আশেপাশে দখলের জন্য। আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি নাকি বলেছেন, বিএনপি নাকি বাইরে থেকে লোক এনে কেন্দ্রে দখল করবে, দেশের একটি মানুষও কি তা বিশ্বাস করবে, উনি নিজে কি বিশ্বাস করবেন। '
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'এটি বলার পেছনে কারণ রয়েছে। ২০১৪ নিজেরা একটা নির্বাচন করেছে, তখনও নিজেরাই কেন্দ্র দখল করেছে। ২০১৮ তেও তারা কেন্দ্রে দখল করেছে, বিভিন্ন মেয়র নির্বাচনে এবং চট্টগ্রাম উপনির্বাচনের দখলও জাতি দেখেছে। এগুলো তারা প্রতিনিয়ত করছে, তাই তাদের মনে এটি কাজ করে, তিনি শুধু আওয়ামী লীগের জায়গায় বিএনপি বলে ফেলেছে। বাংলাদেশের কোন মানুষ কি তা বিশ্বাস করবে। বিএনপি কর্মীদের বাসায় গিয়ে হয়রানি গ্রেফতার হচ্ছে। '
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ইসি সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের নাগরিককে ভোট নিশ্চিত ও সুরক্ষার জন্য। কিন্তু এখন ইসি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের ভোট সুরক্ষা জন্য। তাদের ভোট সুরক্ষার দায়িত্ব অনেকটা ইসির। '
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) কনসার্ন আমরা বুঝতে পারছি। দেশীয় দলীয় পর্যবেক্ষকদের ২২টার মধ্যে ১৮টির ওয়েবসাইট নেই। আবার দুইটির একই ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও অরেকটিতে চিফ এক্সিকিউটিভ। সেই প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগের অবজারভারদের দিয়ে সবকিছু করতে চায়, বাইরের কেউ দেখবে তারা চায় না। নিয়ন্ত্রণের নির্বাচনের মাধ্যমে ফল পেতে চায়। অবজারভার, ইভিএম সেভাবেই করেছে। তবে কমিশনকে অসহায় বলতে পারব না, তাদের দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি শুধু জিতবে না বহু ভোটে জিতবে। তাই ভোট নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। সবাই মিলে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের পর্যায় নিয়ে গেছে। এখনও আশায় আছি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন চাইলে পরিবর্তন সম্ভব। চাইলেই জনগণের ভোট ফিরিয়ে দিতে পারেন তারা। ’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সিইসি কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
** আ. লীগই সন্ত্রাসীদের ঢাকায় জড়ো করছে: ফখরুল
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২০
ইইউডি/এজে