ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভোটের মাঠে নগরবাসীকে ফটোআইডি সঙ্গে রাখার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২০
ভোটের মাঠে নগরবাসীকে ফটোআইডি সঙ্গে রাখার আহ্বান সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

ঢাকা: আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক নজরদারির পাশাপাশি সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে থাকার কথা জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ভোটের সময় বিনা প্রয়োজনে নাগরিকদের ঢাকায় অবস্থানে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এমনকি নগরবাসীর সুবিধার্থে ঠিকানা নির্দেশক ফটোআইডি সঙ্গে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রার্থীদের উৎসবমুখর ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য পরিপূর্ণ চিত্র আমরা দেখেছি। নির্বাচন উপলক্ষে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি যেন প্রতিটি ভোটার নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও ভীতিমুক্ত পরিবেশে ভোট দিতে পারে।

গত নির্বাচনের চেয়ে এবার বেশি র‍্যাব সদস্য মাঠে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে র‍্যাবের একটি পেট্রোলিং টিম থাকবে। যে কোনো আপদকালীন পরিস্থিতি অল্প সময়ের মধ্যে মোকাবিলা করার জন্য ঢাকায় পাঁচটি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। সেখানে স্ট্যাকিং ফোর্স রিজার্ভ রয়েছে। এছাড়া কমান্ডো বাহিনী, হেলিকপ্টার টিম প্রস্তুত থাকবে। বোম্ব স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া ২৪ ঘণ্টা পুরো পরিস্থিতি স্পেশাল মনিটরিংয়ে থাকবে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুয়ায়ী বৃহস্পতিবার থেকে র‍্যাব সদস্যরা মাঠে থাকবে। ইতোমধ্যে সব হুমকি এবং ঝুঁকি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করা হচ্ছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং প্রবেশপথে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি করা হবে। ভোটগ্রহণ, গননা থেকে শুরু করে পরদিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে র‍্যাব মাঠে থাকবে।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে সম্মানিত ভোটারদের অনুরোধ জানিয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, ছিনতাইকারী, ম্যানহোলের ঢাকনাচোর শ্রেণির লোক যাতে নির্বাচিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও ম্যানহোলের ঢাকনা চোর কাউন্সিলর হয়ে আসে, যা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, সিটি নির্বাচন কেন্দ্র করে যে কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, সেদিকে র‍্যাবের বাড়তি নজর থাকবে। তবে আমরা আগে থেকেই কিছু করতে চাচ্ছি না, কারণ অপব্যাখ্যা হতে পারে। দেশের ভোটার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোট দেওয়া ও নেওয়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ। আমি মনে করি না কেউ নির্বাচনকেন্দ্রিক অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করবেন। এরপরেও যদি কেউ করার চেষ্টা করেন তাহলে দেশে যে প্রচলিত আইন রয়েছে, সে আইনের আওতায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

ভোটের মাঠের পরিবেশ সুসংগত রাখতে বিনা প্রয়োজনে কাউকে ঢাকায় না থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে ভাই-বোন আত্মীয় প্রার্থীর ক্যাম্পেইন করার জন্য যারা ঢাকায় এসেছিলেন, তাদের ধন্যবাদ, এবার আপনারা চলে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় কোনো লোকের অপতৎপরতা আমরা চাইনা। কারণ আজ রাতে প্রচারণা শেষ হয়ে যাবে। যদি কেউ থেকেও যান, আশা করবো আপনি যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন; যারা জেনুইন ভোটার তাদের চলাফেরা ভোটদানে সমস্যা করবেন না।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব ডিজি বলেন, বাইরের কেউ ঢাকায় অবস্থান করলে তাদের জেলে পাঠাবো বিষয়টা এমন নয়। প্রত্যেকটা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে, জেল জুলুমের ভীতি আমরা দেখাতে চাই না। আমার মনে হয় না আমার সে পর্যায়ে রয়েছি। আমরা আহ্বান করেছি যেন শহরে যারা জেনুইন ভোটার তারা সহজে শান্তিপূর্ণভাবে ও স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারেন এবং নিরাপদ পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্যই। মূলত শৃঙ্খলা রক্ষাই আমাদের আহ্বানের মূল লক্ষ্য। কাউকে জেলে পাঠানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে যদি কেউ জেলে পাঠানোর মতো কাজ করেন, তাহলে তো জেলেই যাবেন।

কাল-পরশু যারা রাজধানীতে চলাফেরা করবেন তাদের সঙ্গে ঠিকানা নির্দেশক ফটোআইডি রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

নির্বাচনী সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, ইতিহাস যদি দেখেন তাহলে এ ধরনের ঘটনা বিচ্ছিন্ন ছাড়া কিছুই না। এসব ঘটনা বড় করে দেখার কিছু নাই। আবার এটাও ঠিক তুচ্ছ ঘটনা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। যদি আইনবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড ঘটে তাহলে যে কোনো প্রার্থী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বা থানায় অভিযোগ করতে পারেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন কেন্দ্র করে দেশের বাইরে থেকে বিপুল নেতাকর্মী ঢাকায় এনেছেন, এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমি রাজনৈতিক বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। তবে আমি বলবো আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় কোনো লোকের অপতৎপরতা চাই না।

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সহিংসতার আশঙ্কার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আশঙ্কা করতে থাকুক, আর আমরা নির্বাচন করি, অসুবিধা নাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২০
পিএম/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।