ঢাকা উত্তর সিটি মিরপুরের বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটাররা নির্ধারিত সময়ের আগেই ভোটকেন্দ্রে ভিড় করেছেন। এবার প্রথমবারের মতো বিভক্ত ঢাকার দুই সিটিতে একযোগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হচ্ছে।
আর এটিই ইভিএমে সবচেয়ে বড় নির্বাচন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর দুই সিটির বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
মিরপুরের ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকালে ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী আশ্রাফ আলী হাইস্কুল, ইব্রাহীমপুর সালাউদ্দিন শিক্ষালয়, কাজীপাড়ার হাজী ইউসুফ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেনপাড়ার মিরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, শেওড়াপাড়া নর্থ-সাউথ কিন্ডারগার্টেন, স্কলার কিন্ডারগার্টেন, তালতলা হালিম ফাউন্ডেশন উচ্চ বিদ্যালয়, গ্লোরি স্কুল ও পীরেরবাগের আলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোটারদের দীর্ঘলাইন। ভোটাররা বাংলানিউজকে জানায়, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতেই সময়ের আগেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। তাই ভোট দিয়ে আগে আগে বাড়ি ফিরতে চাই বলেও তারা জানান।
এ ব্যাপারে নর্থ সাউথ স্কুলে ভোট দিতে আসা মনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সকালে এসেছি পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবো বলে। আমি ভোট দিয়ে বাসায় গেলে, অন্যরা ভোট দিতে আসবেন। ভোটের পরিবেশ দেখে যাচ্ছি, যাতে করে সকালে এসে ভোট দিতে পারেন সবাই।
স্কলার কিন্ডারগার্টেনে ভোট দিতে এসেছেন নাহিদা বেগম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভোট হচ্ছে নাগরিক অধিকার, বাড়ির পাশেই কেন্দ্র, তাই সকাল সকাল ভোট দিতে এলাম।
এদিকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সকালে সব দলের এজেন্ট কেন্দ্রে এসেছেন আশা করছি, এই ওয়ার্ডে ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
পুরান ঢাকার ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সেন্টাল গালার্স হাই স্কুল, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে সকাল ৮টার আগে থেকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। শীত উপেক্ষা করে ভোটাররা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কেন্দ্রগুলোতে এসে অবস্থান নেয়। তারা সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট শুরুর অপেক্ষা করে।
পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ ভোটকেন্দ্রের ভোটার সায়েম বাংলানিউজকে বলেন, ঝামেলা এড়াতে সকালে ভোট দিতে এসেছি। আমি ২৫ মিনিট ধরে ২৫/৩০ জনের পেছনে দাঁড়িয়ে আছি। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হবে। এবারই আমি প্রথম ভোটার ও ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেবো। তাই খুশিতে দ্রুত চলে এসেছি।
নির্বাচনে বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ নয়টি দলের ১৩ জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া কাউন্সিলর পদে প্রায় সাড়ে সাতশ প্রার্থী রয়েছেন ভোটের মাঠে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এবার দু’সিটিতে মোট ভোটার ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার রয়েছেন। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনের সময় দু’সিটিতে ভোটার ছিলো ৪২ লাখ ১৬ হাজার ১২৭ জন। পাঁচবছরে ভোটার বেড়েছে ১২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪০ জন। অর্থাৎ এক পঞ্চমাংশের বেশি ভোটার হচ্ছেন তরুণ ভোটার। এছাড়া দুই সিটিতে নারী ভোটার হচ্ছেন ২৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫৯ জন।
ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ভোটার রয়েছেন ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। যাদের মধ্যে নারী ভোটার ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন।
এবার ঢাকা উত্তর সিটিতে এক হাজার ৩১৮টি ভোটকেন্দ্রের সাত হাজার ৮৫০টি বুথে ৩০ লাখ নয় হাজার ভোটার এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে এক হাজার ১৫০ ভোটকেন্দ্রের ছয় হাজার ৫৮৯টি বুথে ২৪ লাখ ৫২ হাজার ভোটার রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২০
এসএমএকে/জিসিজি/এএটি