ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

আ’লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ দল হিসাব দেয়নি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২১
আ’লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ দল হিসাব দেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবন

ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ দল এখনো বিগত পঞ্জিকা বছরের (২০২০) আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেয়নি। আগামী ৩১ জুলাই হিসাব জমা দেওয়ার শেষ দিন।

ইসির উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান গত ৭ জুন এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দলগুলোর সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছোট দুটি দল তাদের হিসাব জমা দিয়েছে। অন্য কোনো দল এখনো কোনো সাড়া দেয়নি। তবে হাতে আরও অর্ধমাস সময় থাকায় এমন হতে পারে। এছাড়া করোনার কারণেও হয়তো দেরি হচ্ছে। দলগুলো আবেদন করলে বা প্রয়োজনে কমিশন নিজ থেকেই সময় বাড়াতেও পারে। গত কয়েক বছর ধরেই আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছিল। সর্বশেষ ২০২০ সালে করোনার কারণে সময় বাড়ানো হয়েছে। এর আগে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের আবেদনের প্রেক্ষিতে কখনো এক মাস, কখনো ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব রওশন আরা বলেন, গত বছর করোনার কারণে সময় বাড়ানো হয়েছিল। এবারও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অধিকাংশ দল অপারগ হলে সময় বাড়ানো হতে পারে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী পূর্ববর্তী পঞ্জিকা বছরে দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ইসির কাছে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে একটি রেজিস্টার্ড চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে অডিট করতে হয়। প্রতিবেদনে থাকতে হয় অডিট কোম্পানি এবং দলের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর বা সিলমোহর।

ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে, বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনের নির্ধারিত একটি ছকে জমা দিতে হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২-এর ৯০-এইচ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল পরপর তিন বছর আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে ইসির। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি।

২০২০ সালে দলগুলোর জমা দেওয়ার হিসাব অনুযায়ী, দেশের নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বড় তহবিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। তারপরেই রয়েছে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশনে জমা হিসাব অনুযায়ী আওয়ামী লীগের ২০১৯ পঞ্জিকা বছরে আয় হয়েছে ২১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি ২১ লাখ ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল ১২ কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৫ টাকা।

আর ২০১৯ সালে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে উদ্বৃত্ত ছিল ৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৮৩৮ টাকা।

সব মিলিয়ে ২০২০ সালে দলটির তহবিল দাঁড়ায় ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯৩ টাকা।

এদিকে ২০২০ সালে বিএনপির জমা দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছে ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ৭১০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৩৭ টাকা। আয়-ব্যয়ের পার্থক্য হচ্ছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৭ টাকা।

২০১৮ পঞ্জিকা বছরে দলটির আয় হয়েছিল ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৭৩ লাখ ২৯ হাজার ১৪৩ টাকা। তখন দলীয় তহবিলে মোট উদ্বৃত্ত ছিল ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার ২৩৭ টাকা। ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, দলটির তহবিল কমে দাঁড়িয়েছিল ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮১০ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২১
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।