ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ইউপি নির্বাচন

‘আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন আ.লীগ প্রার্থীর ভাড়াটেরা’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
‘আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন আ.লীগ প্রার্থীর ভাড়াটেরা’

লক্ষ্মীপুর: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। ওই এলাকার নৌকার প্রার্থী আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠেছে।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৮ কর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সন্ধ্যায় ইউনিয়নের চকবাজারে নৌকার স্লোগান দিয়ে বহিরাগতরা লাঠিসোটা হাতে মহড়া দেয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল খালেক বাদলের ভাড়াটে লোকজন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যেই ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজনকে ভয় দেখাচ্ছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ইউনিয়নের পিয়ারপুর বাজার নির্বাচনী কার্যালয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া (ঘোড়া) সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। এ সময় ঘোড়া প্রতিকের কর্মী সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, নৌকার পক্ষে ইউনিয়নের কোনো কর্মী কাজ করছে না। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে সন্ত্রাসী স্টাইলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতলব ও নৌকার প্রার্থী আমার ইটভাটায় ঢুকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এতে আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। রামগতি থেকে নৌকার প্রার্থী বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এনেছেন। তারা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া আরও অভিযোগ করে বলেন, যুবলীগ নামধারী আবদুর রাজ্জাক রাসেল নৌকা প্রার্থীর ক্যাডার। তিনি মাদক ব্যবসা ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। ইউনিয়নের চৌরাস্তা বাজারে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) তাকে মারার একটি ভুয়া ঘটনায় ৬ জন প্রার্থীসহ ৬০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে আমার নামও আছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে হয়রানি করা হয়। নির্বাচনকে অন্যদিকে প্রভাবিত করতে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে জামানত হারাতে হতে পারে এজন্য নৌকার প্রার্থী ভীত হয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, নৌকা প্রার্থীর একটি সাজানো অভিযোগ কিভাবে পুলিশি তদন্ত ছাড়া মামলা হিসেবে রুজু হয়?

এদিকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী (চশমা প্রতীক) ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি জানান, নৌকার প্রার্থী আবদুল খালেক বাদল শুক্রবার বিকেলে তার কর্মীদের ওপর হামলা করেছেন। এতে ৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর দুই জনকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নৌকার প্রার্থী এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে।

অভিযোগের বিষয়ে নৌকার প্রার্থী আবদুল খালেক বাদল বলেন, ভোটের মাঠে নৌকার জোয়ার উঠেছে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। মামুনের ইটভাটায় হামলার ঘটনা মিথ্যা। তবে আমার ও যুবলীগ নেতা রাসেলের ওপর প্রতিদ্বন্দ্বীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে হামলা করেছে। ওই ঘটনায় আমরা মামলা দায়ের করেছি।

তিনি জানান, তাদের অস্ত্রধারী ভাড়াটে লোকজন বিভিন্ন বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া চশমা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন তার নির্বাচনী অফিসে হামলা করেছে এবং লোকজনকে মারধর করেছে।

সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক বলেন, ইটভাটা ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বহিরাগতদের অবস্থানসহ কোনো ঘটনা নিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে এএসপি-সদর সার্কেল মিমতানুর রহমান বলেন, প্রার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার কারণে তারা যদি থানায় আসতে না পারে, প্রতিনিধির মাধ্যমে অভিযোগ পাঠাতে পারে এবং নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ দিতে পারে।

প্রসঙ্গত, আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ভবানীগঞ্জসহ সদর উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নে ভোট হবে। এ ইউনিয়নে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হবে। ১১ জন প্রার্থী এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।