ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ইউপি নির্বাচন: দুর্গাপুর ও চারঘাটে আটক ৩০

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২১
ইউপি নির্বাচন: দুর্গাপুর ও চারঘাটে আটক ৩০

রাজশাহী: চতুর্থ দফার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে রাজশাহীর দুর্গাপুরে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ভোটগ্রহণ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও  সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে।

ভোটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে রাজশাহীর চারঘাটে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। ইপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই দুই উপজেলায় বিভিন্ন অপরাধে মোট ৩০ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল ৮টার দিকে ভোট শুরু হওয়ার পরই রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের নামোদরখালী গ্রামে ভোটকেন্দ্রে ভোটদানে বাধা প্রদান করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আহসান হাবিবের লোকজন।

এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলামের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই ঘটনা নিয়ে দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলামের চার কর্মী আহত হন। ওই ইউনিয়নের বখতিয়াপুর ভোট কেন্দ্রেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনদের ভোটদানে বাধা দেয় নৌকা সমর্থকের কর্মীরা। ওই ঘটনা নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লাঠিসোঠা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারধোরের ঘটনায় ইমরান হোসেন (৩০) নামের এক কর্মী আহত হন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলামের কর্মী।

এদিকে, দুপুর ২টার দিকে নওপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলামের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল আলমের সমর্থকদের ভোট দিতে বাধা দেয়। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল আলমের ৩ কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান (২৮), মজসেদ আলী (৫৫) ও জাফর আলী (২৮) আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

এসব ঘটনায় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগে ঝালুকা ইউনিয়ন থেকে একজন, কিসমত গণকৈড় ইউনিয়ন থেকে ৪ জন, পানানগর ইউনিয়ন থেকে ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

রাতে জানতে চাইলে রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার (ওসি) হাসমত আলী বলেন, আটককৃতদের থানায় রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, রাজশাহীর চারঘাটে রোববার সকাল থেকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ৬টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এই উপজেলায় বিভিন্ন অপরাধে ৯ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সকালে চারঘাটের সরদহ ইউনিয়নে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মতিউর রহমান তপনের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শলুয়া ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রগুলোর বাইরে দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা।

এ সময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হয়। পরে উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা একটি টেলিভিশনের ক্যামেরা থেকে ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করে।

রাজশাহীর চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রোববার সকাল থেকে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নেই শান্তিপূর্ণভাবেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু দুপুরের দিক থেকে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ঘটে। উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের হলিদাগাছী ভোটকেন্দ্রে কয়েকজন যুবক বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করলে সেখান থেকে ৯ জন আটক করা হয়। বর্তমানে তাদেরকে থানায় রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান- চারঘাট থানার এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২১
এসএস/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।