ঢাকা: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (এনসিসি) নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ভোটের আগে-পরে মোট ৯৬ ঘণ্টার জন্য সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ নিষেধাজ্ঞা না মানলে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।
আগামী ১৬ জানুয়ারি এনসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে চলছে প্রচারের কাজ। আইন অনুযায়ী, ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচার কাজ শেষ করতে হবে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের। আর সেই সময়টা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১৪ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত। আর এ সময় থেকে ১৮ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার তো দূরের কথা কোনো ধরনের জনসভা, পথসভা ও মিছিল করা যাবে না।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ বিষয়ে জানান, সম্প্রতি নির্দেশনাটি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের জানাবেন। এছাড়া মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। তাদেরও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ এ আদেশ অমান্য করলে ন্যূনতম ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন নির্বাচন) বিধিমালা, ২০১০ এর ৭৪ বিধি অনুসারে ১৪ জানুয়ারি দিনগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ১৮ জানুয়ারি দিনগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় কোনো ব্যক্তি কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান করতে এবং কোনো মিছিল বা শোভাযাত্রা সংঘটিত করতে বা তাতে যোগদান করতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি উক্ত বিধান লঙ্ঘন করলে অন্যূন ছয় মাস ও অনধিক সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এনসিসি নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে মেয়র পদে ছয়জন, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৩৪ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৪৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন।
মেয়র পদে ছয়জন প্রার্থী হলেন- খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন, স্বতন্ত্র থেকে বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাও. মো. মাছুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, এ সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর। সে সময় প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পেয়েছিলেন ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মোট ১৬ দিন। আর এবার ভোটগ্রহণ হবে ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি। প্রচার শুরু হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর, আর শেষ হবে ১৪ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টায়। অর্থাৎ এবার প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পচ্ছেন ১৮ দিন।
নির্বাচনে প্রায় ৫ লাখের মতো ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার হচ্ছে তৃতীয় নির্বাচন। প্রথমবার ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে এবং এবার ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় এ সিটিতে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন চালুর পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০২১
ইইউডি/আরবি