ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নোয়াখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বরিশাল জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
নোয়াখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বরিশাল জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা

নোয়াখালী: নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বরিশাল জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারীর নামে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাতে কালেক্টরেট সহকারী সমিতির নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ে সদস্যদের নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিনের পক্ষে ভোট চেয়ে সভা করেন তারা।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটিকে আগামী দু’দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।  

সভায় উপস্থিত থাকা কালেক্টরেট সহকারী সমিতির একাধিক সদস্য বাংলানিউজকে জানান, সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগঠনের নোয়াখালীর সদস্যদের ব্রিফিং করেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ের এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী ও বরিশাল কালেক্টরেট সহকারী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান। এ সময় তার সঙ্গে বরিশাল জেলা প্রশাসকের চতুর্থ শ্রেণির চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

মাহফুজুর রহমান নোয়াখালী পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী লেলিনের পক্ষে ভোট করার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের আহ্বান জানিয়ে কীভাবে প্রচারণা করবেন, তার দিক নির্দেশনা দেন।
 
সূত্র আরও জানান, বরিশাল জেলা প্রশাসনের উচ্চমান সহকারীসহ চার জনের ওই প্রতিনিধি দল সোমবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে নোয়াখালী আসেন। তারা ওইদিন সন্ধ্যায় নোয়াখালী কালেক্টরেট সহকারী সমিতির বৈঠক করে জেলা সার্কিট হাউজে রাত যাপন করেন।

মঙ্গলবার জেলা ডিসি কার্যালয়ের কর্মচারীদের বাসায় বাসায় গিয়ে ভোটের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাদের পরিকল্পনায়।  

যোগাযোগ করা হলে বরিশাল ডিসি কার্যালয়ের এলএ শাখার উচ্চমান সহকারী মাহফুজুর রহমান বলেন, মূলত আগামী ১৫ জানুয়ারি আমাদের একটি সভা রয়েছেন। আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ে নোয়াখালীতে বসেছিলাম। এখানে যেহেতু নির্বাচন চলে, নির্বাচন হচ্ছে নোয়াখালীতে, আমাদের কথায় কেউ ভোট দেবেনও না, আর আমাদের কোনো আত্মীয়-স্বজনও নেই, শুধু জানতে চাওয়া- কী হয়েছে? তখন একপর্যায়ে যেটা বলেছি, আপনারা একটু খেয়াল রাখতে পারেন। এখন কেউ কেউ হয় তো অন্যভাবে নিয়েছেন।  
 
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খায়রুল আনম সেলিম বলেন, আমরা শুনেছি। দেখেছিও। এ ঘটনায় বরিশাল ডিসির এমন কর্মকাণ্ডের জন্য তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। এটা তো তারা পারে না, নির্বাচন আইনেও এটা তারা পারে না, এটা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন। আশা করি প্রশাসনের ওপর এটার প্রভাব পড়বে না।  

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজিমুল হায়দার জানান, আমি ও সদর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজুল হক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথসহ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  
 
ডিসি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। দু’দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। যারা যারা জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মোবাইল প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিন। তিনি বরিশাল ডিসি জসীম উদ্দীন হায়দার লিপুর ছোট ভাই। আগামী ১৬। জানুয়ারি নোয়াখালী পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেল।  

এছাড়া বিএনপি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরণ কম্পিউটার (স্বতন্ত্র), শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের নারিকেল গাছ প্রতীকসহ (স্বতন্ত্র) মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।