ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে নিজেদের মেয়াদকালের সর্বোত্তম নির্বাচন বলে অভিহিত করেছেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) নাসিক নির্বাচন শেষে নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের ডেকে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
মাহবুব তালুকদার বরাবরই কমিশনের বাইরে গিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন। এজন্য কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনে তিনি বরাবরই আলোচিত, সমালোচিত হয়ে আসছেন।
লিখিত বক্তব্যে এই জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার বলেন, নাসিক নির্বাচন আমাদের কার্যকালে সর্বশেষ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এটি ছিল আমার অনেক প্রত্যাশার স্থান। কারণ, আমি ইতোপূর্বে বলেছি যার শেষ ভালো, তার সব ভালো। নাসিক নির্বাচনে আমি ৪টি কেন্দ্রের ১৪টি বুথ পরিদর্শন করেছি। এই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য কোনা সংঘর্ষ ও সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেনি। বিগত ৫ বছরে যতগুলো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে, আমার বিবেচনায় প্রথম কুসিক নির্বাচন ও সর্বশেষ নাসিক নির্বাচন সর্বোত্তম।
সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) অবস্থানকে ইঙ্গিত করে মাহবুব তালুকদার বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, নাসিক নির্বাচন সম্পর্কে আমি কিছুটা বিস্মিত। একজন মাননীয় সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘণ করে প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাকে কোনো চিঠি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে, তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘণ করলেও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেননি (সিইসি এই বক্তব্য দিয়েছেন)। আচরণবিধি ভঙ্গ করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ কিংবা শাস্তিহীন অপরাধের বিভাজন কোথায় আছে? তাহলে অন্যান্য সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে চিঠি দেয়া হলো কেন?
তিনি বলেন, এসব বিষয় নির্বাচনে নিরপেক্ষতার লক্ষণ নয়। পত্রিকামতে, নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন কারণে কিছু সংখ্যক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেও এ সম্পর্কে কোনো সংখ্যা জানা যায়নি। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এসব বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। এমন কি অন্যান্য নির্বাচনকালে সহিংসতায় নিহতদের কোনো তথ্য নেই।
মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, আমরা তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট, বিশেষত পোলিং এজেন্টদের কাউকে গ্রেফতার করতে বারণ করেছি। তবে ফৌজদারি মামলা বা তাৎক্ষণিক আমলযোগ্য অপরাধ হলে
ভিন্ন কথা। আমি নিজে সবসময় গায়েবি মামলার বিরোধিতা করেছি। নির্বাচনকালে গায়েবি মামলার হিড়িক পড়ে যায় কেন, তা এক প্রশ্ন। এই নির্বাচনকালেও পুরোনো মামলায় আটক অব্যাহত রয়েছে, যা দুঃখজনক।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ঘণ্টা, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২
ইইউডি/এমএমজেড