ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ওবায়দুল কাদেরের কথায় আশ্বস্ত হলেন সিইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
ওবায়দুল কাদেরের কথায় আশ্বস্ত হলেন সিইসি

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার সহায়তা করবে বলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে (ইভিএম) দলগুলোর সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকে অংশ নিয়ে সিইসি এমন কথা জানান।

বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে সিইসি বলেন, “আমরা আশা করবো স্যার, আপনারা সরকারে থেকে আমাদের সরকারি সাহায্য, সহায়তা দেবেন। আমরা যে সহায়তা চাইবো, তাও সাগ্রহে প্রদান করবেন। ”

সিইসির বক্তেব্যের মাঝেই ওবায়দুল কাদের ‘হ্যাঁ’ বলেন এবং সম্মতিসূচক মাথা নাড়ান।

কাজী হাবিবুল আউয়াল তখন বলেন, “যাক আপনি বলেছেন, এজন্য আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি এবং এই আশ্বাসটা নিয়ে আমরা আগামীতে কাজ করে যাবো। নির্বাচনের মাঠ, এটা একটা সামগ্রিক বিষয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সামষ্টিক একটা বিষয়। কাজেই আমাদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না। নির্বাচন কমিশন একাকী সফলতা অর্জন করতে পারবে না, যদি না অংশীজনরা তাদের দিক থেকে সহায়তার অস্ত্র সম্প্রসারণ করেন। ”

সিইসি বলেন, “ইভিএমের সঙ্গে ইন্টারনেটের কোনো সম্পর্ক নাই বিধায় হ্যাকিংয়ের কোনো সম্ভাবনা নাই। যে সংশয়টা, আমি নিজেও কিন্তু গুজবে বিশ্বাসী। গুজব শুনতে খুব ভালো লেগেছে। আমার জীবনও ওভাবে কেটেছে। এখন যখন আমাকে নিয়ে কথা শুনি, সেগুলো কিন্তু সত্য না। অথচ আমি আগে এভাবেই গুজবই বিশ্বাস করতাম। আসলে মানুষের স্বভাবটাই হচ্ছে—গুজবটা খুব শুনতে ভালো লাগে। ”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ইভিএমের অন্ধ গ্রাহক ছিলাম না। সব আলোচনা লিপিবদ্ধ করেছি। আমাদের সামর্থ্য কতগুলো তা দেখবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেবো, সম্পূর্ণ বা ফিফটি ফিফটি করবো কি-না সে সিদ্ধান্ত নেবো। আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবো, তখন সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আমরা কিন্তু কোনো বাজে মতলব নিয়ে আসিনি বা আমাদের কোনো পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনো আশ্বাসও কেউ দেননি। কোনো রাজনৈতিক চাপ আমাদের ওপর নেই। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, সেই সময় সরকার থাকবে কিন্তু আওয়ামী লীগ থাকবে না। সরকার আর আওয়ামী লীগ এক না। আমরা সরকারের কাছে হেল্প নেবো। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমরা কোনো হেল্প নেবো না। প্রশ্নই আসে না। কাজেই আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যে বিভাজনটা আছে, সেই বিভাজনইটা প্রধানমন্ত্রীকে আমি উচ্চারণ করতে শুনেছি, তিনি এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট, সরকারের তরফ থেকে আমাদের সহায়তা দেওয়া হবে। ”

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমরা সেই সহায়তা পাওয়া অধিকারী। সেই সহয়তা আমরা আদায় করে নেবো। যেই সহায়তা আমরা প্রাপ্য সেই সহায়তা আমাদের দিতে হবে। সেই সহায়তা যদি দেওয়া না হয়, আপনারা যদি আশাই করেন যে, সুন্দর ইলেকশন হবে, সুন্দর ইলেকশন হয়তো হবে না। আরেকটা জিনিস হলো—আমরা আপনাদের মাঝে ঐক্য চাচ্ছি, নির্বাচন মাঠে সবাই থাকবেন। বিভিন্ন পার্টির উপস্থিতি কিন্তু এক ধরনের ভারসাম্য সৃষ্টি করে নির্বাচনের মাঠে। আমরা পাঁচ-সাত নির্বাচন কমিশনার… এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে মোতায়েনের বিষয় থাকে। যেহেতু আমরা একদিনেই নির্বাচন করবো বা সবাই যদি চান চারদিনে ইলেকশন করার, কারণ আমরা একটা সংকট দেখি সেন্টারে পর্যাপ্ত ফোর্স দিতে পারছি না। সেই ফোর্সটা লাগত না যদি সবগুলো দল নির্বাচনের কেন্দ্রে এসে দাঁড়াত, তাহলে ওরাই ফোর্স হয়ে যেতো। ”

ইভিএম নিয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে তিন ভাগে ভাগ করে একেকটিতে ১৩টি দল নিয়ে তিন দফায় বৈঠক করলো নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার শেষ দফায় আমন্ত্রণ জানানো দলগুলো হলো—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট। এছাড়া প্রথম ধাপের বৈঠকে গণফোরাম উপস্থিত হতে না পারায় সময় চাইলে ইসি দলটিকে আসার সময় দেয়।

শেষ দিনের বৈঠকে তিনটি (বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ) অংশ নেয়নি। এর আগে ১৯ জুনের বৈঠকে দুটি দল এবং ২১ জুনের বৈঠকে বিএনপিসহ পাঁচটি দল ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।