ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটাররা শিক্ষিত, মার্জিত। তারা ভদ্রভাবে ভোট দিয়েছেন।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) ভোটগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি স্বচ্ছ নির্বাচন চাই, শুধু ভোটাররা যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আজ গোপন কক্ষে কোনো দ্বিতীয় ব্যক্তি যাননি। অত্যন্ত সুন্দর, মার্জিত ও ভদ্রভাবে ভোট দিয়েছেন।
সিইসি বলেন, আমরা নির্বাচনের শুরু থেকেই মনিটরিং সেলে অবস্থান করেছি। আজ আমাদের যে পর্যবেক্ষণ, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও থেকে কোনো অনিয়ম, সহিংসতার তথ্য আসেনি। আমরা দেখেছি এবং টেলিফোনেও যে সংবাদগুলো পেয়েছি নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর ছিল। আমরা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, নির্বাচনের যে পদ্ধতি সিসি টিভি মাধ্যমে এটা আমাদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা নির্বাচন পরিচালনায়। আগামীতে আপনাদের সকলকে আরো ভালো সুযোগ করে দেবে সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের।
২৬ চেয়ারম্যার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে সিইসি বলেন, এটা নিয়ে আমরা বক্তব্য রাখবো না। এই বিশ্লেষণে আমরা যাইনি। এটা আমাদের বিষয় নয়। রাজনীতিবিদরাই বুঝবেন। এটা নিয়ে আমরা মন্তব্য করবো না।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, অনাকাঙিক্ষতভাবে গাইবান্ধায় যেটা হয়ে গেছে, সিসি টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আমাদের পর্যবেক্ষণ ছিল। তারপরে বেশ গুরুতর অনিয়ম আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। কমিশন বাধ্য হয়ে নির্বাচনটা বন্ধ করে দিয়েছে। তো সেখান থেকে একটা মেসেজ এসছে, যে সিসি ক্যামেরা দিয়ে যেভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, যারা ভোটার বা প্রার্থী, তারা যদি গুরুতর অনিয়ম করেন, তাহলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমাদের মনে হয় ওটার একটা ইতিবাচক প্রভাব এই নির্বাচনে পড়েছে।
তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা হ্যাঙ করলেও তা সংশোধন করা হয়েছে। এজন্য ভোট দিতে পারেনি তা নয়। হাজার হাজার ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, সেখানে দু একটা এমন হতে পারে। অনেকের যেমন আঙুলের ছাপ প্রথমে মেলেনি। পরে মিলেছে। একজনও ভোট দিতে পারেনি এমন হয়নি।
গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্টের পর গাইবান্ধার ভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তিন পার্বত্য জেলা বাদে ৬১টি জেলা পরিষদে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচন আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়েছে। ভোলা ও ফেনী জেলার সকল পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এই অবস্থায় ৫৭টি জেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। এতে চেয়ারম্যান পদে ৯২ জন, সদস্য পদে ১ হাজার ৪৮৫ জন ও সংরক্ষিত পদে ৬০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন মোট ভোটার রয়েছে ৬০ হাজার ৮৬৬ জন। তারা ৪৬২টি ভোটকেন্দ্রের ৯২৫টি ভোটকক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছেন। একটি জেলায় যতগুলো স্থানীয় সরকার রয়েছে, সেগুলোর প্রতিনিধিরাই ভোট দিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যদের নির্বাচিত করে থাকেন।
নির্বাচনে ২৬ জন চেয়ারম্যান, ১৮ জন মহিলা সদস্য এবং ৬৫ জন সাধারণ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা প্রশাসক ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। আর প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্বে রয়েছে অন্যান্য নির্বাচন কর্মকর্তারা। তবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ থাকায় তাকে পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২২
ইইউডি/এসআইএস