সিলেট: জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটে চেয়ারম্যান পদে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তাকে বেসরকারিভাবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) কেবল সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে বেসরকারিভাবে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তা।
এরমধ্যে সংরক্ষিত পাঁচটি ওয়ার্ডের মধ্যে চারটিতে সাবেক নারী সদস্যরা বিজয়ী হয়েছেন।
তারা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন আমাতুজ জোহরা রওশন জেবিন রুবা। বই প্রতীকে ২৫৭ ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা. ফারজানা রহমান রেনু হরিণ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ২৫ ভোট।
২ নম্বর ওয়ার্ডে সুষমা সুলতানা রুহি দোয়াত কলম প্রতীকে ১৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আফিয়া বেগম হরিণ প্রতীকে পেয়েছেন ৭৭ ভোট।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে হাসিনা বেগম ফুটবল প্রতীকে ১৮৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রোমানা আফরোজ মাইক প্রতীকে ৬৫ ভোট পেয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তামান্না আক্তার হেনা দোয়াত কলম প্রতীকে ১৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা. রাহিমা বেগম চম্পা হরিণ প্রতীকে ৭৮ ভোট পেয়েছেন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন নতুন প্রার্থী মনিজা বেগম। তিনি হরিণ প্রতীকে ১৬০ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সদস্য সাজনা সুলতানা হক চৌধুরী ফুটবল প্রতীকে ৭৫ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিতরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে (সদর উপজেলা) মাওলানা মো. মুছাদ্দিক আহমদ বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ৪৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. তাইনুল ইসলাম আসলাম টিউবওয়েল প্রতীকে ৩৪ ভোট পেয়েছেন।
২ নম্বর ওয়ার্ডে (দক্ষিণ সুরমা উপজেলা) আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি হাতি প্রতীকে ৭০টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ মকবুল হোসেন টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ১০ ভোট।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে (ফেঞ্চুগঞ্জ) আওয়ামী লীগ নেতা নাহিদ হাসান চৌধুরী বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ৩৭টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহিদুর রহমান রুমান তালা প্রতীকে ২৮ ভোট পেয়েছেন। ওপর প্রার্থী সদ্য সাবেক সদস্য আবদুল আউয়াল কয়েস হাতি মার্কায় ২৪ ভোট পেয়েছেন।
৪ নম্বর ওয়ার্ডে (বালাগঞ্জ) আওয়ামী লীগ নেতা মো. নাসির উদ্দীন টিউবওয়েল প্রতীকে ৪৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সদস্য লোকন মিয়া হাতি প্রতীকে ২৭ ভোট পেয়েছেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ডে (ওসমানীনগর) আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হামিদ মাত্র এক ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। সিএনজি অটোরিকশা প্রতীকে তার প্রাপ্ত ভোট ৪১টি। আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পঙ্কজ লাল দাশ পুরকায়স্থ টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ৪০ ভোট।
৬ নম্বর ওয়ার্ডে (বিশ্বনাথ) উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ তালা প্রতীকে ৭০টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সহল আল রাজি চৌধুরী বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৩১টি ভোট।
৭ নম্বর ওয়ার্ডে (গোলাপগঞ্জ) আওয়ামী লীগ নেতা মো. ফয়জুল ইসলাম ফয়ছল বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে ৬৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট এম মুজিবুর রহমান মুজিব তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৩১ ভোট।
৮ নম্বর ওয়ার্ডে (বিয়ানীবাজার) খসরুল হক খসরু উট পাখি প্রতীকে ৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ সিহাব উদ্দিন অটোরিকশা প্রতীকে ২৪ ভোট পেয়েছেন।
৯ নম্বর ওয়ার্ডে (জৈন্তাপুর) মোহাম্মদ শাহজাহান টিউবওয়েল প্রতীকে ৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মুহিবুল হক তালা প্রতীকে ৪৯ ভোট পেয়েছেন।
১০ নম্বর ওয়ার্ডে (গোয়াইনঘাট) সুবাস দাস হাতি প্রতীকে ৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আলিম উদ্দিন ঘুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ ভোট।
১১ নম্বর ওয়ার্ড (কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের আংশিক) আওয়ামী লীগ নেতা আফতাব আলী কালা মিয়া অটোরিকশা প্রতীকে ৭২টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬ ভোট।
১২ নম্বর ওয়ার্ডে (কানাইঘাট উপজেলা ও জকিগঞ্জের আংশিক) আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ টিউবওয়েল প্রতীকে ৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. ইমাম উদ্দিন চৌধুরী তালা প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ ভোট।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (জকিগঞ্জ) ইফজাল আহমদ চৌধুরী টিউবওয়েল প্রতীকে ৬৫টি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি সদ্য সাবেক সদস্য মোহাম্মদ শামীম আহমদ বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ ভোট।
সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৩টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ৬৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরমধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৭ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ছিলেন ১৭ জন।
এবার ইভিএম তথা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ছিল সিসি ক্যামেরা। ঢাকায় বসে সিসি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২২
এনইউ/আরবি