ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

জামায়াত নেতারা অন্য নামে শর্ত পূরণ করলে নিবন্ধন পাবেন: ইসি আলমগীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
জামায়াত নেতারা অন্য নামে শর্ত পূরণ করলে নিবন্ধন পাবেন: ইসি আলমগীর

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর নেতারা অন্য নামে এসে শর্ত পূরণ করলে নিবন্ধন পাবেন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন বক্তব্য দেন।

এর আগে আদালতের রায়ে নিবন্ধন হারোনো ‘জামায়াতের’ নেতারা বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) নামে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন ইসিতে।

আদালতের রায়ে একটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে, তারা অন্য একটি নামে আবেদন করেছে, তারা আবার নিবন্ধন পাবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, এটি যদি জামায়াতে ইসলামী হয়, তবে কোর্টের আদেশে দলটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। এখন যদি কেউ আমাদের কাছে নিবন্ধিত হতে চায়, তাকে নতুন দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে হলে যে যে শর্তগুলো পূরণ করা প্রয়োজন, সেগুলো পূরণ করলে নিবন্ধন পাবে। শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হলে পাবে না।

নাম পাল্টালো কিন্তু ব্যক্তি একই থাকলো, তাহলে নিবন্ধন পাবে কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে, কারণ আমাদের সংবিধান ও মক্তিযুদ্ধর সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এজন্য বাতিল করা হয়েছে। এখন যদি কেউ এসে আমাদের সাংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, যদি কেউ যুদ্ধাপরাধী না থাকে এবং নিবন্ধনের সব শর্ত যদি পূরণ করে, তাহলে তো আর বলতে পারছেন না যে ওই জামায়াত, এই জামায়াত এক। ওখানে (আইনে) তো বলা আছে কে কে নিবন্ধন পাবে। যেমন কেউ যদি বিদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন, দেখা গেল গঠণতন্ত্রে এমন একটা ধারা আছে, উদ্দেশ্য আছে; যা আমাদের সংবিধানের সঙ্গে ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সাংঘর্ষিক, তাহলে তো পাবেন না।

এখন যদি জামায়াতের কেউ এসে অন্য নামে নিবন্ধন চায় তাহলে পাবেন কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, দেখতে হবে তিনি যুদ্ধাপরাধী ছিলেন কিনা, মামলা আছে কিনা, যে যে শর্ত আছে সেগুলোর মধ্যে যদি একজনও পড়ে, তাহলে নিবন্ধন দেওয়ার সুযোগ নেই।

আগে জামায়াতের রাজনীতিতে ছিলেন এমন কেউ যদি নতুন দল করতে চান, সেটা কি পারবে—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, তিনি তো জামায়াত আর করছেন না। একটা জিনিস বুঝতে হবে। যেমন অনেকে এক সময় একটা রাজনৈতিক দল করতেন, ওই দল তিনি ত্যাগ করেছেন, করে আবার অন্য একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন। অথবা একটা দল আগে একটা নামে ছিল, পরে ওই রাজনৈতিক দল নাম পরিবর্তন করেছে; হয়েছে না বাংলাদেশে? অনেক দলই এমন হয়েছে। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ভেঙে গেছে, ভেঙে গিয়ে আরেকটা দল গঠন করেছে। মনে করেন একটা দল ‘জেড’ দল ছিল, ভেঙে গিয়ে ‘ওয়াই’ দল গঠন করেছে। ওই দলকে তো আর আগের দল হিসেবে বলার সুযোগ নেই। তবে দেখতে হবে শর্ত পূরণ করতে পারছে কিনা।

তিনি বলেন, জামায়াত হিসেবে আসার সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানের চেতনার বাইরে যদি কোনো দলের চেতনা থাকে গঠতন্ত্রে, তাহলে তাকে নিবন্ধন দেওয়ার তো কোনো সুযোগই নেই। যে-ই আসবে, স্বাধীনতায় বিশ্বাস থাকতে হবে, তার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও সংবিধানের চেতনায় সম্মান থাকতে হবে। যদি বলে যে নারী নেতৃত্ব থাকবে না, তাহলে কি দেওয়ার সুযোগ আছে? কারণ বলাই তো আছে, সংবিধানেও বলা আছে নারী পুরুষে কোনো বৈষম্য করা যাবে না, ধর্মের ভিত্তিতে কোনো রাজনৈতিক বৈষম্য করা যাবে না। এসব থাকলে নিবন্ধন দেওয়া যাবে না।

নিবন্ধন বাতিল হওয়া ফ্রিডম পার্টির নেতারা কি পারবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর আরও বলেন, ফ্রিডম পার্টিতে যারা আছেন তারা তো বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত, তারা তো পলাতক, তাদের তো রাজনীতি করারই কোনো অধিকার নেই। নিবন্ধন কেমনে পাবে?

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।