ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রস্তাবিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্পের ওপর পরিকল্পনা কমিশন পর্যবেক্ষণ দেওয়ার পর ব্যয় কিছুটা কমতে পারে। ইসি সূত্রগুলো এমন তথ্য জানিয়েছে।
অক্টোবরের মাঝামাঝিতে ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল ইসি। ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার প্রস্তাবিত ওই প্রকল্পটির ওপর পর্যালোচনা করে পরিকল্পনা কমিশন মঙ্গলবার (০৯ নভেম্বর) পর্যবেক্ষণ ইসিতে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, পর্যবেক্ষণ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) একটি বৈঠক করে প্রস্তাবে কিছু সংশোধনী এনে রোববার ফের পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে ৫৩৪টি পিক-আপ ভ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানি খাতের ব্যয় কমে আসতে পারে। এছাড়াও বেশকিছু খাতে কিছুটা সংশোধনী আসতে পারে। ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্যও বলেছে পরিকল্পনা কমিশন। সেটির বিকল্পও ভাবছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ বিষয়ে বলেন, আমাদের ফিজিবিলিটি স্টাডি হয়নি। আগামীকাল একটা মিটিং রয়েছে। ফিজিবিলিটির বিকল্প কী করতে হবে, সেটা বলে দিয়েছে। একটা টেকনিক্যাল কমিটি আছে। সেই কমিটিতে বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আছেন। তাদের স্বাক্ষর নিয়ে প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।
ইভিএম প্রকল্প পরিচালক কর্নেল রাকিবুল হাসান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমরা একটু বেশি ধরে রাখছি। পর্যবেক্ষণে সেগুলোই উঠে এসেছে। সবকিছু তো নিয়ম অনুযায়ী চলছে। অবশ্যই দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি পরিকল্পনা কমিশন থেকে কিছু গাইডলাইন দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। আমি যতটুকু বুঝেছি, ব্যয়টা একটু মাত্রার মধ্যে এনে দিতে বলেছে এবং কোথায় কোথায় ব্যয়টা একটু সংকোচ হবে, সেটার এটার একটা গাইডলাইন দিয়েছে। সেই গাইডলাইনের মধ্যে যদি ফেরত পাঠানো যায় আশাকরি পাশ হয়ে আসবে।
ইসির প্রস্তাবিত প্রকল্পে দুই লাখ ইভিএম কেনার কথা রয়েছে। প্রতি ইভিএম কেনার জন্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায়ে ৫২২টি থানা নির্বাচন কার্যালয়ের ও ঢাকার জন্য মোট ৫৩৪টি পিকআপভ্যান কেনার বিষয়টি রাখা হয়েছে প্রকল্পে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে পিক প্রতি ৬৫ লাখ করে ৩৫০ কোটি টাকা।
এছাড়া ১০টি গুদামের প্রতিটিতে ৩৭ কোটি টাকা করে মোট ৩৭৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গুদামের ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৪০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে।
ইভিএম কাস্টমাইজেশন সেন্টার স্থাপন, গুদাম নির্মাণ, ইভিএম পরিবহন ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত সংক্রান্ত ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। প্রশিক্ষণ ব্যয় ২০৫ কোটি টাকা, প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় ব্যয় ৬৯০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে পিকআপভ্যানের জন্য ড্রাইভার, থানা নির্বাচন কার্যালয় প্রতি একজন সহকারি প্রোগ্রামার, একজন ইভিএম অপারেটরসহ তিন জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী; এসবখাতে এক হাজার পাঁচশ লোকবলের বেতন প্রভৃতি খাতে ওই ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
বর্তমানে চলমান ইভিএম প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে ২০১৮ সালে। সে সময় প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ৮২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আর ইভিএম প্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ লাখ পাঁচ হাজার। এই প্রকল্পের অধীনেই কেনা হয় দেড় লাখ ইভিএম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ