ঢাকা: আসন্ন রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রণয়ন করে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে চাঁদাবাজ, মাস্তানদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি সম্প্রতি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেনকে পাঠিয়েছেন।
এ কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যে একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠনেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই কমিটিতে পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি এবং সহযোগী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর (প্রতিটির একজন) মনোনীত কর্মকর্তারা থাকবেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল নির্বাচনী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা সংরক্ষণে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে গৃহীত ব্যবস্থাগুলো নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করবে।
অন্যদিকে ভোটকেন্দ্রে এবং ভোটকক্ষের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ সব বে-আইনি অস্ত্র উদ্ধার পরিচালনা জোরদার করতে হবে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রণয়নপূর্বক চাঁদাবাজ, মাস্তান ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করতে হবে ওই সেলকে।
এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাদের সমর্থকরা যাতে নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলেন এবং কোনো তিক্ত, উসকানিমূলক ও ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে এমন কার্যকলাপ বা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন কিংবা অর্থ, পেশীশক্তি অথবা স্থানীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে কেউ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারেন এবং সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহলের সহযোগিতা কামনা করতে হবে এবং প্রয়োজনবোধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেলকে।
এদিকে ওই নির্দেশনায় রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে প্রার্থীদের প্রতিনিধি বা নির্বাচনি এজেন্টদের সমন্বয়ে নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠন করার কথাও বলা হয়েছে। ওই টিমে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা/সহকারী রিটার্নিং অফিসার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। টিম গঠনের সঙ্গে সঙ্গে টিমের সদস্যদের নামের তালিকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।
নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, বিধি, নির্বাচনি আচরণ বিধি এবং নির্বাচনের সার্বিক বিষয়াদি যথাযথ ও সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা, তা তদারকি ও প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মনিটরিং টিম। বিশেষ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে এবং অন্যথায় প্রতি সাত দিন পর পর ওই সব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবে।
রসিক ভোটে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ২৯ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ৪ ডিসেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ৭ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটগ্রহণ করা হবে ২৭ ডিসেম্বর।
সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর এই সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। সে মোতাবেক এ সিটির বর্তমান নির্বাচিতদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
ইইউডি/আরআইএস