সিরাজদিখান: রাত পোহালেই চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, নির্বাচনকে ঘিরে দেশের নানা প্রান্তে ঘটছে বিচিত্রসব ঘটনা। এর অংশ হিসেবে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আপন দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দুজনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং অপরজন জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে মাঠে রয়েছেন। দিনরাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দুজনেই ভোট চাইছেন। জয়ের ব্যাপারেও দুজনই বেশ আশাবাদী।
আওয়ামী লীগ পরিবারে জন্ম নেওয়া দুই ভাই নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে ভিন্ন প্রতিকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর (জাহাঙ্গীরনগর) গ্রামের মৃত গগণ মিয়ার পাঁচ সন্তানের সবার বড় ফেরদৌস কামাল (রমজান প্রমাণিত)। তিনি ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তবে তিনি হতে চেয়েছিলেন নৌকার মাঝি। আলোচনায় থেকেও শেষ পর্যন্ত নৌকা প্রতীক না পেয়ে শেষ মুহূর্তে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন।
অপরজন অর্থাৎ গগণ মিয়ার মেঝো ছেলে কামাল হোসেন (হাদী) বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, তিনিও চেয়েছিলেন নৌকা প্রতিকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে। কিন্তু বড় ভাইয়ের মত তিনিও নৌকা প্রতীক না পেয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। তবে উভয়ই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
ফেরদৌস কামাল বলেন, আমি ১৯৬৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সময়ও মাঠে ছিলাম। ঢাকা দীর্ঘদিন মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি। আন্দোলন সংগ্রামে সামনের কাতারে থেকে বহু জুলুম সহ্য করেছি। আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সত্যেও আমাকে নৌকা দেওয়া হয়নি। নৌকা দেওয়া হয়েছে বিএনপি থেকে আসা এক নব্য আওয়ামী লীগারকে। তাই অন্য দল থেকে নির্বাচন করছি। তবে নির্বাচনে জয়ের ব্যপারে আশাবাদী।
কামাল হোসেন (হাদী) বলেন, আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান ২০১৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ব্যক্তি ইমেজে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অংশ হিসেবে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। দলকে সুসংগঠিত করতে পরিশ্রম করেছি। ভেবেছিলাম দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। কিন্তু তা করেনি। তাই জনগণের চাওয়ায় আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে আছি। আশা করছি জনগণ আমাকেই বিজয়ী করবে।
প্রসঙ্গত উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ১৪৪টি কেন্দ্রে, ৬৭৬ টি কক্ষে সর্বমোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৩ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করবে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ৩৯৯ ও নারী ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৪৪ জন । ১৪৪ টি কেন্দ্রের ৫৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৬টিকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশের সাথে মাঠে থাকবে বিজিবিসহ ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
এনএইচআর