ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

শিল্পকলায় সন্ধ্যায় ‘জেল থেকে বলছি’ যাত্রাপালার মঞ্চায়ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
শিল্পকলায় সন্ধ্যায় ‘জেল থেকে বলছি’ যাত্রাপালার মঞ্চায়ন

ঢাকা: সামাজিক শিক্ষা বা লোকশিক্ষার ক্ষেত্রে যাত্রাপালার আছে বলিষ্ঠ ভূমিকা। আদি যাত্রাপালার ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় শুরুর দিকের যাত্রাপালাগুলো মূলত কাহিনী নির্ভর।

সেসব কাহিনীজুড়ে আছে নানান ধরনের চরিত্র। সেসব চরিত্রের কেউ ন্যায় করছে, কেউ অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কেউ আবার অন্যায়ের পক্ষ নিচ্ছে। কিন্তু সবশেষে বিজয় হচ্ছে ন্যায়ের এবং পরাজিত হচ্ছে অন্যায়। এসবই আমাদের শুরুর দিকের যাত্রাপালার বিষয়বস্তু। তাই সে সময় যাত্রাপালা নেহাতই বিনোদনের মাধ্যম ছিল না, ছিল লোকশিক্ষা অর্জনেরও এক সাংস্কৃতিক পাঠশালা।

এদেশের শেকড়ের সঙ্গে মিশে আছে যাত্রা। উচ্চস্বরের সংলাপ ও বিবেকের গানের সেই চিরচেনা সুরে দর্শকদের বিমোহিত হওয়ার সেই দৃশ্য বর্তমানে বিরল। তবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় শুরু হয়েছে যাত্রা উৎসব। এই উৎসবে মঞ্চস্থ হবে নেত্রকোনার টাইগার রুবেল নাট্য সংস্থার যাত্রাপালা ‘জেল থেকে বলছি’। সামাজিক শিক্ষা বা লোকশিক্ষার ক্ষেত্রে যাত্রাপালার যে বলিষ্ঠ ভূমিকা আছে, এই পালাটি তারই নিদর্শন বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে দেশের ছয়টি যাত্রাদল যাত্রাপালা পরিবেশন করবে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে রয়েছে নেত্রকোনার টাইগার রুবেল নাট্য সংস্থার যাত্রাপালা ‘জেল থেকে বলছি’। এটির পালাকার উদয় ভানু এবং এই পালাটি মঞ্চস্থ হবে সন্ধ্যায়।

যাত্রাপালাটি নিয়ে এর পরিচালক মহিবুল ইসলাম রুবেল (টাইগার রুবেল) বলেন, ‘জেল থেকে বলছি’ যাত্রাপালাটি সুস্থ বিনোদনের জন্য একটি সামাজিক যাত্রাপালা। সাধারণ বাঙালি ঘরের একটি পরিবারের কাহিনী উঠে এসেছে এই পালাটিতে। এটি সব বয়সীরাই দেখতে পারবেন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কগুলো কীভাবে আরও সুন্দর ও দৃঢ় করা যায়, একসঙ্গে থাকা যায়, সেই বিষয়গুলোই উঠে এসেছে এখানে। আশা করি সবাই পালাটি দেখতে আসবেন।

টাইগার রুবেল বলেন, আধুনিককালে এসে যাত্রাপালার কথিত যে আধুনিক সংস্করণ বর্তমানে দেখা যায়; ভালো কোনো গল্প নেই, পালার আমেজ নেই, ডিজে বাজিয়ে পালার আসরে নারী-পুরুষের যৌথ উশৃঙ্খলতা যখন যাত্রার উপজীব্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে তখন ‘জেল থেকে বলছি’ যাত্রাপালাটি এসব কিছুর বাইরে গিয়ে আমাদের মূল যাত্রার স্বাদ দেবে। সঙ্গে সামাজিক শিক্ষার কথা বলবে। একইসঙ্গে সুস্থ ধারার বিনোদনেরও একটি মাধ্যম।

পালাকার উদয় ভানুর ‘জেল থেকে বলছি’ পালাটি গড়ে উঠেছে মূলত একটি পরিবারের দুই ভাইকে কেন্দ্র করে। বাবা-মার মৃত্যুর পর বড় ভাই দায়িত্ব নেন তার ছোট ভাইয়ের দেখাশোনা করার। এভাবেই চলতে থাকে দিন। এরপর একদিন ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয়। তখন ছোট ভাই ও তার বউ বাড়ি থেকে বের করে দেয় বড় ভাই ও তার পরিবারকে। এমন নানা ঘটন-অঘটনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে যাত্রার কাহিনী। যেখানে সর্বশেষ প্রধান চরিত্রের স্থান হয় কারাগারে।

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘জেল থেকে বলছি’ ছাড়াও রয়েছে আরও পাঁচটি যাত্রাপালা। দুপুর ২টা থেকে ক্রমান্বয়ে বগুড়ার সোনালী নাট্য সংস্থার যাত্রাপালা ‘মিলনমালা’, সিরাজগঞ্জের রাজু অপেরার যাত্রাপালা ‘লাইলি মজনু’, ঝিনাইদহের উদয়ন নাট্যগোষ্ঠীর যাত্রাপালা ‘কুরুক্ষেত্রের কান্না’, ময়মনসিংহের সুইস যাত্রা ইউনিটের যাত্রাপালা ‘নিচু তলার মানুষ’ এবং টাঙ্গাইলের তুরাগ বেহুলা অপেরার যাত্রাপালা ‘গুনাই বিবি’ও মঞ্চায়িত হবে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।